২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২ তারিখে সলসবারিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। জিম্বাবুয়ে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট সিরিজ বিজয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

অনেকটা সহজাত প্রকৃতির ক্রিকেটার ছিলেন। পিতা ইয়ান কিশোর দলের কোচ ছিলেন ও ভবিষ্যতের তারকা ক্রিকেটার ব্রেন্ডন টেলরের উত্তরণে বিরাট ভূমিকা রেখেছিলেন। কনিষ্ঠ ভ্রাতা, উইকেট-রক্ষক ও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার ডোনাল্ডের সাথে ছেলেবেলা থেকে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। শুরুতে ডানহাতে ব্যাটিং করলেও ইয়ান তাঁকে বামহাতে ব্যাটিং করতে উৎসাহিত করেন। পরবর্তীকালে ধ্রুপদীশৈলীর বামহাতে ব্যাটসম্যানে রূপান্তরিত হন। পারিবারিক ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত লিলফোর্ডিয়া প্রাইমারি স্কুলে অধ্যয়ন করেন।

বিভিন্ন ধরনের শট খেলতে পটু ছিলেন। তেমন প্রচেষ্টা ছাড়াই বলকে সজোরে মারতে পারতেন। মাঝে-মধ্যে ডানহাতে অফ-স্পিন বোলিং করতেন ও মাঠের যে-কোন অবস্থানেই ফিল্ডার হিসেবে দূর্দান্ত ভূমিকা রাখতেন। বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে জিম্বাবুয়ে দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানের মর্যাদা পেয়েছিলেন। এছাড়াও, জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক ছিলেন। দলকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফিরিয়ে আনতে অপূর্ব ভূমিকা পালন করেছিলেন।

খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে স্বীয় প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখতে সচেষ্ট ছিলেন। ঈগলসভেল হাই স্কুলে পড়াশুনো করেছেন। বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন জাতীয় দলে খেলার জন্যে মনোনীত হন। ১৯৯০-৯১ মৌসুম থেকে ২০০২-০৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে মনিকাল্যান্ড, ম্যাশোনাল্যান্ড ও ম্যাশোনাল্যান্ড কান্ট্রি ডিস্ট্রিক্টসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

অক্টোবর, ১৯৯০ সালে ১৮ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেন। হারারেতে পাকিস্তান ‘বি’ দলের বিপক্ষে ঐ খেলার উভয় ইনিংসে ২৯ রান করে সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, জিম্বাবুয়ের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে শতক হাঁকিয়েছিলেন। এপ্রিল, ১৯৯১ সালে বুলাওয়েতে সফররত গ্ল্যামারগন দলের বিপক্ষে অপরাজিত ১০০ রান সংগ্রহের পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৩ রান তুলেছিলেন। ঐ খেলায় তাঁর দল জয়লাভ করেছিল। মারকুটে ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। এরফলে, কোন স্তরের ক্রিকেটেই নিজের প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারেননি। বড় ধরনের ইনিংস খেলতে পারেননি। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩৪-এর কম গড়ে রান পেয়েছেন।

১৯৯২ থেকে ২০০৩ সময়কালে জিম্বাবুয়ের পক্ষে সবমিলিয়ে ৬০ টেস্ট ও ১৮৮টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯ বছর বয়সে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্যে নির্বাচিত হন। ২৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯২ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। বিশ্বমানসম্পন্ন বোলারদের বিপক্ষে বেশ হিমশিম খান। তাসত্ত্বেও, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দলের ৯ রানের নাটকীয় বিজয়ে অংশ নিয়েছিলেন। তিন খেলা থেকে মাত্র ১৩ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। কিন্তু, বিশাল অভিজ্ঞতা লাভ করেন। এরপর থেকে খুব দ্রুত নিজেকে জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্যে পরিণত করেন। ঐ বছর শেষে জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

১৯৯২-৯৩ মৌসুমে নিজ দেশে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন ভারত দলের মুখোমুখি হন। ১৮ অক্টোবর, ১৯৯২ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে জন ট্রাইকোস ব্যতীত অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। তিন নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে ৪৫ রান সংগ্রহ করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে যেতে বাধ্য হন। উভয় ইনিংসেই কপিল দেবের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।

