Skip to content

১৭ জানুয়ারি, ১৯২৫ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের লাহোরের পাঞ্জাবে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারত ও পাকিস্তান – উভয় দলের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

মৃত্যুসমতুল্য অন্যতম বামহাতি স্পিনার হিসেবে বিবেচিত হতেন। মাঝে-মধ্যে মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন। বামহাতে ব্যাট নিয়ে আগ্রাসী ভূমিকায় নিখুঁতভাব বজায় রাখতেন। বোলিংয়ের পাশাপাশি দর্শনীয় ব্যাটিং করতেন। ‘পাকিস্তান ক্রিকেটের জনক’ হিসেবে সর্বত্র পরিচিতি লাভ করেন। পাকিস্তানের ক্রিকেটের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে চিত্রিত হন। কেবলমাত্র ইমরান খান বাদে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে অদ্যাবধি তাঁকে ‘দ্য স্কিপার’ হিসেবে পরিচিতি ঘটানো হয়ে থাকে। ‘সাধারণ ব্যক্তি থেকে পরবর্তীতে অসাধারণত্বের দিকে ধাবমান হন। জনগণের উজ্জ্বীবনী শক্তিতে পরিণত হন ও সর্বদাই নেতৃত্বের উপমা হিসেবে চিত্রিত হয়ে পড়েন।’

ব্রিটিশ পরিবেশের সাথে সম্যক পরিচিত ছিলেন। অক্সফোর্ডে অধ্যয়ন করেছেন। ১৯৪৩-৪৪ মৌসুম থেকে ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, নর্দার্ন ইন্ডিয়া, সার্ভিসেস ও মুসলিমসহ কয়েকটি দলে খেলেছেন। নিজের স্বর্ণালী পাঁচ মৌসুমে উপমহাদেশের কোন খেলায় অংশ নেননি।

ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ারের পক্ষে দুই মৌসুম প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ক্লাবে অবস্থানকালীন বিখ্যাত নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার মার্টিন ডনেলি’র সান্নিধ্যে নিজের প্রতিভাকে শাণিত করেছিলেন। মেয়াদের শেষ পর্যায়ে ক্লাবের সভাপতি সিরিল হ্যাস্টিলোর কন্যার পাণিগ্রহণ করেছেন। ইংল্যান্ডের জনৈক সাংবাদিক তাঁর দক্ষতা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন যে, ‘ব্যাটিংয়ের ধরন অনেকাংশেই প্রাচ্যের উপযোগী’। কিন্তু পরদিনই তা ‘প্রাচ্যের ভুল’ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর দ্বিতীয় পত্নীর ভ্রাতা ও অফ-স্পিনার জুলফিকার আহমেদের সাথে পাকিস্তানের অধিনায়কের দায়িত্বে থাকাকালীন একত্রে খেলেছেন।

১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সময়কালে সর্বমোট ২৬ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। তন্মধ্যে, ভারতের পক্ষে তিনটিমাত্র টেস্ট ও পাকিস্তানের পক্ষে ২৩টি টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। এক ঝাঁক নতুন খেলোয়াড়কে নিয়ে পাকিস্তান দলকে নেতৃত্ব দেয়ার পূর্বে ১৯৪৬ সালে ভারতের সদস্যরূপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৪৬ সালে ইফতিখার আলি খান পতৌদি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে ইংল্যান্ড সফরে যান। ২২ জুন, ১৯৪৬ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। বিনু মানকড়, রুসি মোদি, সাদু সিন্ধে, বিজয় হাজারে ও গুল মোহাম্মদের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৪৩ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিক দল ১০ উইকেটে জয় পায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

পরবর্তীতে, আমির ইলাহি ও গুল মোহাম্মদের সাথে তিনজন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে ভারত ও পাকিস্তান – উভয় দলের পক্ষে খেলার কৃতিত্বের অধিকারী হন। এ সফরে তিনি আব্দুল হাফিজ নামে খেলেন। পরবর্তীতে, পাকিস্তান দলে আব্দুল হাফিজ কারদার নামে পরিচিতি পান। ঐ সিরিজে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য সাফল্যের সন্ধান পাননি। ভারত বিভাজনের পর পাকিস্তানে থেকে যান।

১৯৪৮ সালে ডন ব্র্যাডম্যানের অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়া দল ইংল্যান্ড সফরে আসে। ‘অপরাজেয়’ নামধারী শক্তিধর অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরূপে একটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। ইনিংস ব্যবধানে দল পরাজিত হলেও তিনি স্ব-মহিমায় ভাস্বর ছিলেন। ৫৪ ও ২৯ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়াও, উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ও শতকধারী বিল ব্রাউন এবং ধ্রুপদীশৈলীর বামহাতি ব্যাটসম্যান নীল হার্ভে’র উইকেট দখল করেছিলেন। ১৯৫১ সালে সফররত এমসিসি দলের বিপক্ষে পাকিস্তান দলকে নেতৃত্ব দেন। দলকে দূর্দান্ত পরিচালনা করেন ও টেস্ট মর্যাদা লাভে তৎপরতা দেখান। ফলশ্রুতিতে, জুলাই, ১৯৫২ সালে পূর্ণাঙ্গ সদস্যরূপে পাকিস্তান দল স্বীকৃতি পায়।

