Skip to content

১৬ অক্টোবর, ১৯৭৫ তারিখে কেপ প্রভিন্সের পাইনল্যান্ডস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নেয়াসহ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

৬ ফুট (১.৮৩ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। হেনরি ক্যালিস ও মার্সিয়া ক্যালিস দম্পতির সন্তান ছিলেন। ওয়েনবার্গ বয়েজ হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন। সেখানেই তিনি ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। নর্দার্ন ইংল্যান্ডে সেরা অল-রাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে নেদারফিল্ড সিসি’র পক্ষে খেলেন। ১৪ খেলায় অংশ নিয়ে ৯৮.৮৭ গড়ে ৭৯১ রান তুলেছিলেন।

নিজের সময়কালে সর্বাপেক্ষা পূর্ণাঙ্গ অল-রাউন্ডার হিসেবে চিত্রিত হন। তাঁর ন্যায় অন্য কোন খেলোয়াড় সকল স্তরের ক্রিকেটে দেড় দশক ধরে ক্রমাগত ব্যাট ও বল হাতে ক্রমাগত সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। শুরুতে ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ব্রায়ান ম্যাকমিলান ও ল্যান্স ক্লুজনারের ন্যায় অল-রাউন্ডার দলে আসা-যাবার থাকলেও তিনি নির্ভরযোগ্যতার প্রতীক হিসেবে দীর্ঘদিন ব্যাট ও বল হাতে সেবা দিয়ে গেছেন। কভার ড্রাইভ ও স্কয়ার লেগ অঞ্চল বল ঠেলে দিতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। খেলাগুলোয় বেশ উঁচুমানের গড়ে রান পেয়েছেন। ২০০৮ সালে রান খরায় ভুগলেও প্রতি খেলা থেকে কমপক্ষে একটি উইকেট পেতেন।

১৯৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ২০১৩-১৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন ও মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, আফ্রিকা একাদশ, আইসিসি বিশ্ব একাদশ, কেপ কোবরাস, কলকাতা নাইট রাইডার্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর, সিডনি থান্ডার, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো রেড স্টিল এবং ওয়ারিয়র্সের পক্ষে খেলেছেন।

১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ১৬৬ টেস্ট, ৩২৮টি ওডিআই ও ২৫টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে নিজ দেশে মাইক অ্যাথার্টনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৯৫ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত ও মন্দালোকের কারণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। একই সফরের ৯ জানুয়ারি, ১৯৯৬ তারিখে কেপটাউনে প্রথমবারের মতো ওডিআইয়ে অংশ নেন।

ডিসেম্বর, ১৯৯৫ থেকে জানুয়ারি, ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সময়কালে খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুটা বেশ ধীরলয়ে শুরু করেন। ১৯৯৭ সালে প্রথমবারের মতো বড় ধরনের ইনিংস খেলতে অগ্রসর হন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬১ রান তুলেন। সব মিলিয়ে ৪৫টি টেস্ট শতরানের ইনিংস খেলেন। তন্মধ্যে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচটি শতক হাঁকিয়েছিলেন। ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৮টি টেস্টে অংশ নিয়ে ৪০.৩৬ গড়ে ১৯৭৮ রান তুলেন। ডিসেম্বর, ১৯৯৭ সালে প্রথম টেস্ট শতক হাঁকান। ফলো-অনের কবলে পড়া দলের বিপর্যয় রোধে অগ্রসর হন। ২০১২ সালে ব্রিসবেন টেস্টে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ১৪৭ রান তুলে খেলাকে রক্ষা করেন। এক পর্যায়ে প্রোটীয়রা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জয় পায় ও তিনি আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানে চলে আসেন।

১৯৯৮ থেকে ২০০২ সময়কালে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় অল-রাউন্ডার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ১৬ জানুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে নিজস্ব প্রথম ওডিআই শতরান করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১৯৯৮ সালে নক-আউট ট্রফিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫/৩০ পান ও দলের শিরোপা বিজয়ে অংশ নেন। দুইবার ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভসহ প্লেয়ার অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান। খুব শীঘ্রই সকল স্তরের ক্রিকেটে শীর্ষ খেলোয়াড়ে পরিণত হন। টেস্টে উপর্যুপরী পাঁচ শতক হাঁকানো খেলোয়াড়দের শীর্ষ তালিকায় ঠাঁই করে নেন। ক্রমাগত আইসিসি বিশ্ব একাদশে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। পাতানো খেলায় মুখরিত সময়কালে ও নিজ দেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে দলের শোচনীয় ফলাফলেও তিনি দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পেয়েছিলেন। শন পোলক ও গ্রায়েম স্মিথের অবসর গ্রহণের পর দলের শূন্যতা পূরণে অগ্রসর হয়েছিলেন।

১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ১৯ মার্চ, ১৯৯৮ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টের তৃতীয় দিন ড্যারিল কালিনানের সাথে ১১৬ রানের জুটি গড়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩য় উইকেটে নতুন রেকর্ড গড়েন। খেলায় তিনি ৩ ও ৪৯ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হন। তবে, খেলার চতুর্থ দিন ২৬৪ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা দল তাদের সর্বনিম্ন রানের নজির গড়ে। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/২৩ ও ১/৪৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। শন পোলকের অপূর্ব অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৭০ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ২৭ মার্চ, ১৯৯৮ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্ট অংশ নেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টের তৃতীয় দিন কমপক্ষে দুইবার ব্যাট হাতে জীবন ফিরে পান। ব্যক্তিগত ৪ রানে মিড-অন অঞ্চলে দণ্ডায়মান ডিএনটি জয়সা ও ৬ রানে স্কয়ার-লেগ অঞ্চলে দণ্ডায়মান পিএ ডি সিলভা’র মুঠো থেকে বল ফস্কে পড়ে যায়। খেলায় তিনি ১২ ও ০* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৪২ ও ০/১২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, অ্যালান ডোনাল্ডের অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্যে স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে জয়লাভ করলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।

