২৭ নভেম্বর, ১৯৬৯ তারিখে কেপ প্রভিন্সের কেপটাউনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৯২-৯৩ মৌসুম থেকে ২০০৫-০৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে কেপ কোবরাস ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ক্রেগ ম্যাথুজ ও এরিক সিমন্সের সাথে বিপজ্জ্বনক পেসারত্রয়ীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তাঁদের উপরই দলের অগ্রযাত্রা অনেকাংশে নির্ভরশীল ছিল। ব্যাটসম্যান হিসেবে অপরিচিত এলাকায় বল ফেলাকেই অগ্রাধিকার দিতেন। ব্যাট হাতে নিয়ে অপ্রচলিত পন্থায় মারকুটে ব্যাটিং করতেন। অপরদিকে, বল হাতে নিয়ে উভয়দিক দিয়ে মানসম্পন্ন সুইং বোলিং করতেন। দলের অমূল্য সম্পদে পরিণত হয়েছিলেন। এককথায়, প্রকৃত বিনোদনধর্মী খেলা উপহার দিতেন।
১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের সুপারস্পোর্ট সিরিজের শিরোপা বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। চূড়ান্ত খেলায় নয় নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নেমে শৈল্পিক ভঙ্গীমায় ১৪৩ রানের মনোমুগ্ধকর ইনিংস উপহার দেন। এছাড়াও, ২০০২-০৩ মৌসুমে ঐ প্রতিযোগিতার সর্বাধিক উইকেট সংগ্রাহকে পরিণত হয়েছিলেন। এক বছর পর পুণরায় তাঁর দল ঘরোয়া আসরের শিরোপা জয় করতে সমর্থ হয়। ফলশ্রুতিতে, ঐ বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।
১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্ট ও ১৯টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। তন্মধ্যে, ছয়বারই উপমহাদেশ সফর করেছিলেন। ২৫ অক্টোবর, ১৯৯৮ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতিযোগিতায় তাঁর শিরোপা জয় করে। এরফলে, বৈশ্বিক অঙ্গনে প্রথমবারের মতো বড় ধরনের শিরোপা জয় করে দক্ষিণ আফ্রিকা দল।
২০০৩ সালে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে বাংলাদেশ সফরে যান। ২৪ এপ্রিল, ২০০৩ তারিখে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। চার্ল উইলোবি ও জ্যাক রুডল্ফের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ২/৩৭ ও ০/৪৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। অপর অভিষেকধারী জ্যাক রুডল্ফের অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলায় স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৬০ রানে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
একই সফরের ১ মে, ২০০৩ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২/২০ ও ১/১২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, মোহাম্মদ রফিকের অসাধারণ বোলিং শৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৮ রানে পরাজিত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
মূলতঃ দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টিভঙ্গীর উপর নির্ভর করে টেস্টের তুলনায় ওডিআইয়ে অধিক অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু, ঘরোয়া পর্যায়ের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দারুণ গড়ে ও স্ট্রাইক-রেটে তিন শতাধিক উইকেটের সন্ধান পেয়েছেন।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর বাগান পরিচর্যার দিকে মনোনিবেশ ঘটান। এক পর্যায়ে নভেম্বর, ২০১৬ সালে কেপ কোবরাসের দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
