২৮ মে, ১৯২৯ তারিখে ব্রিটিশ গায়ানার জর্জটাউনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। ১৯৫০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
বন্ধুদের কাছে ‘লেস’ নামে পরিচিত ছিলেন। ইনিংস উদ্বোধনে ধৈর্য্যশীল ও নিয়মানুবর্তীতার বিমূর্ত প্রতিমূর্তি ছিলেন। অসম্ভব মনোযোগের অধিকারী হিসেবে উইকেট থেকে খুব সহজে বিদেয় নিতে চাইতেন না। ক্রিকেটপ্রেমী পরিবারের সন্তান। অপর তিন ভ্রাতা প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। তন্মধ্যে, পিটার ইংল্যান্ডে ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত সমারসেটের পক্ষে খেলেন ও ১৯৬৬ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত আম্পায়ারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। জর্জটাউনের সেন্ট স্টানিসলাস কলেজে অধ্যয়ন করেছেন।
১৯৪৯-৫০ মৌসুম থেকে ১৯৫২-৫৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে ব্রিটিশ গায়ানার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৫০ সালে ব্রিজটাউনে বার্বাডোসের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। প্রতিপক্ষীয় বোলার ফ্রাঙ্ক কিংয়ের বলগুলো তাঁর কান বরাবর চলে যেতে থাকে। ১৯৫১ সালে জর্জটাউনে ব্রিটিশ গায়ানার সদস্যরূপে বার্বাডোসের বিপক্ষে ৭০৮ মিনিটে ২৬২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। এ পর্যায়ে গ্লেন্ডন গিবসের (২১৬) সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ৩৯০ রানের জুটি দাঁড় করান। ২০০১ সালে মন্টেগো বে’তে জ্যামাইকার সদস্যরূপে লিওন গারিক (২০০*) ও ক্রিস গেইলের (২০৮*) সংগৃহীত ৪২৫ রানের নিরবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রথম উইকেটে এটি রেকর্ড হিসেবে টিকেছিল। পুরো খেলায় তিনি ফিল্ডিং করেন ও গায়ানা দল ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে নেয়।
১৯৫৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ঐ বছর নিজ দেশে বিজয় হাজারে’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ১১ মার্চ, ১৯৫৩ তারিখে জর্জটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ টেস্টে সফররত ভারতের বিপক্ষে অংশ নেন। রয় মিলারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ইনিংস উদ্বোধনের পরিবর্তে ছয় নম্বরে অপরিচিত অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নামেন। ২১ রান তুললেও প্রথম ডজন রান তুলতে দুই ঘণ্টা ব্যয় করেন। এ পর্যায়ে অবশ্য ক্লাইড ওয়ালকটের (১২৫) সাথে ৭১ রান যুক্ত করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। এরপর আর তাঁকে দলে রাখা হয়নি। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলা থেকে ৬৬.৩১ গড়ে ১২৬০ রান তুলেছিলেন। ঐ টেস্টের পর কানাডায় অভিবাসিত হন। গায়ানা কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজ – কোন দলের পক্ষে খেলেননি। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৯৫৩ সালে বিয়ে করেন ও তাঁর চার পুত্র সন্তান ছিল। কানাডীয় ক্রিকেটে অগণিত শতক হাঁকিয়েছিলেন। মেরুদণ্ডের ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে চিকিৎসক তাঁকে পরামর্শ দেন যেন তিনি আর চলাফেরা না করেন। তবে, চিকিৎসকের পরামর্শকে ভুল প্রমাণিত করে আবারও হাঁটেন এবং মৃত্যুর তিন বছর পূর্বেও খেলেছিলেন। ৪ জানুয়ারি, ২০০৪ তারিখে কানাডার টরন্টোয় ৭৪ বছর ২২১ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
