২৭ আগস্ট, ১৯৭৪ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ মাঝারিসারিতে ধ্রুপদীশৈলীর ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে সকল স্তরের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।
পাকিস্তানের ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের মর্যাদা লাভ করেছেন। এক পর্যায়ে তাঁকে পাকিস্তানের টেস্ট ও ওডিআইয়ে সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের অধিকারী হবার মর্যাদার কথা বিবেচনা করা হতো। তবে, খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনায় তা আর হয়ে উঠেনি। তাঁর দাঁড়ি প্রসঙ্গ আসলে অনেকাংশেই ডব্লিউজি গ্রেসের কথা মনে করিয়ে দেয়। রান ক্ষুধায় ডব্লিউজি গ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দর্শনীয় ও কার্যকরী ব্যাটিংকালে ব্যাট উঁচিয়ে রাখা ডন ব্র্যাডম্যানের ন্যায় তিনিও খুব সহজেই অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং করে সকলের সুনাম কুড়িয়েছেন। বিপজ্জ্বনকভাবে বেশ উঁচিয়ে খেলার প্রবণতায় তিনি সবগুলো শটই মোকাবেলায় সক্ষম হতেন। দেরীতে হলেও তাড়াহুড়ো না করে বেশ সুন্দরভাবে খেলতেন। পায়ের কারুকাজে সময় নিতেন। তবে, সেগুলো একবার চলতে শুরু করলে সেরার সাথে নৃত্যরত থাকতো। স্কয়ার ও অফ-সাইডে খেলতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন।
পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার প্রতীকিচিত্রে পরিণত হন। স্বল্পসংখ্যক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর মধ্যে চতুর্থ খ্রিস্টান হিসেবে পাকিস্তানের পক্ষে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ও সন্দেহাতীতভাবে সকলের সেরা ছিলেন। তবে, সেপ্টেম্বর, ২০০৫ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে ইউসুফ ইউহানা থেকে বর্তমান নাম ধারন করেন। এরপর থেকে নিজেকে আরও পরিশীলিত করতে তৎপর হন। পরের বছরও এ ধারা অব্যাহত রেখে স্বীয় প্রতিভা বিকাশে সোচ্চার হন। ব্যাটিংকালে কোচ বব উলমার তাঁকে ফেরারি ও ব্যাটিংবিহীন ট্রাকের সাথে তুলনা করে গেছেন।
দরিদ্র পরিবারে জন্ম। তাঁর পিতা রেলওয়ে স্টেশনে কাজ করতেন ও রেলওয়ে কলোনিতে বসবাস করতেন। স্বীয় ভ্রাতার সাথে টেপ টেনিস বল ও কাঠের দণ্ড দিয়ে খেলতেন। ১২ বছর বয়সে স্থানীয় জিমখানায় খেলায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ লাভ করেন। লাহোরভিত্তিক ফোরম্যান ক্রিস্টিয়ান কলেজে অধ্যয়নকালীন খেলতে শুরু করেন। তবে ১৯৯৪ সালের শুরুতে ২০ বছর বয়সে আকস্মিকভাবে খেলায় অংশ নেয়া থেকে প্রায় বিরত থাকেন। সম্ভবতঃ তিনি নিজেও জানতেন যে ক্রিকেটে বেশ ভালো খেলে থাকেন, তবে কখনো গভীরভাবে চিন্তায় আনতেন না। সর্বদাই সর্বাগ্রে নিশ্চিত আয়ের দিকেই অধিক মনোযোগী হতেন। কখনো যে তিনি দেশের পক্ষে খেলবেন তা ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করেননি। উইজডেনে তাঁর ভাষায় উল্লেখ করা হয় যে, ‘আমি শুধুমাত্র প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট দলের সাথে জড়িত কোন সংস্থায় চাকুরী করতে চেয়েছিলাম ও জীবনধারন করতে চেয়েছি।’
১৯৯০-এর দশকে স্থানীয় খেলায় অংশ নেন ও বিচিত্র শট খেলে সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে উপনীত হন। দর্জির দোকানে কাজ পান। খেলোয়াড়ের স্বল্পতায় পুণরায় স্থানীয় ক্লাবে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ পান। ব্যক্তিগতভাবে বেশ সফল হন। সকলের চেয়েও শতরান বেশী করেছিলেন। এক পর্যায়ে ব্রাডফোর্ড ক্রিকেট লীগে খেলার জন্যে মনোনীত হন ও পরবর্তীতে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেয়ার ক্ষেত্র সৃষ্টি করে দেয়।
১৯৯৬-৯৭ মৌসুম থেকে ২০১১ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে বাহাওয়ালপুর, লাহোর, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স, ওয়াটার ও পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং জারাই তারাকিয়াতি ব্যাংক লিমিটেড ও ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার ও ওয়ারউইকশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, এশিয়া একাদশ ও লাহোর বাদশার পক্ষে খেলেছেন।
