৫ জুলাই, ১৯৫৪ তারিখে ক্যান্টারবারির ডারফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। দলে তিনি মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানরূপে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

সকল ধরনের স্ট্রোক খেলায় পারদর্শী ছিলেন। মানসিক দৃঢ়তা ও আপোষহীনতার কারণে সর্বোচ্চ স্তরের ক্রিকেটে সফলতার সন্ধান পেয়েছেন। যে-কোন ধরনের বল মোকাবেলায় ভারসাম্য রক্ষার কৌশল অবলম্বন করতেন। এরফলে শুধু যে নিজ দেশেই সফল ছিলেন তা নয়; বরঞ্চ উপমহাদেশের স্পিনারদের বিপক্ষেও সফলতা পেয়েছেন।

১৯৭৫-৭৬ মৌসুম থেকে ১৯৯২-৯৩ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে অকল্যান্ড, ক্যান্টারবারি ও নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টস এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

খেলা শেষে সাজঘর মাতিয়ে রাখতেন। বিয়ার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কক্ষ ত্যাগ করতেন না। গল্প বলতে ও গল্প শুনতে পছন্দ করতেন। খেলায় তিনি সঠিকভাবে অংশগ্রহণ করতেন। অভিজ্ঞতার ঝুলি থাকায় তুলনামূলকভাবে ভালো খেলতেন। বেশ কয়েকজন ভালোমানের বোলারদের বিপক্ষে খেলে প্রচুর রান পেয়েছেন। আলতো বলকে বেশ সাজা দিতেন। রক্ষণশৈলীতেও তিনি খাঁটিমানের ছিলেন। স্লিপ অঞ্চলে দণ্ডায়মান খাঁটো ফিল্ডারদের মাথার উপর দিয়ে সপাটে বল ফেলে রান তুলতেন।

১৯৭৮ থেকে ১৯৯৩ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ৮২ টেস্ট ও ১৪৯টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে নিজ দেশে জিওফ বয়কটের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। স্টিফেন বুকের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৫৫ ও ১৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ঐ টেস্টে নিউজিল্যান্ড দল প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে পরাভূত করেছিল। ৭২ রানে জয়লাভ করে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৭৮ সালে মার্ক বার্জেসের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সাথে ফিরতি সফরে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড গমন করেন। ১৫ জুলাই, ১৯৭৮ তারিখে স্কারবোরায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওডিআইয়ে অংশ নেন। ২৭ জুলাই, ১৯৭৮ তারিখে লন্ডনের ওভালে একই দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ৫৬ রানে পৌঁছানোকালে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। ৬২ ও ২৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, ডেভিড গাওয়ারের অসাধারণ শতকের বদৌলতে স্বাগতিকরা ৭ উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৭৯-৮০ মৌসুমে নিজ দেশে মুশতাক মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৯ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। খেলায় ২৭ ও ২১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। সফরকারীরা ১২৮ রানে জয় পেয়ে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৮০-৮১ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে জিওফ হাওয়ার্থের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের অন্যতম সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ২৮ নভেম্বর, ১৯৮০ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ১৬ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ২৯ ও ১ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। গ্রায়েম উডের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে সফরকারীরা ১০ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৮০ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দ্বিতীয় ইনিংসে এক বল থেকে ৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তন্মধ্যে, ওভারথ্রোয়ে চার রান পান। খেলায় তিনি ৪ ও ৪৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। রিচার্ড হ্যাডলি’র অনবদ্য বোলিংশৈলী প্রদর্শন স্বত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

একই মৌসুমে নিজ দেশে সুনীল গাভাস্কারের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ১২ মার্চ, ১৯৮১ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ৮৯ রানে পৌঁছানোকালে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। এছাড়াও, টেস্টে নিজস্ব প্রথম শতকের সন্ধান পান। খেলায় তিনি ১১০ ও ৩৩* রান সংগ্রহ করেছিলেন। পাশাপাশি, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তাঁর প্রাণান্তকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। রবি শাস্ত্রী’র সাথে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৮১-৮২ মৌসুমে নিজ দেশে গ্রেগ চ্যাপেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮২ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। প্রথম ইনিংসে ৬৬ মিনিট শূন্য রানে অবস্থান করেছিলেন। খেলার একমাত্র ইনিংসে তিনি ৩৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, ব্রুস এডগারের অনবদ্য ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ১৯ মার্চ, ১৯৮২ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের স্বাক্ষর রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১১০ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ১৩ ও ১৪১ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। প্রতিপক্ষীয় অধিনায়কের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে পরাজিত হলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়।