১৯৫২ সালে পাকিস্তানের সদস্যরূপে ভারত গমন করেন। বামহাতি খেলোয়াড় হিসেবে পাকিস্তানের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের সদস্যরূপে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। বিনু মানকড় তাঁর এ অভিষেক পর্বকে ম্লান করে দেন। তবে, লখনউয়ে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর দল রুখে দাঁড়ায়। ম্যাটিং উইকেটে অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়া ফজল মাহমুদ ১২ উইকেট দখল করেন। ফজল মাহমুদের বিধ্বংসী বোলিংয়ের কল্যাণে দ্বিতীয় টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছিল পাকিস্তান দল। এরফলে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশের মাত্র দ্বিতীয় টেস্টেই জয়লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করে তাঁর দল। পরবর্তীতে, ১৫ মার্চ, ২০১৯ তারিখে দেরাদুনে অনুষ্ঠিত সিরিজের একমাত্র টেস্টে আফগানিস্তান দল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয় পেয়ে এ কৃতিত্বের সাথে জড়ায়। এরফলে, তিনি জাতীয় বীরে পরিণত হন ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানকে অন্যতম শক্তিতে পরিণত করেন।

ট্রেন্ট ব্রিজে ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত হলে পাকিস্তান দল ১-০ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে পড়ে ও ওভালের চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেয়। টসে জয়লাভের পর ব্রায়ান স্ট্যাদাম এবং অভিষেক ঘটা পিটার লোডার ও ফ্রাঙ্ক টাইসনের বোলিংয়ে দলের সংগ্রহ ৫১/৭ দাঁড়ায়। গুরুতর পরিস্থিতি সামলে নিতে নিচেরসারির ব্যাটসম্যানদের সহায়তায় ১৩৩ রান করতে সক্ষম হয়। দলীয় ইনিংসটিতে চারটি শূন্য রান ছিল। নিজে ৩৬ রান করে দলের শীর্ষ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন। ফজল মাহমুদের প্রথম ইনিংসে ৬/৫৩ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬/৪৬ বোলিং পরিসংখ্যানের কল্যাণে চতুর্থ দিন সকালে তাঁর দল জয় পায় ও সিরিজে সমতা আনে।

এ বিজয়ের ফলে সবকিছুর চিত্র পরিবর্তিত হয়ে পড়ে। দর্শকেরা পাকিস্তানকে বিরাটভাবে পরিচিতি ঘটাতে থাকে ও বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে তাঁকে সমসাময়িক ক্রিকেটের অন্যতম উজ্জ্বীবিত অধিনায়কদের অন্যতম হিসেবে বিবেচনায় আনে। দেশে ফিরে আসলে পুরো প্রজন্মকে এ ক্রীড়া উজ্জ্বীবিত করে তোলে। নবগঠিত রাষ্ট্রের প্রতীকিতে পরিণত হয়। নিজ দেশে নিউজিল্যান্ডকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করলে তাঁর মর্যাদা আরও বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। ঐ টেস্টগুলোয় তিনি আট উইকেট দখল করেছিলেন।

এক বছর পর অস্ট্রেলিয়া দল প্রথমবারের মতো পাকিস্তান সফরে আসে। একমাত্র টেস্টে পাকিস্তান দলকে নেতৃত্ব দেন। শক্তিধর ব্যাটিংয়ের অধিকারী অস্ট্রেলিয়া দলটি ফজল মাহমুদের ৬/৩৪ ও খান মোহাম্মদের ৪/৪৩ বোলিং পরিসংখ্যানের কল্যাণে মাত্র ৮০ রানে গুটিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এরপর, পাকিস্তানের সংগ্রহ ৭০/৫ থাকাকালীন মাঠে নামেন। পাল্টা আক্রমণে ওয়াজির মোহাম্মদকে সাথে নিয়ে ১০৪ রান তুলেন। নিজে করেন ৬৯ রান। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর এ ইনিংসটি বেশ তাৎপর্য্যের দাবীদার ছিল। ১১৯ রানে এগিয়ে গেলে ফজল মাহমুদের ৭/৮০ ও খান মোহাম্মদের ৩/৬৯ বোলিংয়ের কল্যাণে অস্ট্রেলিয়া দল ১৮৭ রানে গুটিয়ে যায়। বাদ-বাকী কাজটুকু আনুষ্ঠানিকতাপূর্ণ ছিল। পাকিস্তানের কাছে পরাজয়বরণ করতে বাধ্য হয় সফরকারীরা।