নব্বুইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যায়ে তাঁর ধর্ম ও পারিবারিক অবস্থান বিবেচনায় এনে লাহোর দল থেকে প্রত্যাখ্যাত হন। ১৯৯৬ সালে বাহাওয়ালপুরের পক্ষে খেলার সুযোগ পান। কয়েক মাসের মধ্যে লাহোর দল তাঁদের ক্ষুদ্র দৃষ্টিভঙ্গী উপলদ্ধি করে ও ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ জানায়। তবে, দল পরিবর্তনের সুযোগ পাননি। দক্ষিণ আফ্রিকা গমনার্থে পাকিস্তান দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত হন।
১৯৯৮ থেকে ২০১০ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বমোট ৯০ টেস্ট, ২৮৮টি ওডিআই ও তিনটিমাত্র টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে আমির সোহেলের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেয়ার মাধ্যমে বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। ফজল-ই-আকবরের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এরফলে, ওয়ালিস ম্যাথিয়াস, অন্তাও ডি’সুজা ও অ্যাংলো-পাকিস্তানী ডানকান শার্পের পর চতুর্থ খ্রিস্টান হিসেবে পাকিস্তানের পক্ষে ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান। দুই ইনিংস থেকে তিনি মাত্র ৫ ও ১ রান পেয়েছিলেন। তবে, মুশতাক আহমেদের অসামান্য বোলিংনৈপুণ্যে ঐ খেলায় তাঁর দল ২৯ রানে জয়লাভে সমর্থ হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। এরপর থেকেই পাকিস্তানের পক্ষে অন্যতম সেরা রান সংগ্রাহক হিসেবে নিজের পরিচিতি ঘটাতে সচেষ্ট হন।
জিম্বাবুয়ে দলকে লক্ষ্য করে এগুতে থাকেন। হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআইয়ে প্রথম খেলার সুযোগ পান। ২৮ মার্চ, ১৯৯৮ তারিখে অভিষেক ঘটা ঐ ওডিআইয়ে ৫৯ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দেন। ২৩৭ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ উইকেট বাদ রেখেই অর্জিত হয়। ওডিআই ও টেস্টের প্রথম দুইটি ইনিংসে অর্ধ-শতক হাঁকান। ২০০২-০৩ মৌসুমে জিম্বাবুয়ের মাটিতে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ওডিআইগুলোয় ৪০৫ রান তুলে আউটবিহীন অবস্থায় সর্বাধিক রান সংগ্রহের কৃতিত্বের অধিকারী হন। এ পর্যায়ে ২৩ বলে অর্ধ-শতক ও ৬৮ বলে শতক হাঁকিয়েছিলেন। এছাড়াও, ২০০২ ও ২০০৩ সালে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতর সংস্করণ ওডিআইয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। একই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্টে ২৭ বলে অর্ধ-শতরান করেন। বল সংখ্যার দিক দিয়ে এটি চতুর্থ দ্রুততম অর্ধ-শতক ছিল। খুব সহসাই ইনজামাম-উল-হক ও ইউনুস খানের পাশে থেকে পাকিস্তানের মাঝারীসারিতে স্থিরতা আনয়ণে সক্ষম হন ও বিশ্বব্যাপী বোলিং আক্রমণ ঠেকানোর উপযোগী অবস্থানে নিয়ে আসেন।
১০ নভেম্বর, ১৯৯৮ তারিখে প্রথম ওডিআই শতক হাঁকান। নিজস্ব দশম ওডিআইয়ে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১১১ বল মোকাবেলান্তে ১০০ রান তুলেন। তবে, সফরকারীরা ছয় উইকেট হাতে রেখেই ৩১৬ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে সক্ষম হয়। ঐ পর্যায়ে ওডিআইয়ের ইতিহাসে এটিই যৌথভাবে সফলতম রানের লক্ষ্যমাত্রা সফলতার সাথে সমাপণ হয়েছিল।
১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে নিজ দেশে অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের নেতৃত্বাধীন জিম্বাবুয়ীয় দলের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ১০ ডিসেম্বর, ১৯৯৮ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত সফররত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। অপূর্ব ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। ১৩ ডিসেম্বর, ১৯৯৮ তারিখে দলের একমাত্র ইনিংসে নিজস্ব প্রথম টেস্ট শতরানের সন্ধান পান। ১২০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। তবে, খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। এরপূর্বে প্রথম ছয় টেস্ট থেকে চারটি অর্ধ-শতক হাঁকিয়েছিলেন। অবশেষে পঞ্চমটিকে তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে সক্ষম হন।