১৯৮২-৮৩ মৌসুমে নিজ দেশে সোমাচন্দ্র ডি সিলভা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ১১ মার্চ, ১৯৮৩ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ১১ রানে পৌঁছানোকালে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। দলের সংগ্রহ ৩৩/২ থাকাকালে ১০ রান নিয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হন। এরপর, ১৬৩/৮ থাকাকালে পুণরায় মাঠে ফিরে আসেন। একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ১৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিক দল ৬ উইকেটে জয় পেলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। প্রসঙ্গতঃ এটিই নিউজিল্যান্ডের প্রথমবারের মতো উপর্যুপরী দ্বিতীয় টেস্ট জয় ছিল।

১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে জেরেমি কোনি’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে পাকিস্তান গমন করেন। ১৬ নভেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১ ও ৬৫ রান সংগ্রহ করেন। ইকবাল কাশিমের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে সফরকারীরা ৬ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ১০ ডিসেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ১০৭ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে খেলায় তিনি ০/১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সেলিম মালিকের অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও স্বাগতিকরা ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।

একই মৌসুমে প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট খেলেন। জিওফ হাওয়ার্থের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের অন্যতম সদস্যরূপে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ২৯ মার্চ, ১৯৮৫ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৪০ ও ১৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৮৬ সালে জেরেমি কোনি’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২১ আগস্ট, ১৯৮৬ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ১১৯ ও ৭* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে পরাজয়বরণ করে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে নিজ দেশে ভিভ রিচার্ডসের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৭ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। চমৎকার ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। খেলায় তিনি ৭৫ ও ১৩৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসে করা শতকটি নিজ দেশে মন্থরতম ছিল। এ শতকের জন্যে তিনি ৫৮২ মিনিট ব্যয় করেন। এ পর্যায়ে তৃতীয় উইকেটে মার্টিন ক্রো’র (১১৯) সাথে ২৪১ রানের জুটি গড়ে নিউজিল্যান্ডীয় রেকর্ড গড়েন। তাঁর অনবদ্য ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে নিজ দেশে মাইক গ্যাটিংয়ের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৮ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১০৩ ও ৪৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অনবদ্য ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে কিউই দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে প্রথমবারের মতো ভারত সফরে যান। ১২ নভেম্বর, ১৯৮৮ তারিখে ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২২ ও ৫৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৭২ রানে জয় পেলে স্বাগতিকরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ২ ডিসেম্বর, ১৯৮৮ তারিখে হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ৮ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৩৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১৭ ও ৬২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ১০ উইকেটে পরাভূত হলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

১৯৮৯-৯০ মৌসুমে নিজ দেশে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন সফররত ভারতের মুখোমুখি হন। ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে সফররত ভারতের বিপক্ষে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৪০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৩ ও ৭৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ইয়ান স্মিথের অসাধারণ শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্র হলেও স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।

একই মৌসুমে নিজ দেশে অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১৫ মার্চ, ১৯৯০ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ৩৬ ও ১১৭* রান সংগ্রহ করেন। তাঁর অনবদ্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৯ উইকেটে জয় পায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯০-৯১ মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯১ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ২১ ও ১০১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৯১-৯২ মৌসুমে নিজ দেশে গ্রাহাম গুচের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ৩০ জানুয়ারি, ১৯৯২ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত ৫ ও দলীয় সংগ্রহ ১৩/১ থাকাকালে আঘাতের কবলে পড়লে মাঠ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। তবে, দলের সংগ্রহ ৯১/৩ থাকাকালীন পুণরায় মাঠে ফিরে আসেন। খেলায় তিনি ১৫ ও ০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী ছিলেন। প্রতিপক্ষীয় দলনায়কের অসাধারণ শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ১৬৮ রানে জয় পায়।

একই সফরের ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯২ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১১৬ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। অ্যালেক স্টুয়ার্টের অনবদ্য ব্যাটিংশৈলীর সুবাদে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

১৯৯২-৯৩ মৌসুমে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে মার্টিন ক্রো’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা সফরে যান। ২৭ নভেম্বর, ১৯৯২ তারিখে মোরাতুয়ায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ১১ ও ৪২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। রোশন মহানামা’র অসাধারণ শতক সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই মৌসুমে নিজ দেশে অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হন। মার্টিন ক্রো’র অধিনায়কত্বে ঐ সিরিজে মোটামুটি ভালো খেলেন। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে ৩৯ ও ১৪ এবং ওয়েলিংটন টেস্টে ৭২ ও ৪৬* রান সংগ্রহ করেন। এরপর, ১২ মার্চ, ১৯৯৩ তারিখে অকল্যান্ডে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে সর্বশেষ খেলেন। উভয় ইনিংসেই ৩৩ রান করে রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। ঐ টেস্টে তাঁর দল ৫ উইকেটে জয় তুলে নেয় ও সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে ড্র করতে সক্ষম হয়।

