১৫ মে, ১৯১৭ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের সিডেনহাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষণে এগিয়ে আসতেন। উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
মারেকভিল পাবলিক স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। দীর্ঘকায় গড়নের অধিকারী ছিলেন। বেশ পরিশ্রমী ছিলেন। ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে মারিকভিল ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট ক্লাবের সদস্যরূপে যোগ দেন। থার্ড গ্রেডের ক্রিকেটে ৩৩ খেলায় অংশ নেন। দুই বছর পর ১৭ বছর বয়সে উদীয়মান তরুণ অবস্থায় সেকেন্ড গ্রেড ও পরবর্তীতে ফার্স্ট গ্রেডের দলে খেলার সুযোগ পান। এরপর থেকেই জীবনের বাদ-বাকী সময় ফার্স্ট গ্রেডে খেলতে থাকেন।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলনী করতেন। ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে পয়ডেভিন-গ্রে দলের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। প্রিমিয়ারশীপে অপরাজিত অবস্থায় দলকে নিয়ে যান। তাঁর উইকেট-রক্ষণের মানও সর্বদাই উচ্চমানসম্পন্ন ছিল। ১৯৩৭-৩৮ মৌসুমে ক্লাবের পক্ষে নিজস্ব প্রথম শতক হাঁকান। কাম্বারল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১০৪ রান তুলেছিলেন। আবারও তাঁর দল প্রতিযোগিতার শিরোপা জয় করে। ৯১.২০ গড়ে ৪৫৬ রান তুলে প্রতিযোগিতার সর্বাধিক রান সংগ্রাহকে পরিণত হন।
১৯৩৯-৪০ মৌসুম থেকে ১৯৫০-৫১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নিউ সাউথ ওয়েলসের নিয়মিত সদস্য হিসেবে খেলতে থাকেন। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে এনএসডব্লিউ’র অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। ৭৭টি প্রথম-শ্রেণীর খেলা থেকে ১৪৬ ক্যাচ ও ৭৫ স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজেকে জড়ান।
১৯৪৮ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সব মিলিয়ে ছয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালে ডন ব্র্যাডম্যানের নেতৃত্বাধীন ‘অপরাজেয়’ দলের সদস্যরূপে নিয়মিত উইকেট-রক্ষক ডন টলনের সহকারী হিসেবে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২২ জুলাই, ১৯৪৮ তারিখে লিডসের হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে তাঁর টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। সিরিজের চতুর্থ টেস্টের পূর্বে ডন টলন আঘাতের কবলে পড়লে খেলার সুযোগ পান। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ রান সংগ্রহসহ তিনটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেন। সফরকারীরা ৭ উইকেটে জয়লাভ করলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
এছাড়াও, ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে লিন্ডসে হ্যাসেটের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। পাঁচ টেস্টে উইকেট-রক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। এ সফরে ২১টি ডিসমিসাল ঘটিয়েছিলেন। তন্মধ্যে, লেগ-স্পিনার কলিন ম্যাককুলের বলে ছয়টি স্ট্যাম্পিং করেছিলেন।
২৪ ডিসেম্বর, ১৯৪৯ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, উইকেটের পিছনে অবস্থান করে তিনটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ইনিংস ও ৮৫ রানে জয়লাভ করলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
একই সফরের ৩ মার্চ, ১৯৫০ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ব্যাট হাতে নিয়ে ৪* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, উইকেটের পিছনে অবস্থান করে দুইটি ক্যাচ ও চারটি স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজেকে জড়ান। সফরকারীরা ইনিংস ও ২৫৯ রানে জয়লাভ করলে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। অংশগ্রহণকৃত টেস্টগুলো থেকে ১৬ ক্যাচ ও ৮টি স্ট্যাম্পিং করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে অধিক টেস্ট খেলায় অংশ নিতে পারেননি।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। তাঁর এক কন্যা পোলিও আক্রান্ত ছিল। ১৭ মার্চ, ১৯৮৭ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের হারবোর্ড এলাকায় ৬৯ বছর ৩০৬ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
