|

ইশ সোধি

৩১ অক্টোবর, ১৯৯২ তারিখে ভারতের লুধিয়ানায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। লেগ-ব্রেক বোলিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

চার বছর বয়সে পরিবারের সাথে নিউজিল্যান্ডের সাউথ আইল্যান্ডে চলে আসেন। এখানেই ক্রিকেট খেলা শিখেন। ২০১২-১৩ মৌসুমের ঘরোয়া প্রতিযোগিতা প্লাঙ্কেট শীল্ডে নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টসের পক্ষে প্রথম অংশ নেন। এক পর্যায়ে নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা উদীয়মান তরুণ লেগ স্পিনার হিসেবে আবির্ভুত হন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স, জ্যামাইকা তল্লাজ, রাজস্থান রয়্যালস এবং সেন্ট ও নেভিস প্যাট্রিয়টসের পক্ষে খেলেছেন।

খুব ছোটবেলা থেকেই আরেক কিউই স্পিনার দীপক প্যাটেলের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে উত্তরণ ঘটান এবং মাঝে-মধ্যে গুগলি বোলিং করেন। ভিজাগে ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে লিস্ট-এ ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। তবে, তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। তাসত্ত্বেও, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ গমনার্থে ১৫-সদস্যের নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সদস্যরূপে মনোনীত হন।

২০১৩ সাল থেকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট, ওডিআই ও টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। ২০১৩-১৪ মৌসুমে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে বাংলাদেশ সফরে যান। ৯ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। কোরে অ্যান্ডারসনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক ঘটে। প্রথম ইনিংসে শতাধিক রান খরচ করেন। ৩/১৬৯ লাভ করেছিলেন। ২/১১২ ও ১/৫৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, উভয় ইনিংস থেকে ২৩ রান তুলেছিলেন। ১ ও ২২* রান সংগ্রহ করেন। তবে, সোহাগ গাজী’র অপূর্ব অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে নিষ্প্রাণ খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই মৌসুমে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে ড্যারেন স্যামি’র নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ৩ ডিসেম্বর, ২০১৩ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৫ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/৬৩ ও ২/১৫৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। রস টেলরের অনবদ্য দ্বি-শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে টেস্ট খেলেন। ঐ বছর ফিরতি সফরে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ৮ জুন, ২০১৪ তারিখে কিংস্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বতন সেরা ছিল ৩/৫৯। খেলায় তিনি ১/৫৯ ও ৩/৪২ লাভ করেন। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, অভিষেকধারী মার্ক ক্রেগের অনবদ্য বোলিং নৈপুণ্যে স্বাগতিকরা ১৮৬ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। এরফলে, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে নিউজিল্যান্ড দল দ্বিতীয়বারের মতো জয়লাভে সমর্থ হয়।

একই সফরের ৫ জুলাই, ২০১৪ তারিখে রোজিও’র উইন্ডসর পার্কে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি২০আইয়ে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলাটি ১৮ ওভারে নিয়ে আসা হয়। তিন ওভারে ১/৩৫ পান। তবে, ডি/এল পদ্ধতিতে খেলায় তাঁর দল জয় পায়।

টেস্ট অভিষেকের দুই বছর পর ২ আগস্ট, ২০১৫ তারিখে হারারে স্পোর্টস ক্লাবে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআইয়ে প্রথম খেলেন। সফরকারী দলে ৩০৩ রান তুললেও স্বাগতিক দল এক ওভার ও সাত উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে। তিনি নির্ধারিত ১০ ওভারে এক মেইডেন লাভ করলেও ০/৬৫ পান।

২০১৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় নিউজিল্যান্ড দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। এছাড়াও, ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। গ্রুপ পর্ব অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটিমাত্র খেলায় অংশ নিলেও পরাজিত হয়েছিল।

২০১৬-১৭ মৌসুমে প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে কেন উইলিয়ামসনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ভারত সফরে যান। ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ তারিখে কানপুরে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১/৫০ ও ২/৯৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ০ ও ১৭ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসেই রবীন্দ্র জাদেজা’র শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। পাশাপাশি, তিনটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। রবীন্দ্র জাদেজা’র অসামান্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ১৯৭ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

২০২৪-২৫ মৌসুমে টম ল্যাথামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ভারত গমন করেন। ১ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে ওয়াংখেড়েতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১/৩৬ লাভ করেন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে ৭ ও ৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, এজাজ প্যাটেলের স্মরণীয় বোলিং সাফল্যে স্বাগতিকরা মাত্র ২৫ রানে পরাভূত হলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ তারিখে রাজস্থান রয়্যালসের লিঁয়াজো অফিসার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন।

Similar Posts

  • |

    আফতাব বালুচ

    ১ এপ্রিল, ১৯৫৩ তারিখে সিন্ধু প্রদেশের করাচীতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৬৯-৭০ মৌসুম থেকে ১৯৮৪-৮৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে করাচী, পাকিস্তান ন্যাশনাল ব্যাংক, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স,…

  • | |

    কিথ মিলার

    ২৮ নভেম্বর, ১৯১৯ তারিখে ভিক্টোরিয়ার সানশাইন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেট তারকা ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ে সবিশেষ পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ‘নাজেট’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। ১.৮৫ মিটার ও ৮০ কেজি ওজনের অধিকারী ছিলেন। ১৫ বছর বয়সে তাঁর উচ্চতা ছিল ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৬২…

  • |

    মোহাম্মদ রফিক

    ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭০ তারিখে ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে অপূর্ব দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। নিখুঁতভাব বজায় রেখে ছন্দোবদ্ধ ধীরগতিসম্পন্ন বামহাতি বোলার ছিলেন। ‘মো’ ডাকনামে পরিচিতি পান। ২০০০-০১ মৌসুম থেকে ২০০৮ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী…

  • | |

    ফ্রাঙ্ক পেন

    ৭ মার্চ, ১৮৫১ তারিখে লন্ডনের দ্য সিডার্স এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটিং কর্মে পারদর্শী ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন তিনি। ১৮৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নিজের সময়কালে কেন্টের অন্যতম খ্যাতনামা ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছেন। দলের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন।…

  • |

    ম্যাট হেনরি

    ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৯১ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। দলে মূলতঃ বোলার হিসেবে খেলেন। ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করে থাকেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘হেন্নাজ’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। মারিস্ট হেয়ারউড ক্লাবে খেলেছেন। ২০১১ সাল থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড় জীবন চলমান রেখেছেন। ঘরোয়া পর্যায়ের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারি ও…

  • |

    সৌম্য সরকার

    ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩ তারিখে সাতক্ষীরায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। বামহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ে পারদর্শী। বাংলাদেশের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পিতার ন্যায় শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হতে চেয়েছিলেন। দর্শনীয় ব্যাটিংশৈলীর অধিকারী ও মিডিয়াম পেস বোলিং করে থাকেন। কিশোর অবস্থাতেই দর্শনীয়ভাবে ব্যাটিং করতে অভ্যস্ত ছিলেন। মিডিয়াম পেস বোলিংয়েও যথেষ্ট…