১৪ নভেম্বর, ১৮৪৩ তারিখে ইয়র্কশায়ারের নিউটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
দয়ালু ও ভদ্র প্রকৃতির অ্যালেন হিল সতীর্থদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। ১৮৭১ থেকে ১৮৮৩ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। স্বল্প দূরত্ব নিয়ে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ক্লাবটির পক্ষে ব্যতিক্রমী রাউন্ড-আর্ম ফাস্ট বোলিং করতেন ও বেশ পেস আনয়ণ করতে পারতেন। ১৮৭০-এর দশকের অনেকগুলো বছর টম এমেটকে সাথে নিয়ে ইয়র্কশায়ারের প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন।
তবে, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের কোন খেলায় অর্ধ-শতরানের সন্ধান পাননি। মাত্র ৮.৯৪ গড়ে ২৪৭৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
১৮৭৭ সালে সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে মাত্র দুই টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। ১৮৭৬-৭৭ মৌসুমে জেমস লিলিহোয়াইট জুনিয়রের নেতৃত্বাধীন দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ঐ সফরে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম টেস্টে অংশ নেয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৫ মার্চ, ১৮৭৭ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম উইকেট ও প্রথম ক্যাচ তালুবন্দী করার গৌরবের অধিকারী হন। খেলায় তিনি ১/৪২ ও ১/১৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৩৫* ও ০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৪৫ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। তবে, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৮.৯৪ গড়ে রান পেলেও টেস্টে ৫০.৫০ গড়ে রান পেয়েছেন। অংশগ্রহণকৃত ৪ ইনিংসের দুইটিতে অপরাজিত থাকার ফলেই এ গড় হয়েছে।
একই সফরের ৩১ মার্চ, ১৮৭৭ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ঐ টেস্টে সফরকারীরা জয় পায়। দূর্দান্ত ভূমিকা রেখেছিলেন। ৪৯ ও ১৭* রান তুলেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৪/২৭ ও ১/৪৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ঐ খেলায় সফরকারীরা ৪ উইকেটে জয় পেলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
১৮৭৯ সালে বোলিংকালে হাঁটুর সমস্যায় আক্রান্ত হন। ১৮৮৩ সালে বুকের হাঁড় ভেঙ্গে যাবার ফলে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। সব মিলিয়ে ১৯৩টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা থেকে ১৪.৩৬ গড়ে ৭৪৯ উইকেট দখল করেছিলেন। ১৪ মৌসুমের কোনটিতেই ১৯ ঊর্ধ্ব গড় ছিল না ও সাতবার ১৫-এর কম ছিল। তন্মধ্যে, ১৮৭৯ সালে ৭.০৩ গড়ে ২৯ উইকেট পেয়েছিলেন। উপর্যুপরী তিন বছর – ১৯৭৪ থেকে ১৮৭৬ সময়কালে ১০০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর আম্পায়ারিত্বের দিকে ধাবিত হন। ১৮৯০ সালে আম্পায়ার হিসেবে একটি টেস্ট পরিচালনা করেছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৮৬৮ সালে এলেন জেসপ নাম্নী এক রমণীর সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির ফ্রাঙ্ক নামীয় পুত্র এবং এলিস, ক্যাথলিন মেরি, জারট্রুড ও মাবেল নাম্নী চার কন্যার জনক ছিলেন। দূর্ভাগ্যবশতঃ ফ্রাঙ্ক ৭ বছর বয়সে মারা যায়। ১৯০০ সালে মার্গারেট হুইটল নাম্নী এক রমণীর সাথে পুণঃবিবাহ করেন। পরবর্তীতে, তাঁর এক নাতির নাম রাখেন ফ্রাঙ্ক।
২৮ আগস্ট, ১৯১০ তারিখে ল্যাঙ্কাশায়ারের লেল্যান্ড এলাকায় ৬৬ বছর ২৮৭ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। সেন্ট অ্যান্ড্রুজ চার্চের পার্শ্বে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