জুন, ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা দূর্ভাগ্যজনকভাবে শেষ করেন। লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত খেলায় কুঁচকির আঘাতের কারণে অংশ নিতে পারেননি। এর পূর্বে বেশ ছন্দে অবস্থান করছিলেন। চার খেলা থেকে ৫৩.৬৬ গড়ে ১৬১ রান পেয়েছিলেন।
২০০০-০১ মৌসুমে মঈন খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের অন্যতম সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ৮ মার্চ, ২০০১ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৫১ ও ৪২ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, মোহাম্মদ সামি’র অসামান্য বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ২৯৯ রানে জয় পেয়ে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
একই সফরের ১৫ মার্চ, ২০০১ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। কয়েকটি ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১২৪ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে ১৭১ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ২০৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, ম্যাথু সিনক্লেয়ারের অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা এগিয়ে যায়।
২৬ ডিসেম্বর, ২০০৪ তারিখে বক্সিং ডে টেস্টে শতক হাঁকান। মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে প্রথম দিনে ১৩৪ বল মোকাবেলান্তে ১১১ রান তুলেছিলেন।
২০০৫-০৬ মৌসুমে নিজ দেশে মাইকেল ভনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ২৯ নভেম্বর, ২০০৫ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। একমাত্র ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২২৩ রান তুলে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। তাঁর এ দ্বি-শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ১০০ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে রাবার হারায়। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। তবে, ঐ বছর তাঁর ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সংবাদের ছড়িয়ে পড়ে।
এপ্রিল, ২০০৬ সালে নিবন্ধন জটিলতার কারণে ডার্বিশায়ারের প্রতিনিধিত্ব না করার কথা ঘোষণা করেন। জ্যাক রুডল্ফের পরিবর্তে সাময়িকভাবে খেলার জন্যে তাঁকে মনোনীত করা হয়েছিল। কিন্তু, ইসিবি’র শর্তাবলীতে উল্লেখ রয়েছে যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের পরিবর্তেই সাময়িকভাবে অতিরিক্ত খেলোয়াড়কে নেয়া যাবে, আঘাতপ্রাপ্ত খেলোয়াড়ের পরিবর্তে নয়।
২০০৬ সালে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন ও বছরটি নিজের করে নিয়েছিলেন। এছাড়াও, বিখ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার ভিভ রিচার্ডসের গড়া দুইটি বিশ্বরেকর্ড ভঙ্গ করেছিলেন। জুলাই, ২০০৬ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। তিনটি অসাধারণ ইনিংস উপহার দেন। ২৮ আগস্ট, ২০০৬ তারিখে ব্রিস্টলে প্রথমবারের মতো টি২০আইয়ে অংশ নেন।
প্রথম টেস্টে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ২০২ রানের ইনিংস খেলে লর্ডসের মাটিতে ইতিহাস গড়েন। দ্বিতীয় পাকিস্তানী ব্যাটসম্যান হিসেবে সাত ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে দ্বি-শতক হাঁকান। ৩৩০ বল মোকাবেলান্তে ২৬টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়ে এ সফলতা পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬২ বল খেলে ৪৮ রান তুলেন। টেস্টটি ড্রয়ে পরিণত হলেও ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেছিলেন। দূর্দান্ত ইনিংসের কল্যাণে লর্ডস অনার্স বোর্ডে স্বীয় নামকে স্মরণীয় করে রাখেন। এছাড়াও, হেডিংলিতে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ১৯২ ও ওভালে চূড়ান্ত টেস্টে ১২৮ রান তুলেছিলেন। পূর্ববর্তী বছরে লাহোরে একই দলের বিপক্ষে দ্বি-শতক হাঁকিয়েছিলেন। তন্মধ্যে, হেডিংলি