এবি ডি ভিলিয়ার্স
১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৪ তারিখে প্রিটোরিয়ায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। ২০০৪-০৫ মৌসুম থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রেখেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নর্থ ইস্টার্ন ট্রান্সভাল ও টাইটান্স এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, আফ্রিকা একাদশ, বার্বাডোস ট্রাইডেন্টস, ব্রিসবেন হিট, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, লাহোর কালান্দার্স, প্রোটিয়াস, রংপুর রাইডার্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ও তশন স্পার্টান্সের পক্ষে খেলেছেন।
প্রত্যেক প্রজন্মেই প্রত্যেক খেলায় অসম্ভব প্রভাব ফেলতে কোন না কোন খেলোয়াড় একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করেন। মেধার প্রাচুর্যতাসহ সহজাত প্রবৃত্তি নিয়ে তাঁরা অগ্রসর হন। তাঁরা এমন কিছু কাজের নজির গড়েন যা অপরদের কাছে কেবলই স্বপ্ন হিসেবে বিবেচিত হয়। টেনিসে রজার ফেদেরার, গল্ফে টাইগার উডস এবং অবশ্যম্ভাবী হিসেবে ক্রিকেটে রয়েছেন ‘মি. থ্রি সিক্সটি’ নামে খ্যাত আব্রাহাম বেঞ্জামিন ডি ভিলিয়ার্স। ক্রিকেটের পাশাপাশি রাগবি খেলোয়াড়, গল্ফার ও টেনিস খেলোয়াড়ের ভূমিকায়ও অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে আবির্ভুত করেছেন।
যে-কোন বোলারের বিপক্ষে অবস্থান করে মাঠের চতুর্পার্শ্বে বলকে ফেলতে পারেন। পাশাপাশি, বৈচিত্র্যমূখী শট খেলে উদ্ভাবনী শক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটেয়েছেন। টেস্ট ও ওডিআইয়ে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছেন। এছাড়াও, টি২০ ক্রিকেটেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে আইপিএলে ভারতীয় সমর্থকদেরও মন জয় করে নিয়েছেন।
২০০৪ থেকে ২০১৮ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ১১৪ টেস্ট, ২২৮টি ওডিআই ও ৭৮টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। ২০০৪-০৫ মৌসুমে নিজ দেশে মাইকেল ভনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ১৭ ডিসেম্বর, ২০০৪ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ডেল স্টেইনের সাথে একযোগে তাঁর টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এ টেস্টে অংশগ্রণের পূর্বে মাত্র ষোলোটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ঐ খেলায় গ্রায়েম স্মিথের সাথে উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন। পরবর্তীতে মাঝারিসারিতে চলে যান। এছাড়াও, উইকেট-রক্ষণে এগিয়ে আসেন। খেলায় তিনি ২৮ ও ১৪ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। অ্যান্ড্রু স্ট্রসের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে স্বাগতিকরা ৭ উইকেটে পরাভূত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
একই সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে আঘাতপ্রাপ্ত মার্ক বাউচারের স্থলাভিষিক্ত হন ও পরবর্তীতে তাঁর কাছ থেকে উইকেট-রক্ষণেরও দায়িত্ব লাভ করেন। এরফলে, ক্ষাণিকটা ব্যাটিংয়ের অবস্থান পরিবর্তিত হয় ও নিজেকে নীচের দিকে নিয়ে যান। তাসত্ত্বেও, ঐ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে অর্ধ-শতরানের ইনিংস উপহার দেন। ২৬ ডিসেম্বর, ২০০৪ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ২৮ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ১৪ ও ৫২* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, উইকেটের পিছনে অবস্থান করে পাঁচটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দীকরণের সাথে নিজেকে জড়ান। তবে, জ্যাক ক্যালিসের অসাধারণ ব্যাটিং সাফল্যে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা এগিয়ে যায়।
সিরিজের শেষ খেলায় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে পুণরায় ব্যাটিংয়ে নামেন। ৯২ ও ১০৯ রান তুলে সদর্পে টেস্ট ক্রিকেটে উপস্থিতির কথা জানান দেন। এভাবেই আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনের বর্ণাঢ্যময় সূচনা ঘটে। ১ থেকে ৮ নম্বর অবস্থানে ব্যাট হাতে নেমেছেন ও অধিকাংশ অবস্থানেই সফলতা পেয়েছেন।
২০০৫-০৬ মৌসুমে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ১৬ ডিসেম্বর, ২০০৫ তারিখে পার্থে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৩৩ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৬৮ ও ১২ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে শেন ওয়ার্নের শিকারে পরিণত হন। ব্রাড হজের দূর্দান্ত প্রয়াস সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