একই মৌসুমে নিজ দেশে মার্টিন ক্রো’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১ নভেম্বর, ১৯৯২ তারিখে বুলাওয়েতে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৪৫ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ০ ও ৪৮* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। স্মর্তব্য যে, জিম্বাবুয়ে-নিউজিল্যান্ডের মধ্যে এটিই ক্রিকেটের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্ট ছিল।

একই সফরের ৭ নভেম্বর, ১৯৯২ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। কয়েকটি ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে পূর্বতন সর্বোচ্চ ৪৮ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ৫২ ও ৩৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ১৭৭ রানে পরাজিত হলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের নেতৃত্বে পাকিস্তান গমন করে সুন্দর ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। বিশ্বমানের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ রুখে দিয়ে বেশ কয়েটি চমকপ্রদ ইনিংস উপহার দেন। সিরিজে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। পাঁচ ইনিংসের তিনটিতেই অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন। ৪১ গড়ে ২০৫ রান তুলেন। ওয়াকার ইউনুসের সাথে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন। আক্রমণধর্মী খেলার ধরন অনেকাংশেই একদিনের আন্তর্জাতিকের উপযোগী ছিল। রাওয়ালপিন্ডিতে ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনুসের ন্যায় বোলারদের রুখে দিয়ে ৫৫ বলে ৬৩ রান সংগ্রহ করেন ও বিতর্কিত লেগ বিফোর উইকেটে তাঁকে বিদেয় নিতে হয়েছিল। তবে, ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে সুবিধে করতে পারেননি। ৬ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করলেও ডেভিড ব্রেইনের অসামান্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কারণে খেলাটি ড্র হয়। স্বাগতিক দল ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। টেস্ট ক্রিকেটে বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে বড় ধরনের ইনিংস খেলতে ব্যর্থতার পরিচয় দিতে থাকেন।

পাঁচ বছরের মধ্যে টেস্টে সর্বোচ্চ ৯৯ রান তুলেন। ১৯৯৪ সালে হারারেতে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ সফলতা পান। অবশেষে ৪৬ টেস্ট পর ২০০০-০১ মৌসুমে নাগপুরে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম শতরানের সন্ধান পান। এরপর পরবর্তী গ্রীষ্মে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১০৩ রান তুলেন। দলের সংগ্রহ ৬১/৩ থাকাকালে মাঠে নামেন। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারকে (২৩২*) সাথে নিয়ে প্রতিপক্ষীয় আক্রমণ রুখে খেলাকে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যান। বেশ ভালো মানের অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী হলেও রাজকোটে বোলিং করে নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছেন। শেষ ওভারে তাঁর বল থেকে অজিত আগরকর ২১ রান আদায় করে নেন।

১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের অধিনায়কত্বে জিম্বাবুয়ীয় দলের অন্যতম সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১৩ জানুয়ারি, ১৯৯৬ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ৫ ও ৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, ক্রিস কেয়ার্নসের অসাধারণ বোলিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৯৬ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করতে এগিয়ে আসেন। তিন বছর বেশ সফলতার সাথে দলকে পরিচালনা করেছিলেন। এ পর্যায়ে জিম্বাবুয়ে দলকে কিছু স্মরণীয় সাফল্য এনে দেন। ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জয়ে অধিনায়ক হিসেবে বিরাট সফলতা লাভ করেন। অক্টোবর, ১৯৯৮ সালে হারারেতে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে জিম্বাবুয়ে দল জয় পায়। পরের মাসে দলকে নিয়ে পাকিস্তান গমন করেন। পেশাওয়ারে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে তাঁর দল।

১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে জিম্বাবুয়ের দলের সুপার সিক্স পর্বে উত্তরণে সবিশেষ ভূমিকা পালন করেন ও সবগুলো সাফল্যকে ছাঁপিয়ে যান। এ পর্যায়ে দলটি ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাভূত করে।

১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে জিম্বাবুয়ীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৯ অক্টোবর, ১৯৯৯ তারিখে ব্লোমফন্তেইনের গুডইয়ার পার্কে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ২৭ ও ৩৩ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে শন পোলকের শিকারে পরিণত হন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণের সাথে নিজেকে জড়ান। জ্যাক ক্যালিসের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যে সফরকারীরা ইনিংস ও ১৩ রানে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