টেস্টে ইউনুস খানের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৩৬৩ রানের জুটি গড়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যে-কোন উইকেটে পঞ্চম সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন। এ পর্যায়ে হেডিংলিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি গড়েন। সর্বোপরী দল পরাজয়ের কবলে পড়ে। এছাড়াও, ওভালে আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ার পাকিস্তান দলকে বলে আঁচড়ের সাথে অভিযুক্ত করলে খেলতে অস্বীকৃতিজ্ঞাপনের কারণে প্রতিপক্ষকে জয়ী ঘোষণা করে। এ টেস্টে তিনি ২৩৬ বল মোকাবেলান্তে ১৮ বাউন্ডারি সহযোগে ১২৮ রান তুলেছিলেন। ৯০.৩১ গড়ে ৬৩১ রান তুলে পাকিস্তান-ইংল্যান্ডের মধ্যকার দ্বি-পক্ষীয় সিরিজে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। তাসত্ত্বেও ইংল্যান্ড দল ৩-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়ী হয়।
সিরিজ শেষে উইজডেনে মন্তব্য করা হয় যে, ‘গ্রীষ্মের সেরা ক্রিকেট খেলেছেন মোহাম্মদ ইউসুফ ও ইউনুস খান। দাড়ি নিয়ে ধৈর্য্যশীল, শক্তিমত্তা প্রদর্শন ও দৃষ্টিনন্দন ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ধর্মভীরু মুসলিম হবার পর নতুন নাম নিয়ে ৮১ গড়ে রান পেয়েছেন; তুলনান্তে ইউসুফ ইউহানা নাম নিয়ে ৪৭ গড়ে রান তুলেছিলেন।’
২০০৬-০৭ মৌসুমে নিজ দেশে ব্রায়ান লারা’র নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। এ সিরিজে অসাধারণ খেলোয়াড়ে পরিণত করেন। লাহোরে ১৯২, মুলতানে ১৯১ এবং করাচীতে ১০২ ও ১২৪ রান তুলেছিলেন। তন্মধ্যে, চূড়ান্ত টেস্টের তৃতীয় ইনিংসে ব্যাটিংকালীন এক পঞ্জিকাবর্ষে ভিভ রিচার্ডসের সংগৃহীত ৩০ বছরের পুরনো সর্বাধিক ১৭১০ রান সংগ্রহের রেকর্ডকে অতিক্রমণ করেন। এরফলে, ১৯৯ রানে জয় পেয়ে সিরিজ বিজয় নিশ্চিত করে পাকিস্তান দল।
২৭ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ১০২ ও ১২৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ জোড়া শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ১৯৯ রানে জয় পেয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও, এ সিরিজে ৬৬৫ রান সংগ্রহ করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান।
১১ টেস্ট থেকে ব্র্যাডম্যানসুলভ ৯৯.৩৩ গড়ে ১৭৮৮ রান তুলেছিলেন। নভেম্বর, ২০০৫ সাল থেকে নভেম্বর, ২০০৬ সালের মধ্যে অংশগ্রহণকৃত ১৪ টেস্টে ৯২.০০ গড়ে রান পেয়েছিলেন। এছাড়াও, এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বাধিক নয়টি টেস্ট শতক হাঁকিয়ে পূর্বেকার সাত শতক সংগ্রহের রেকর্ড ভঙ্গ করে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েন। ঐ বছরের নভেম্বর মাসে ৯৩৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে দশম সর্বোচ্চ পয়েন্ট পান। ব্যক্তিগত সেরা হিসেবে রিকি পন্টিংয়ের পর বিশ্বের ২ নম্বর অবস্থানে চলে আসেন।
মার্চ, ২০০৭ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন। এছাড়াও, একই সালে আইসিসি কর্তৃক বর্ষসেরা টেস্ট খেলোয়াড়ের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। মাত্র ৬ টেস্টের ১০ ইনিংস থেকে ৯৪.৪০ গড়ে ৯৪৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এ পর্যায়ে সাত শতক ও দুইটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন।
২০০৬-০৭ মৌসুমে ইনজামাম-উল-হকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৬ জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ৪৮ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৬৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৮৩ ও ১৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। জ্যাক ক্যালিসের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যে সফরকারীরা ৫ উইকেটে পরাজয়বরণ করলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।