ওডিআইয়ে নিজেকে তুলে ধরতে বেশ কিছুটা সময় নেয়। সপ্তদশ প্রচেষ্টায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম অর্ধ-শতক হাঁকান। দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তরের ক্রিকেটে অংশ নেন ও দলের প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত হন। তবে, শুধুমাত্র উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলেননি; দলের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে মাঝারিসারি কিংবা নিচেরসারিতেও নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রত্যেক সুযোগেরই সদ্ব্যবহারে তৎপরতা দেখিয়েছেন। মার্ক বাউচারের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে উইকেটের পিছনে ক্ষীপ্রগতিতে অগ্রসর হয়েছেন ও সহজাত উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন প্রায়শঃই বলতে শোনা যায়।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ের ভিত্তি আনয়ণে তাঁর উপস্থিতি বিশাল ভূমিকা রাখে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দলের ঐতিহাসিক বিজয়ে প্রধান ভূমিকা রাখেন ও ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিন বছরের জন্যে দলকে অপরাজিত অবস্থায় নিয়ে যান। ২০০৭ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দলকে সেমি-ফাইনালে নিয়ে যান।
২০০৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে খেলায় ছন্দপতন ঘটে। তবে, ২০০৮ সালের শুরুতে ডারবানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৯ বলে অপরাজিত ১০৩ রানের মনোমুগ্ধকর ইনিংস উপহারের মাধ্যমে পুণরায় নিজেকে মেলে ধরেন। ঐ বছরের শেষদিকে আহমেদাবাদে অনুষ্ঠিত টেস্টে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে ভারতের বিপক্ষে দ্বি-শতরানের ইনিংস খেলেন। এরপর, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম সিরিজ বিজয়ে ভূমিকা রাখেন। লিডসে ১৭৪ রান করেছিলেন। এরপর, নিষেধাজ্ঞা পরবর্তীকালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দলের প্রথম সিরিজ বিজয়েও অংশ নেন। পার্থে অপরাজিত ১০৬ রান তুলেছিলেন। এ বছরেই টেস্ট ক্রিকেটে নিজের স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। ৫৮.৯৪ গড়ে ১০৬১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ২০১০ সালে আবারও এ অর্জনের কাছাকাছি পর্যায়ে ছিলেন। ঐ বছর ৯৯৬ রান তুলেছিলেন।
২০০৭-০৮ মৌসুমে নিজ দেশে ডোয়াইন ব্র্যাভো’র নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ১০ জানুয়ারি, ২০০৮ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১০৩* রান সংগ্রহ করেন। তবে, অ্যাশওয়েল প্রিন্সের অসাধারণ শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১০০ রানে জয় পেলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।
২০০৮-০৯ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ১৭ ডিসেম্বর, ২০০৮ তারিখে পার্থে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। চমৎকার ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন ও ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৪২ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৩০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৬৩ ও ১০৬* রান সংগ্রহসহ চারটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে সফরকারীরা ৬ উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।
একই মৌসুমে নিজ দেশে ফিরতি সফরে রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১৯ মার্চ, ২০০৯ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে বেশ সফল ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ১০৫ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৩৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টে এক পর্যায়ে এবি ম্যাকডোনাল্ডের বল থেকে উপর্যুপরী চারটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ১৬৩ রান সংগ্রহসহ চারটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, পল হ্যারিসের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ২০ রানে জয়লাভ করলে সফরকারীরা ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।
২০১০-১১ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। ২০ নভেম্বর, ২০১০ তারিখে আবুধাবিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। অপরাজিত ২৭৮ রান সংগ্রহ করেন। এরফলে টেস্ট ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকানদের মধ্যে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন; পরবর্তীতে ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হাশিম আমলা ত্রি-শতক করার পূর্ব-পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকান রেকর্ডরূপে টিকেছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় শেষ হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। একই বছরে ভারতের বিপক্ষে দুইটি ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওডিআইয়ে উপর্যুপরী তিনটি শতক হাঁকান।
ধারাবাহিক ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১১ সালে গ্রায়েম স্মিথের পরিবর্তে প্রোটীয়দের নতুন ওডিআই অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। টেস্টে প্রভূত্ব ঘটানোর পাশাপাশি ওডিআইয়েও বেশ ভালোমানের খেলা উপহার দেন ও বেশ কয়েকবার আইসিসি ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানে অবস্থান করেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রত্যাবর্তনের পর উল্লেখযোগ্য পরিচিতি ঘটাতে সচেষ্ট হন। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আইসিসির বর্ষসেরা ওডিআই ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেন।
