৭ জানুয়ারি, ১৯৫৪ তারিখে সারের ক্রয়ডন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ ইনিংস উদ্বোধন করেছেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ে করতেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
‘বাচ’ কিংবা ‘বাজি’ ডাকনামে পরিচিত অ্যালান বুচার ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী। ধ্রুপদীশৈলীর অধিকারী বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিকেটে অনেকগুলো দায়িত্বের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন।
হিথ ক্লার্ক গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে আবির্ভূত করার পূর্বে বামহাতে দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপিত করেছিলেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৯৮ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন ও সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সারে দলে দীর্ঘদিন খেলার পর অবশেষে ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ড দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ বার্তা লাভ করেন।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮০ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে একটিমাত্র টেস্ট ও সমসংখ্যক ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৭৯ সালে নিজ দেশে শ্রীনিবাস বেঙ্কটরাঘবনের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ৩০ আগস্ট, ১৯৭৯ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সফরকারী ভারতের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ডেভিড বেয়াস্টো’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। তবে, আশানুরূপ খেলেননি ও তাঁকে আর টেস্ট ক্রিকেট খেলতে দেখা যায়নি। খেলায় তিনি ১৪ ও ২০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সুনীল গাভাস্কার দ্বি-শতক হাঁকানো সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
পরের বছর ২০ আগস্ট তারিখে একই মাঠে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র ওডিআইয়ে অংশ নেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও সারে দলের ব্যাটিংয়ে ভিত্তি আনয়ণে অংশ নিতেন। ১৯৮৭ গ্ল্যামারগনে চলে আসেন। এ পর্যায়ে বেশ সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ওয়েলসের কাউন্টি দলটিতে উল্লেখযোগ্য রান সংগ্রহ করতে থাকেন। এছাড়াও, দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালনের পর ১৯৯২ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
কয়েক মৌসুম এসেক্স ও সারে দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। অপ্রত্যাশিতভাবে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ পান। ৪৪ বছর বয়সে এসে দলের বেশ কয়েকজন নিয়মিত খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে খেলতে থাকলে সারে দলে খেলেন। ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২২ ও ১২ রান তুলেন।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। জিম্বাবুয়ের কোচ হিসেবে বিরাটভাবে আনন্দ পেয়েছেন। তবে কিছুটা যে, অসন্তুষ্টি ও হতাশাচ্ছন্ন ছিলেন না তা কিন্তু নয়। প্রায় সাড়ে ছয় বছর স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষে ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ে দলের টেস্টে অংশগ্রহণের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। জিপি বুচার ও এমএ বুচার নামীয় পুত্র এবং বিএ বুচার নাম্নী কন্যা রয়েছে। ক্রিকেটের সাথে তাঁর পরিবারের নিবীড় সম্পর্ক রয়েছে। তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র মার্ক বুচার সারে ও ইংল্যান্ড দলে এবং অপর পুত্র গ্যারি সারে ও গ্ল্যামারগনের পক্ষে খেলেছে। ১৯৯১ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। একই বছর ওভালে সানডে লীগের খেলায় স্বীয় পুত্র মার্ক বুচারের বিপক্ষে খেলেন। এছাড়াও, তাঁর অপর দুই ভ্রাতা মার্টিন বুচার ও ইয়ান বুচার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছে।