নভেম্বর, ১৯৯৯ সালে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অধিনায়কত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে আনেন। ৮৬টি ওডিআইয়ের মধ্যে ৩০টিতে জয় পেয়ে জিম্বাবুয়ের সেরা অধিনায়ক হিসেবে মর্যাদা পেয়ে আসছেন। এছাড়াও, হিথ স্ট্রিকের সাথে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ২১ টেস্টে দলের অধিনায়কত্ব করেছেন।

২০০১-০২ মৌসুমে নিজ দেশে শন পোলকের নেতৃত্বে স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ৭ সেপ্টেম্বর, ২০০১ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অংশ নেন। ঘটনাবহুল খেলার পঞ্চম দিন নিয়মিত উইকেট-রক্ষক অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের পরিবর্তে উইকেট-রক্ষণের দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হন। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ০ ও ৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের বীরোচিত ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও সফরকারীরা ৯ উইকেটে জয়লাভ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

২০০২-০৩ মৌসুমে নিজ দেশে ওয়াকার ইউনুসের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান দলের মুখোমুখি হন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ১৬ নভেম্বর, ২০০২ তারিখে বুলাওয়েতে অনুষ্ঠিত সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ঐ টেস্টে তাঁর দল ১০ উইকেটে পরাজয়বরণ করে ও ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। খেলায় তিনি ৪৬ ও ৬২ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। টেস্টে বামহাতে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই শতক সহযোগে ২৭.২১ গড়ে ২৮৫৮ রান পেয়েছেন।

২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় উপেক্ষার শিকার হলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা দেন। তবে, মার্ক ভার্মুলেনের আঘাতের কারণে স্থলাভিষিক্ত হন। এরপর, ঐ বছরের শেষদিকে ইংল্যান্ড গমনার্থে দলের বাইরে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে হারারেভিত্তিক লিলফোর্ডিয়া জুনিয়র স্কুলের কোচ ও পিতা ইয়ান ক্যাম্পবেলের সাথে যুক্ত হন। এছাড়াও, ধারাভাষ্যকর্মের দিকে ধাবিত হন। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে অনুষ্ঠিত ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতাকে ঘিরে খণ্ডকালীন কোচ হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাবনা নাকচ করে দেন।

ওডিআইয়েই অধিক সফলতা পেয়েছেন। এ স্তরের ক্রিকেটে ৩০.৫০ গড়ে ৫১৮৫ রান সংগ্রহ করেছেন। তন্মধ্যে, সাতটি শতক ও ৩০টি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেছেন। ৬০-এর মাঝামাঝি স্ট্রাইক রেটে রান তুলেন। জিম্বাবুয়ের চার জন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে ওডিআই পাঁচ হাজার রান সংগ্রহের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। বাংলাদেশ বাদে অন্য কোন দেশের বিপক্ষে ৩১ বা তার চেয়ে কম গড়ে রান তুলেছেন।

২০০৯-১০ মৌসুমে জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো সংস্কারের ফলে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনকালীন প্রথম একাদশ গঠন করেন। জানুয়ারি, ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মনোনীত হন। ২০১৫ সালে পাকিস্তান সফরে জিম্বাবুয়ের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। এরফলে, ছয় বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা আয়োজনের পথ সুগম হয়। ২১ জুলাই, ২০১৫ তারিখে অধিনায়ক প্রসপার উতসেয়া বিশ্বকাপ ক্রিকেট দলে তাঁকে না রাখার বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যবাদের অভিযোগ আনেন। গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার ও হিথ স্ট্রিকের ন্যায় শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড়দের কোচ হিসেবে নিযুক্তির কথা তুলে ধরেন। এর পরিবর্তে বাণিজ্যিক, আন্তর্জাতিক ও বিশেষ প্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্রিকেট পরিচালক হিসেবে মনোনীত হন। এরই জের ধরে ২২ অক্টোবর, ২০১৫ তারিখে এ দায়িত্ব থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। কাবুল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট গ্রাউন্ডে খেলা চলাকালীন স্টেডিয়ামের বাইরে আত্মঘাতি বোমা হামলা হলে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ আফগানিস্তানে টি২০ লীগে অংশ নেয়া নয়জন ক্রিকেটারকে দেশে ফেরৎ আসার আদেশ দেয়। তবে, ঐ লীগে ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় থাকা অবস্থায় তিনি আফগান প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন। ঋণ বিতরণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।

Similar Posts