২০১১-১২ মৌসুমে নিজ দেশে তিলকরত্নে দিলশানের নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ২৬ ডিসেম্বর, ২০১১ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ১৫ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ২৫ ও ৬৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, রঙ্গনা হেরাথের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ২০৮ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
একই মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ৭ মার্চ, ২০১২ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০ ও ২৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। দলীয় অধিনায়কের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর বদান্যতায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
২০১২-১৩ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ৩০ নভেম্বর, ২০১২ তারিখে পার্থে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৪ ও ১৬৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, চারটি ক্যাচ ও একটি স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজেকে জড়ান। তবে, হাশিম আমলা’র অনবদ্য ব্যাটিং সাফল্যে সফরকারীরা ৩০৯ রানে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।
একই মৌসুমে নিজ দেশে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১১ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। প্রথম ইনিংসে ৩৯ রানে পৌঁছানোকালে ৬০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ৫১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, পাঁচটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দীকরণে অগ্রসর হন। ডেল স্টেইনের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ১৯৩ রানে পরাজিত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।
২০১২-১৩ মৌসুমে নিজ দেশে মিসবাহ-উল-হকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। পুরো সিরিজে অসাধারণ ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১২১ রানের মনোরম শতক হাঁকান। এছাড়াও, উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হয়ে দুইটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেন। তবে, অপর অভিষেকধারী কাইল অ্যাবটের দূর্দান্ত বোলিংশৈলীর কারণে খেলায় তাঁর দল ইনিংস ও ১৮ রানে জয়লাভ করলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। এ সিরিজে ৩৫২ রান সংগ্রহ করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান।
২০১৩-১৪ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে পাকিস্তানী দলের বিপক্ষে খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। পুরো সিরিজে অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ২৩ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। দলের একমাত্র ইনিংসে ১৬৪ রানের মনোমুগ্ধকর ইনিংস খেলেন। তবে, দলীয় অধিনায়কের অনবদ্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে ইনিংস ও ৯২ রানে জয় পেলে দক্ষিণ আফ্রিকা দল সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ করতে সক্ষম হয়। এ সিরিজে ২৭৩ রান সংগ্রহ করে তিনি ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান।
একই মৌসুমে নিজ দেশে এমএস ধোনী’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। পুরো সিরিজে অসাধারণত্বের পরিচয় দেন। ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৩ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৭৪ রান সংগ্রহসহ সাতটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেন। তবে, ডেল স্টেইনের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয় পায়। এ সিরিজের ১৯০ রান সংগ্রহ করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।
২০১৩-১৪ মৌসুমে নিজ দেশে মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৩৪ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৭০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১১৬ ও ২৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পাশাপাশি, উইকেটের পিছনে অবস্থান করে তিনটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দীকরণে অগ্রসর হন। তবে, জ্যঁ-পল ডুমিনি’র অসাধারণ অল-রাউন্ড কৃতিত্বে স্বাগতিকরা ২৩১ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ বছর হাশিম আমলা’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে জিম্বাবুয়ের গমন করেন। ৯ আগস্ট, ২০১৪ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। অভিষেক ঘটা ডেন পাইতের বোলিং কল্যাণে সফরকারীরা ৯ উইকেটে জয় পায়।
২০১৪-১৫ মৌসুমে নিজ দেশে দিনেশ রামদিনের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। চমৎকার ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন ও ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৪২ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৭৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৮ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ ও একটি স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজেকে জড়ান। তাঁর অসাধারণ শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। ঐ সিরিজে দলীয় অধিনায়ক হাশিম আমলা’র দূর্দান্ত ব্যাটিংশৈলীতে তাঁর দল ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করেছিল।