জানুয়ারি, ২০০৭ সালে স্বীয় সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে, সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। আইসিসি বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরে পাকিস্তান দল থেকে বাদ পড়েন। কয়েকবার পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সাথে মনোমালিন্য ঘটার পর আগস্ট, ২০০৭ সালে অনুমোদনবিহীন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লীগে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। লাহোর বাদশার পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। এরফলে, পাকিস্তানে অপাঙ্তেয় হন। সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হয়। আইসিএল ত্যাগ করে পাকিস্তানের পক্ষে খেলার সুবাদে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে চুক্তিতে আবদ্ধ হবার প্রস্তাবনা পান। অক্টোবর, ২০০৭ সালে জাতীয় দলের খসড়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে অংশ নেননি ও পাকিস্তান দল পরাজিত হয়। পরবর্তীতে তিনি মন্তব্য করেন যে, ‘গত দুই মাস আমি কোন অনুশীলন করিনি। ফলে, প্রথম টেস্টে অংশ না নেয়ার বিষয়ে দল নির্বাচকমণ্ডলীকে অবগত করেছি। আমি আঘাতগ্রস্ত নই, তবে, আমি খেলার উপযোগী অবস্থায় নেই।’ দ্বিতীয় ওডিআইয়ে শতক হাঁকিয়ে পাকিস্তানকে সিরিজে সমতায় আনেন।
২০০৮ সালেও প্রতিযোগিতার মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান দল থেকে বাদ পড়ার হুমকি পান। তবে, পরের বছর আইসিএলে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দেরকে পাকিস্তান আদালত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে। অনেক আলাপ-আলোচনার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়। জুলাই, ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা গমনার্থে পাকিস্তানের টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন করেন। এ পর্যায়ে আইসিএলের সাথে পুরোপুরি সম্পর্কচ্ছেদ ঘটান। গলেতে প্রথম টেস্টে শতক হাঁকানোর পর তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে ৯০ রান তুলেন। তাসত্ত্বেও, পাকিস্তানের ২-০ ব্যবধানে পরাজয় রোধ করতে পারেননি। অল্প কিছুদিন পরই দল পরিচালনার দায়িত্ব পান।
২০০৯ সালে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সফরে পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়। মার্চ, ২০১০ সালে দল থেকে বাদ পড়েন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ড্র করার পর অস্ট্রেলিয়া সফরে ধবল ধোলাই হয় তাঁর দল। অস্ট্রেলিয়ায় দলের শোচনীয় ফলাফলের কারণে সকল স্তরের ক্রিকেটের বাইরে রাখা হয়। এ সফরে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে কোন খেলায় জয়ের সন্ধান পায়নি ও বিতর্কিত রানের সাথে জড়িত ছিলেন। তিন টেস্ট, পাঁচটি ওডিআই ও একমাত্র টি২০আইয়ে নিয়ে গড়া সফরের নয়টি খেলার সবকটিতেই তাঁর দল পরাজিত হয়েছিল। বয়সের ভারে ন্যূহ, বোর্ডের সাথে মতবিরোধ, আইসিএলে সম্পৃক্ততা ও দূর্বল অধিনায়কত্বের প্রশ্নবানে জর্জড়িত হন। ১০ মার্চ, ২০১০ তারিখে অস্ট্রেলিয়ায় দলের শোচনীয় ফলাফলে ইউনুস খানকে সাথে নিয়ে দলের জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়দের সাথে দূর্ব্যবহারের কারণে সাতজন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে পিসিবি থেকে আজীবন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন।
এর প্রতিবাদস্বরূপ মার্চের শেষদিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী সময়ে মন্তব্য করেন যে, ‘পিসিবি থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। তাতে আমার উপস্থিতি দলের জন্যে ক্ষতিকর হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাই আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করছি। বিশ্বব্যাপী সমর্থক, সকল জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড় ও পারিবারিক সদস্যরা ১২ বছরব্যাপী খেলোয়াড়ী জীবনে সমর্থন করায় ধন্যবাদ জানাই। আমি সর্বদাই আমার দেশের জন্যে খেলেছি ও যদি আমার খেলার কারণে দলের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে আমি আর খেলতে চাই না।’
