|

এজি মিল্খা সিং

৩১ ডিসেম্বর, ১৯৪১ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৬০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

১৯৫৮-৫৯ মৌসুম থেকে ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মাদ্রাজের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

দিলীপ ট্রফির ইতিহাসের প্রথম শতরানের ইনিংস খেলার কৃতিত্ব গড়েন। তবে, দূর্ভাগ্যজনকভাবে কৃপাল সিংয়ের ভ্রাতা হিসেবেই তিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন। নিজেকে কখনো জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা কৃপাল সিংয়ের সাফল্যকে ছাঁপিয়ে যেতে পারেননি। অবশ্য তামিলনাড়ুর ঘরোয়া ক্রিকেট জগতে ঠিকই নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পেয়েছিলেন। ধ্রুপদীশৈলীর বামহাতি ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু, খুব কমই বড় ধরনের ইনিংস খেলতে পেরেছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩৫ গড়ে ৪৩২৪ রান পান। রঞ্জী ট্রফিতে ৪১ গড়ে ২১৫১ রান সংগ্রহ করেছিলেন।

১৯৬১-৬২ মৌসুমে দিলীপ ট্রফির প্রথম খেলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ১৫১ রান তুলে প্রথম শতক হাঁকান। দলের অন্য কেউ ৪০-এর কোটা স্পর্শ করতে পারেনি। ফলশ্রুতিতে, দক্ষিণাঞ্চল ৩০২ রান তুলে। প্রতিপক্ষ উত্তরাঞ্চল ৪৮ ও ১৬৬ রানে গুটিয়ে গেলে তাঁর দল জয়লাভ করে। ঐ খেলার পূর্বে ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে বড় ধরনের সফলতা পান। ইন্ডিয়ান স্টারলেটসের সদস্যরূপে পাকিস্তান সফর করেন। ১৮ বছর বয়সে খেলতে নেমে এ সফরের প্রথম তিন ইনিংসে মাত্র ৬৮ রান তুলেন। পরবর্তীতে ১০৩*, ৯৭*, ১০১ ও ১০০ রান তুলে ১১৭ গড়ে নিয়ে যান। এরফলে, ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন। টেস্ট খেলার জন্যে মনোনীত হন।

১৯৬০ থেকে ১৯৬১ সময়কালে ভারতের পক্ষে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৫৯-৬০ সালে রিচি বেনো’র নেতৃত্বাধীন পঙ্গাল টেস্টে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে অংশ নেন। ১৩ জানুয়ারি, ১৯৬০ তারিখে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ টেস্টে মন সুদের সাথে তাঁর একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ খেলায় ব্যর্থতার পরিচয় দেন। ১৬ ও ৯ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্ধী করেছিলেন। খেলায় তাঁর দল ইনিংস ও ৫৫ রানে পরাজিত হলে পাঁচ টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। ঐ বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষেও একই অবস্থানে ছিলেন। এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দিল্লিতে ব্যক্তিগত সেরা ৩৫ রান তুলেন।

১৯৬০-৬১ মৌসুমে নিজ দেশে টেড ডেক্সটারের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১১ নভেম্বর, ১৯৬১ তারিখে বোম্বের বিএসে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এসবিআইয়ের সহকর্মী এবং দলীয় সঙ্গী ভিভি কুমার ও কৃপাল সিংয়ের সাথে ফিল্ডিং করেন। এরফলে, একই টেস্টে তামিলনাড়ুর তিনজন ক্রিকেটারের একযোগে অংশ নেয়ার ঘটনা ঘটে। ১৫.৩৩ গড়ে ৯২ রান তুলে খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি টানেন। অথচ, তখনও তাঁর ২০ বছর পূর্তি হয়নি। পরবর্তীতে, অপূর্ব সেনগুপ্তা ও বাল দানি তাঁর সাথে যোগ দেন।

পিতা এজি রাম সিং ও তাঁর পরিবার চেন্নাইয়ে অন্যতম সেরা ক্রিকেট পরিবারগুলোর অন্যতম ছিল। ভ্রাতৃত্রয় মাদ্রাজ লীগে ভিন্ন ভিন্ন ক্লাব দলে খেলতেন। কৃপাল সিং ইআইডি প্যারি, এজি মিল্খা সিং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও সতেন্দার সিং অলওয়াপেট সিসির পক্ষে খেলেছেন।

১০ নভেম্বর, ২০১৭ তারিখে ৭৫ বছর ৩১৪ দিন বয়সে চেন্নাইয়ে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • |

    ফারভিজ মাহারুফ

    ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। শ্রীলঙ্কার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। দীর্ঘদেহী, লিকলিকে ও উন্মুক্ত বক্ষের অধিকারী ডানহাতি ফাস্ট বোলার। অফ-স্ট্যাম্প বরাবর বল ফেলাসহ বলকে বাঁক খাওয়ানোর কারণে নিজেকে বিপজ্জ্বনক বোলারে পরিণত করেছিলেন। ছন্দোবদ্ধ দৌঁড়ে বোলিং…

  • | | |

    এমএল জয়সীমা

    ৩ মার্চ, ১৯৩৯ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের সেকান্দারাবাদে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৬০ থেকে ১৯৮০-এর দশকে টাইগার পতৌদি, সেলিম দুরানি’র ন্যায় ভারতীয় ক্রিকেটের শীর্ষ ১০জন তারকা ক্রিকেটারের অন্যতম ছিলেন। তন্মধ্যে, টাইগার…

  • |

    পিটার ফন ডার বিল

    ২১ অক্টোবর, ১৯০৭ তারিখে কেপ প্রভিন্সের কেনিলওয়ার্থ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৩০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের শুরুরদিকের অন্যতম তারকা খেলোয়াড়ের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। বেশ দীর্ঘকায় গড়নের অধিকারী ছিলেন। রন্ডেবশের ডিওসিসান কলেজ থেকে রোডস বৃত্তি লাভ করে অক্সফোর্ডের ব্রাসনোস কলেজে চলে…

  • | | |

    ইউনুস খান

    ২৯ নভেম্বর, ১৯৭৭ তারিখে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের মারদান এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে ডানহাতে মিডিয়াম কিংবা লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে অংশ নিতেন। পাকিস্তানের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। মারদানে জন্মগ্রহণ করলেও শৈশবেই পাকিস্তানের বন্দর নগরী করাচীতে চলে যান।…

  • | | |

    জিওফ হাওয়ার্থ

    ২৯ মার্চ, ১৯৫১ তারিখে অকল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী পেশাদার ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর অপর ভ্রাতা হ্যাডলি হাওয়ার্থ নিউজিল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন। ১৯৭১ থেকে ১৯৮৫-৮৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সরব ভূমিকা রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে…

  • |

    জর্জ রো

    ১৫ জুন, ১৮৭৪ তারিখে কেপ প্রভিন্সের গ্রাহামসটাউন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৮৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ১৯০৬-০৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন…