Skip to content

বার্নার্ড জুলিয়ান

1 min read

১৩ মার্চ, ১৯৫০ তারিখে ত্রিনিদাদের কেয়ারনাগে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ে সবিশেষ দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। ১৯৭০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

সকল গুণে গুণান্বিত ছিলেন। আগ্রাসী ব্যাটিং, প্রাণবন্তঃ বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের সর্বক্ষেত্রে একাধিপত্য বজায়ে সচেষ্ট ছিলেন। এরফলে, দর্শকদের প্রিয় তারকায় পরিণত হন। ব্যাটিংয়ে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করতেন, পিচের অবস্থা বুঝে সিম কিংবা স্পিন বোলিংয়ে বৈচিত্র্যতা আনয়ণ ও ক্ষিপ্রতা সহযোগে ফিল্ডিং করতেন। তাসত্ত্বেও, দলে নিয়মিতভাবে খেলার সুযোগ লাভ করা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন।

ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম থেকে ১৯৮১-৮২ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন।

১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সময়কালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বমোট ২৪ টেস্ট ও ১২টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালে রোহন কানহাইয়ের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২৬ জুলাই, ১৯৭৩ তারিখে ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। রন হ্যাডলি’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১১ ও ২৩ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/৪৯ ও ০/৩৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ১৫৮ রানে জয় পেলে সফরকারীরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

লর্ডস টেস্টে নিজস্ব প্রথম শতক হাঁকান। ১৪৩ বল থেকে ১২১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এ পর্যায়ে স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে গ্যারি সোবার্সের (১৫০) সাথে বিধ্বংসী জুটি গড়েন। এরপর, ৩/৬৯ পান। একই সফরের ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩ তারিখে লিডসে ওডিআইয়ে প্রথমবারের মতো অংশ নেন।

পরবর্তী গ্রীষ্মে ব্রিজটাউন টেস্টে ৫/৫৭ নিয়ে ইংল্যান্ডের শীর্ষসারিতে ভাঙ্গন ধরান। এর পূর্বের দুই টেস্টে অপরাজিত ৮৬ ও ৬৬ রান তুলেছিলেন। এছাড়াও, ১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরে ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন শিরোপা বিজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন।

১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে নিজ দেশে মুশতাক মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ১৮ মার্চ, ১৯৭৭ তারিখে জর্জটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেন। খেলায় তিনি ১/২৫ ও ০/৬৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ রান সংগ্রহ করে সেলিম আলতাফের বলে বিদেয় নেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

অনিন্দ্যসুন্দর কীর্তির সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। অংশগ্রহণকৃত ২৪ টেস্টের ৩৪ ইনিংস ব্যাটিং করলেও কোনবারই আউট হননি। টেস্টগুলো থেকে ৫০ উইকেট ও দুই শতক সহযোগে ৮৬৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এক পর্যায়ে তাঁকে গ্যারি সোবার্সের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে বিবেচনায় আনা হয়েছিল। প্রথম নয় টেস্ট থেকে ৪৪ গড়ে ৪৩৭ রান ও ২৮ গড়ে ২৬ উইকেট দখল করেছিলেন। কিন্তু, পরবর্তীতে এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি। বাকী পনেরো টেস্ট থেকে ২৪ গড়ে ৪২৯ রান ও ৪৮ গড়ে ২৪ উইকেটের সন্ধান পান। এরফলে, শুরুরদিকের প্রতিশ্রুতিশীলতা আর পূর্ণাঙ্গতা পায়নি।

ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে আট বছর চাকুরী করেন। পরবর্তীতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ হিসেবে মনোনীত হন। পাশাপাশি, ত্রিনিদাদের কোচ হিসেবে নিয়োগ পান। জানুয়ারি, ২০০৫ সালে কণ্ঠনালী ক্যান্সারের চিকিৎসা করান। আগস্ট, ২০০৭ সালে সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নোস ভেলে গ্যারি সোবার্স ও রামনরেশ সারওয়ানকে সাথে নিয়ে ডিজিসেল কোচিং ক্যাম্প পরিচালনায় অগ্রসর হন। ৪ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর ভালসেন এলাকায় ৭৫ বছর ২০৫ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।