২৫ অক্টোবর, ১৯৫৫ তারিখে মহারাষ্ট্রের কালুস্তে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও রাজনীতিবিদ। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৮০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৭৮-৭৯ মৌসুম থেকে ১৯৮৫-৮৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বোম্বের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বেশ কয়েক বছর বোম্বে দলের অন্যতম তারকা খেলোয়াড়ের মর্যাদা পান। অশোক মানকড়ের অবসর গ্রহণের পর ও সুনীল গাভাস্কারের অনুপস্থিতিতে বোম্বে দলের শীর্ষ উদ্বোধনী ও দর্শনীয় ব্যাটসম্যান ছিলেন। তন্মধ্যে, অনেকগুলো বছর সুনীল গাভাস্কারের সাথে একত্রে খেলেছেন। ডানহাতে আগ্রাসী ব্যাটিং করতেন। প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নামের প্রথম চারটি আদ্যাক্ষরের অধিকারী। খুব ছোটবেলা থেকেই উন্নতমানসম্পন্ন অসাধারণ ফিল্ডার হিসেবে পরিচিতি পান। সচরাচর কভার অঞ্চলে দণ্ডায়মান থাকলেও মাঝে-মধ্যে মিড-অন অঞ্চলে অবস্থান করতেন। ব্যাটসম্যানের অতিরিক্ত রান সংগ্রহে বাঁধা দিতেন ও নিখুঁত নিশানায় থেকে সরাসরি স্ট্যাম্পে আঘাতের কারণে জনপ্রিয়তা পান। ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে দারুণ ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮২ সালে ভারত দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন।
১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সময়কালে ভারতের পক্ষে একটিমাত্র টেস্ট ও ১০টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮২ সালে সুনীল গাভাস্কারের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২ জুন, ১৯৮২ তারিখে লিডসে স্বাগতিক ইংরেজ দলের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন।
এ সফরেই ব্যক্তিগত একমাত্র টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১০ জুন, ১৯৮২ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কারের সাথে ইনিংসে উদ্বোধনে নেমে ৬ ও ১ রান তুলতে পেরেছিলেন। বব উইলিস এবং ইয়ান বোথামের পেস ও সুইংয়ে হিমশিম খান। ঐ টেস্টে কপিল দেবের অনিন্দ্যসুন্দর অল-ক্রীড়াশৈলী সত্ত্বেও তাঁর দল ৭ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। এ সফরে ৩৬ গড়ে ৪৩৩ রান করেন। তন্মধ্যে, ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১৪৬ ও এমসিসি’র ৯২ বিপক্ষে রান তুলেন। দেশে প্রত্যাবর্তন করে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান একাদশের বিপক্ষে ৭৭ রান করেন।
ওডিআইগুলো থেকে ১৮ গড়ে ১৬৫ রান তুলেছিলেন। তন্মধ্যে, ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে গুয়াহাটিতে সেরা খেলা প্রদর্শনে সচেষ্ট ছিলেন। সফরকারী শক্তিধর ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে দল ১৭৮/৭ তুললেও তিনি ৪২ রান তুলে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন। ৩১ অক্টোবর, ১৯৮৪ তারিখে শিয়ালকোটে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন।
এছাড়াও, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪২.০৯ গড়ে ৪১৬৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, রঞ্জী ট্রফিতে ৪৯.৭৯ গড়ে ৩০৮৭ রান পেয়েছেন। ১৯৮০-৮১ মৌসুমে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেছিলেন। সেমি-ফাইনালে ৫৯ ও ১৪৬ এবং চূড়ান্ত খেলায় ১২১ রান তুলেছিলেন। পরের মৌসুমের রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতায় দারুণ খেলেন। অপরাজিত ১৪৮, ৪০, ১৫৬, ৮৪ ও ৬৮ রান তুলেছিলেন। তন্মধ্যে, ১৯৮১-৮২ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার-ফাইনালে বাংলা দলের বিপক্ষে ১৫৬ রান সংগ্রহকালে সুনীল গাভাস্কারের সাথে ব্যাটিং উদ্বোধন করে ৪২১ রান তুলে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ঐ মৌসুমে ১৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলার পর এ রানের সন্ধান পান। এরপর, সেমি-ফাইনালে ৮৪ ও ৬৮ রানের ইনিংস খেললেও কর্ণাটকের কাছে বোম্বে দল পরাজিত হয়। মৌসুম শেষে ৬২.৪০ গড়ে ৬২৪ রান তুলেন। এর পূর্বেকার মৌসুমে ৪৯.৮১ গড়ে ৭৯৭ রান তুলেছিলেন।
রঞ্জী ট্রফিতে বোম্বে দলের শিরোপা বিজয়ে দৃঢ়চেতা মনোভাবের পরিচয় দেন। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে তাঁর দল শিরোপা লাভে সক্ষম হয়। এরপর থেকে সুনীল গাভাস্কার নিজেকে নিচেরদিকে ব্যাটিংয়ে নিয়ে যান ও তাঁকে ইনিংস উদ্বোধন করার সুযোগ দেন। এ মৌসুমে এক শতক সহযোগে ৫৭.৫৩ গড়ে ৭৪৮ রান পেয়েছিলেন। অবশেষে নয় মৌসুমের বন্ধ্যাত্বের অবসান ঘটিয়ে বোম্বের শিরোপা বিজয়ে দলের অন্যতম সদস্যে পরিণত করেন।
প্রকৃতপক্ষে কখনোই তাঁর খেলার মান পড়তির দিকে ছিল না। ৩০ বছর বয়সে তাঁকে খেলার জগৎ থেকে দূরে সড়ে যেতে হয়। প্রথম দুই মৌসুমের পর তাঁর গড় রান ৩৫-এর নীচে নামেনি। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর, ২০১৪ সালে আম আদমি পার্টিতে যোগ দেন। তাঁর অপর ভ্রাতা জুলফিকার বোম্বে দলের উইকেট-রক্ষক ছিলেন। প্রায়শঃই উভয়ে একত্রে খেলতেন।