অবশ্য, আগস্ট, ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরের পূর্বে ইউনুস খানসহ তাঁর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছিল। এ সফরের পূর্বে অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করলেও সমসাময়িক প্রথিতযশা ব্যাটসম্যানদের অন্যতম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। টেস্ট ও ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার পর পুণরায় বাদ পড়েন।
২০১০ সালে সালমান বাটের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ১ আগস্ট, ২০১০ তারিখে নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে পরাজিত হলেও বাদ-বাকী টেস্টে অংশ নিয়ে অবসরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। তৃতীয় টেস্টে ৫৬ রান করেছিলেন।
এরপর, একই সফরের ২৬ আগস্ট, ২০১০ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। ০ ও ১০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, স্টুয়ার্ট ব্রডের অসামান্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ২২৫ রানে জয় পেয়ে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। এছাড়াও, একই সফরে টি২০ খেলায় অংশ নেন। অক্টোবর, ২০১০ সালে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ওডিআইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ খেলে মাত্র তিন রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন।
বোর্ডের পরামর্শমাফিক ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিয়ে পুণরায় দলে ফেরার চেষ্টা চালান। কিন্তু, জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে ঘরোয়া ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের ন্যায় পূর্বশর্ত প্রতিপালন সত্ত্বেও নভেম্বর, ২০১২ সালে প্রেসিডেন্টস ট্রফি প্রথম-শ্রেণীর প্রতিযোগিতায় তাঁকে রাখা হয়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন যে, ‘আমি বোর্ডের দৃষ্টিভঙ্গী বুঝতে পারছি না। একদিকে দল নির্বাচকমণ্ডলী আমাকে ঘরোয়া ক্রিকেটে ছন্দ ফিরিয়ে আনাসহ শারীরিক সুস্থতার কথা বলছেন; অপরদিকে, বোর্ড আমাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ছাড়পত্র দেয়নি।’
তবে, মে, ২০১৩ সালে কয়েকটি গণমাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তাঁর অবসর গ্রহণের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে, তিনি তা অস্বীকার করেন ও মন্তব্য করেন যে, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর গ্রহণ করেননি। দল নির্বাচকমণ্ডলী তাঁকে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিবেচনায় আনেননি ও তিনি আর এখন নিয়মিতভাবে ক্রিকেট খেলায় অংশ নেয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না। দূর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁকে আর দলে ফিরিয়ে আনা হয়নি। এরপর থেকে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর নজরের বাইরে চলে যান। কয়েকটি পাকিস্তানী চ্যানেলে ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপিত করে চলেছেন। ২০২০ সালে লাহোরভিত্তিক ন্যাশনাল হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন।
ওডিআইগুলো থেকে ৪১.৭১ গড়ে ৯৭২০ রান তুলে ইনজামাম-উল-হকের পর পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রাহক হন। ১৫টি শতক ও ৬৪টি অর্ধ-শতক রয়েছে তাঁর। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেছেন অপরাজিত ১৪১ রান। এছাড়াও, টেস্টে ৫২.২৯ গড়ে ৭৫৩০ রান তুলে ইউনুস খান, জাভেদ মিয়াঁদাদ ও ইনজামাম-উল-হকের পর পাকিস্তানের সর্বকালের রান সংগ্রাহকের তালিকায় নিজেকে চতুর্থ স্থানে তুলে রেখেছেন। এ পর্যায়ে ২৪টি শতরান ও ৩৩টি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেছেন। তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সর্বাধিক রান সংগ্রহের পাকিস্তানী রেকর্ড গড়েন। উপর্যুপরী ছয়টি টেস্ট শতক হাঁকানোর রেকর্ডের অধিকারী তিনি। এছাড়াও, প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনবার ১৯০ রানের কোটায় বিদেয় নিয়ে রেকর্ড গড়েন।