টেস্টে ১২টি শতকের সন্ধান পেয়েছেন। কেবলমাত্র একবারই তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শের পরও পরাজিত হয়েছিল তাঁর দল। তাঁর রক্ষণাত্মক কৌশল গ্রহণ প্রতিপক্ষের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ না হলেও যে সব পিচে রান সংগ্রহ করা বেশ দূরূহ সেখানে অবশ্যই কার্যকর ছিল।

ব্রুস এডগারের সাথে ইনিংস উদ্বোধনে নেমে আশাতীত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। দলের সূচনায় তাঁদের ভূমিকা অনেকাংশেই নির্ভরশীল ছিল। প্রথম কিউই ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ৫০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। পরবর্তীতে, ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৪ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিন মার্টিন ক্রো তাঁর সংগৃহীত ৫৩৩৪ রান অতিক্রম করে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন। এছাড়াও, দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এক বল থেকে দৌঁড়ে চার ও ওভারথ্রোতে চার মোট আট রান সংগ্রহের ন্যায় বিরল কৃতিত্বের সাথে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে সফলতার পাশাপাশি কাউন্টি ক্রিকেটেও চমৎকার সময় অতিবাহিত করেছেন।

মাইক হুইটনি লাল-বলের ক্রিকেটে তাঁর প্রতিপক্ষীয় সেরা ক্রিকেটারদের তালিকায় তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর বিক্রয়কর্মের সাথে জড়িত হন। তবে, তেমন সফলতা না পাবার ফলে কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। ২০০০ সালে ভারত দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী কয়েক বছর অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাথে একযোগ কাজ করেন ও টিম ইন্ডিয়ার অগ্রযাত্রায় বিরাট প্রভাব ফেলেন। ২০০৮ সালে শুরু হওয়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগেও যুক্ত ছিলেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের খেলোয়াড় অন্বেষণ কর্মে জড়িত হন।

Similar Posts

  • | | | |

    কৃষ শ্রীকান্ত

    ২১ ডিসেম্বর, ১৯৫৯ তারিখে তামিলনাড়ুর মাদ্রাজে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও প্রশাসক। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকর অফ-ব্রেক বোলিংশৈলী প্রদর্শন করতেন। ভারত ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদ্যুৎ প্রকৌশলী হিসেবে শিক্ষালাভ করেন। চেন্নাইভিত্তিক গুইন্ডির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যয়ন করেছিলেন তিনি। সহজাত প্রকৃতির তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ও অতিদ্রুততার সাথে ভারসাম্য বজায়…

  • |

    একনাথ সোলকার

    ১৮ মার্চ, ১৯৪৮ তারিখে মহারাষ্ট্রের বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে মিডিয়াম কিংবা স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ‘এক্কি’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। বোম্বের ক্রিকেটের ভিত্তি গড়ার ক্ষেত্রে তিনি কল্পনাতীত ভূমিকা রেখেছিলেন। কার্যকর বামহাতি ব্যাটসম্যান হলেও বামহাতে মিডিয়াম-পেস বোলিংয়ের…

  • |

    ব্লেয়ার হার্টল্যান্ড

    ২২ অক্টোবর, ১৯৬৬ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৯০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৮৬-৮৭ মৌসুম থেকে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারির নিয়মিত সদস্যের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তাঁর পিতা ইয়ান হার্টল্যান্ড একই দলের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট…

  • |

    সেনুরান মুতুস্বামী

    ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪ তারিখে ডারবানে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। বামহাতে মাঝারিসারির নিচেরদিকে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘সেন’ ডাকনামে পরিচিতি পেয়েছেন। ডারবানভিত্তিক ক্লিফটনে অধ্যয়ন করেছেন। প্রথম গ্রেড থেকেই উচ্চ সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ লাভ করতে থাকেন। প্রাদেশিক পর্যায়ের অনূর্ধ্ব-১১ থেকে…

  • |

    জো কক্স

    ২৮ জুন, ১৮৮৬ তারিখে নাটালের পিটারমারিৎজবার্গে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯১০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ক্ষীপ্র গতিসম্পন্ন মিডিয়াম-পেস বোলার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। ফিল্ডিংয়ে বেশ দূর্বলতার পরিচয় দেন ও সাধারণমানের নিচেরসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর…

  • | |

    লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইন

    ২১ সেপ্টেম্বর, ১৯০১ তারিখে ত্রিনিদাদের পেটিট ভ্যালি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট কিংবা ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। পেশীবহুল কিন্তু নমনীয়, গুটানো কিন্তু লম্বাটে বাহু নিয়ে পর্যাপ্ত পেস সহযোগে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। তাঁর ব্যাটিং অনেকাংশেই চোখের উপর নির্ভরশীল ছিল।…