দ্বিতীয়বারের মতো এক পঞ্জিকাবর্ষে টেস্টে চার অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। ২০১৩ সালে ৯৩৩ রান তুলেছিলেন। এ সময়ে মার্ক বাউচারের অবসর গ্রহণের পর থেকে টেস্টে পূর্ণাঙ্গকালীন উইকেট-রক্ষকের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। পাশাপাশি, গ্রায়েম স্মিথের পরিবর্তে ওডিআই ও টি২০আইয়ে অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। পরবর্তীতে অবশ্য ফাফ ডু প্লিসি’র কাছ টি২০আইয়ের দায়িত্ব চলে যায়।
এছাড়াও, পিঠের সমস্যায় আক্রান্ত হন। দক্ষিণ আফ্রিকা দলে কুইন্টন ডি ককের অন্তর্ভুক্তির ফলে ক্ষুদ্রতর সংস্করণের ক্রিকেট থেকে উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন ও অধিনায়ক হিসেবে মনোনিবেশ ঘটান। পাশাপাশি, ২০১৪ সালে টেস্টে উইকেট-রক্ষণের দায়িত্বভারও কুইন্টন ডি ককের কাছে হস্তান্তর করেন। ঐ বছরের মার্চ মাসে গ্রায়েম স্মিথের অবসর গ্রহণের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেন ও উত্তরাধিকারী হিসেবে চিত্রিত হয়েছিলেন। তবে, হাশিম আমলাকে অধিনায়কের দায়িত্বভার প্রদান করা হয়। কিন্তু, খেলায় কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। বরঞ্চ, পূর্বের চেয়ে আরও শক্তিমত্তা নিয়ে অগ্রসর হতে থাকেন।
জানুয়ারি, ২০১৫ সালে ওডিআইয়ের ইতিহাসের দ্রুততম শতক হাঁকানোর রেকর্ড গড়েন। ওয়ান্ডারার্সে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র ৩১ বলে তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শ করেন। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেরা দল হিসেবে নিয়ে গেলেও সেমি-ফাইনালে বিদেয় নেয়।
আগ্রাসী ব্যাটিংশৈলীর কারণে সেরা বোলারদের নিয়ে গড়া দলের আত্মবিশ্বাস ভেঙ্গে ফেলার ক্ষমতা রাখেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ধ্রুপদীমানের ড্রাইভ, ফ্লিক ও পুলে সহজাত প্রকৃতির অথচ উদ্ভাবনীশৈলীর পরিচয় দিয়ে ক্রিকেটে অন্যতম বিপজ্জ্বনক ক্রিকেটারে পরিণত হন। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় মাত্র ৬৬ বলে ১৬২ রান তুলেছিলেন। এরফলে, সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দক্ষিণ আফ্রিকা দল বিশ্বকাপের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ দাঁড় করায়। এর এক মাস পূর্বে একই দলের বিপক্ষে ১৬ বলে অর্ধ-শতক ও ৩১ বলে শতক হাঁকানোর কৃতিত্ব গড়েন।
২০১৭-১৮ মৌসুমে নিজ দেশে টিম পেইনের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ৩০ মার্চ, ২০১৮ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৬৯ ও ৬ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। ভার্নন ফিল্যান্ডারের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়ানৈপুণ্যে স্বাগতিকরা ৪৯২ রানে জয় পেলে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
২৩ মে, ২০১৮ তারিখে আকস্মিকভাবে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। এ সিদ্ধান্তে ক্রিকেট বিশ্বে আলোচনার ঢেউ উঠে। ১১৪ টেস্ট, ২২৮টি ওডিআই ও ৭৮ টি২০আইয়ে অংশ নিয়ে সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০০১৪ রান তুলেন। এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন যে, ‘এখন আমার পালা ও সত্যিকার অর্থে আমি ক্লান্ত। এখন অন্যদের দায়িত্ব নেয়ার সময় এসেছে।’ অবসর গ্রহণকালীন ওডিআইয়ের ইতিহাসে দ্রুততম ৫০, ১০০ ও ১৫০ রান সংগ্রহের রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন।
এক পর্যায়ে টি২০আইয়ের উপযোগী হিসেবে নিজেকে চিহ্নিত করতে পারেননি। মাঝামাঝি অবস্থানে খেলতেন ও খেলায় প্রভাব ফেলতে কিছুটা সময় নিতেন। ইন্ডিয়ান টি২০ লীগে দিল্লি দলের পক্ষে প্রথম খেলেন। এরপর, পরবর্তী বছরগুলোয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে চলে যান। এছাড়াও, দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া টি২০ প্রতিযোগিতায় টাইটান্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। উপরের তিনটি দলেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৪ সালের আসরে স্বদেশী ডেল স্টেইনের এক ওভার থেকে ২৩ রান তুলেন।
বিভিন্ন লীগে যোগ দিতে থাকেন। ২০১৫-১৬ মৌসুমের গ্রীষ্মে চাপ থেকে দূরে থাকার ইঙ্গিত দেন। অবসর নেয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তবে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের মাঝামাঝি সময় হাশিম আমলা টেস্ট অধিনায়ক থেকে অব্যাহতি নিলে এ দায়িত্ব পালনের জন্যে মনোনীত হন। অতঃপর, জানুয়ারি, ২০১৬ সালে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত হন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। ড্যানিয়েলা ডি ভিলিয়ার্স নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির আব্রাহাম ডি ভিলিয়ার্স ও জন রিচার্ড ডি ভিলিয়ার্স নামীয় পুত্র সন্তান রয়েছে।