টেস্ট ক্রিকেটে অন্তর্ভুক্তির চার বছরের মধ্যেই পাকিস্তান দল তাঁর নেতৃত্বে চারটি টেস্টভুক্ত দেশের বিপক্ষে জয়লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করে। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ নীতি থাকায় তাদের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পাননি। তাসত্ত্বেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাভূত করার মাধ্যমে জয়ের ষোলকলা পূর্ণ করেন। দুই বছর পর ওয়াজির মোহাম্মদের ১৮৯ রান সংগ্রহ এবং ফজল মাহমুদ ও নাসিম-উল-গণি’র ছয় উইকেট দখল করলে পোর্ট অব স্পেন টেস্টে স্বাগতিক ও শক্তিধর দলকে ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত করেন। এটিই তাঁর শেষ টেস্ট ছিল।

ছয় বছরের অধিক সময় দলের নেতৃত্বে থেকে পাকিস্তানের সকল এলাকা থেকে অনেক ক্রিকেটারকে দলে নিয়েছেন ও বিশ্ব শক্তিতে তাঁদেরকে একসূত্রে বেঁধে রেখেছেন। তিনি সকলের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখেন ও পরামর্শ দিতেন। এছাড়াও, এ ক্রীড়ায় যুক্ত থেকে পাকিস্তানী ক্রিকেটে দক্ষ প্রশাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

১৯৫৬ সালে ইংল্যান্ডের ডোনাল্ড কারের বিপক্ষে কয়েকবার জোড়ালো সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে গেলে ইদ্রিস বেগকে সন্ধ্যায় মাথায় এক বালতি পানি ঢেলে দেয়। এটি বেগের কাছে তামাশা হিসেবে নেয়া হলেও তিনি বিষয়টিকে গুরুতর উল্লেখ করে ইংরেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে অভিযোগ আনলে তাঁরা ক্ষমা প্রার্থনা করে। টেস্ট ক্রিকেটে নিরপেক্ষ আম্পায়ার নিয়োগে সোচ্চার ছিলেন ও বেশ কয়েক দশক পর তা বাস্তবে রূপ নেয়।

পাকিস্তানের পক্ষে ২৩ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সবকটিতেই দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। এ পর্যায়ে ৬ জয় ও ৬ পরাজয়ের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। টেস্ট আঙ্গিনায় নতুন দলকে নিয়ে দুই বছর পরই ১৯৫৪ সালে ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্মরণীয় জয় তুলে নেন। তৎকালীন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্দিষ্ট দেশ ব্যতিরেকে স্বেচ্ছায় দূরে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যতীত টেস্টভুক্ত সকল দেশের বিপক্ষেই পাকিস্তানের জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারত, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়লাভ করে।

১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে নিজ দেশে হ্যারি কেভের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১৩ অক্টোবর, ১৯৫৫ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ককে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বতন সেরা ছিল ২/২০। ৩/৩৫ ও ০/২২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, দলের একমাত্র ইনিংসে ২২ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। ঐ খেলায় স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ২৬ মার্চ, ১৯৫৮ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৪৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ঐ টেস্টে তাঁর দল ইনিংস ও ১ রানে জয় পেলেও স্বাগতিক দল ৩-১ ব্যবধানে জয় পায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

১৯৫৮ সালে পাকিস্তান সরকার থেকে প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও, ২০২২ সালে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড প্রণীত পাকিস্তান ক্রিকেট হল অব ফেমে ইউনুস খানের সাথে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। টেস্ট রেকর্ড তেমন আহামড়ি না হলেও ব্যাট হাতে ৩০ গড়ে রান সংগ্রহসহ ২৫ গড়ে উইকেট পেয়েছেন। সবমিলিয়ে ২৬ টেস্টগুলো থেকে ৯২৭ রান ও ২১ উইকেট দখল করেছিলেন।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মাঠের বাইরে থেকেও নেতৃত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে সোচ্চার ছিলেন। পাকিস্তান ক্রিকেটে সক্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে রয়ে যান। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন। দেশব্যাপী ক্রিকেটের আধুনিকায়ণে তৎপর হন, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ দল নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনেন। লর্ডসভিত্তিক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সদর দফতর লাহোরে নিয়ে আসার দাবী জানান। তবে, ঐ সময়ে সহকর্মীদের কাছ থেকে এ দাবীর স্ব-পক্ষে খুব কমই সাড়া পেয়েছিলেন। এছাড়াও, ইমরান খান, আসিফ ইকবালসহ অনেকের সাথেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। সরকারের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদস্বরূপ তিনি পদত্যাগ করেন। বেশ শক্ত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন ও ভেঙ্গে পড়তেন না। পদত্যাগের পর মন্তব্য করেন যে, ‘পাকিস্তানী ক্রিকেটের আমলাতন্ত্র নেকড়ের কবলে পড়েছে ও খেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।’

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন। ১৯৭০ সালে পাঞ্জাব প্রাদেশিক আইনসভার সদস্যরূপে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। জুলফিকার আলী ভুট্টো’র দলের সমর্থক হিসেবে খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর, রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে আনেন ও সুইজারল্যান্ডে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত হন।

১৯৪৭ সাল পর্যন্ত আব্দুল হাফিজ নামে পরিচিতি লাভ করেন। ২১ এপ্রিল, ১৯৯৬ তারিখে পাঞ্জাবের ইসলামাবাদে ৭১ বছর ৯৫ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।