১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে হ্যান্সি ক্রোনিয়ে’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ১১ মার্চ, ১৯৯৯ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১৩২ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৮* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/২১ ও ০/১৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। হার্শেল গিবসের অসাধারণ দ্বি-শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ১৮ মার্চ, ১৯৯৯ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। দ্বিতীয় ইনিংসে ১ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১৭ ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ১/৪৪ ও ০/৫০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করানোসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, স্টিভ এলোয়ার্দি’র অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৮ উইকেটে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।

১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে নিজ দেশে আলিস্টার ক্যাম্পবেলের নেতৃত্বাধীন জিম্বাবুয়ীয় দলের মুখোমুখি হন। ২৯ অক্টোবর, ১৯৯৯ তারিখে ব্লোমফন্তেইনের গুডইয়ার পার্কে অনুষ্ঠিত সফররত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে টিআর গ্রিপারের তৃতীয় উইকেট লাভ করে ৫০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি বল হাতে নিয়ে ৩/৪৪ ও ৪/৬৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, দলের একমাত্র ইনিংসে ৬৪ রান সংগ্রহ করেন। তাঁর অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৩ রানে জয়লাভ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

একই মৌসুমে প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে হান্সি ক্রোনিয়ে’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ভারত গমন করেন। পুরো সিরিজে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০০০ তারিখে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়েতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্ট খেলেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৫ ও ৩৬* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ৩/৩০ ও ০/২১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক শচীন তেন্ডুলকরের অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও সফরকারীরা ৪ উইকেটে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ২ মার্চ, ২০০০ তারিখে বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্ট খেলেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ৯৫ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/১৮ ও ১/১০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। নিকি বোয়ে’র অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ৭১ রানে জয় পেলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। এ সিরিজে ১৩৬ রান সংগ্রহসহ ৫ উইকেট দখল করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

২০০০-০১ মৌসুমে নিজ দেশে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১৭ নভেম্বর, ২০০০ তারিখে ব্লুমফন্তেইনে সফররত নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ১৪৯ রানে পৌঁছানোকালে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ১৬০ ও ১৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৩০ ও ১/৮৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। পাশাপাশি, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। মাখায়া এনটিনি’র অসাধারণ ক্রীড়াশৈলীর সাথে তাঁর দূর্দান্ত অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে স্বাগতিকরা ৫ উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। মাখায়া এনটিনি’র সাথে খেলায় তিনি যৌথভাবে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

একই সফরের ৩০ নভেম্বর, ২০০০ তারিখে জিকিবার্হায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি হন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। দ্বিতীয় ইনিংসে টেস্টে ৯ রানে পৌঁছানোকালে ব্যক্তিগত ২৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ১২ ও ২৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৪৪ ও ০/১৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, নীল ম্যাকেঞ্জি’র অসামান্য ব্যাটিং দৃঢ়তায় সফরকারীরা ৭ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

২০০১-০২ মৌসুমে শন পোলকের নেতৃত্বে স্প্রিংবকের অন্যতম সদস্যরূপে জিম্বাবুয়ে গমন করেন। ৭ সেপ্টেম্বর, ২০০১ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ৪৮ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৩০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এ পর্যায়ে ঘটনাবহুল এ টেস্টের প্রথম দিন গ্যারি কার্স্টেনকে সাথে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ১৯৯ রান তুলে দ্বি-পক্ষীয় রেকর্ড গড়েন। এরপর, দ্বিতীয় দিন নীল ম্যাকেঞ্জিকে সাথে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ১২৭ রান তুলে দ্বি-পক্ষীয় রেকর্ড গড়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দলের সর্বোচ্চ ৬০০/৩ রান তুলেন। খেলায় তিনি ১৫৭* ও ৪২* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/৩৯ ও ১/৫২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের বীরোচিত ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও স্বাগতিকরা ৯ উইকেটে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই মৌসুমে নিজ দেশে স্টিভ ওয়াহ’র নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০০২ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টে সেকেন্ড স্লিপ অঞ্চলে দণ্ডায়মান থেকে মাখায়া এনটিনি’র বলে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৭/০ থাকাকালে ম্যাথু হেইডনকে (১২২) শূন্য রানে বিদেয় করতে ব্যর্থ হন। খেলায় তিনি ২/১১৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৩ ও ৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। অ্যাডাম গিলক্রিস্টের অসাধারণ দ্বি-শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৩৬০ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

২০০২-০৩ মৌসুমে নিজ দেশে খালেদ মাসুদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের মুখোমুখি হন। ১৮ অক্টোবর, ২০০২ তারিখে ইস্ট লন্ডনে অনুষ্ঠিত সফররত বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ২৯ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৪০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ৭৫* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/২৬ ও ০/২২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। গ্রায়েম স্মিথের অনবদ্য দ্বি-শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১০৭ রানে জয় পেলে সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই মৌসুমে নিজ দেশে সনথ জয়সুরিয়া’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। পুরো সিরিজে অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ৮ নভেম্বর, ২০০২ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত খেলেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ৭৫ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, ৩/৩৫ ও ০/৪০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করানোসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৬৪ রানে জয় পেলে সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

একই সফরের ১৫ নভেম্বর, ২০০২ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। বল হাতে নিয়ে ৩/৭১ ও ৪/৩৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ৮৪ ও ৬ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, শন পোলকের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৩ উইকেটে জয় পেলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। ১৬৫ রান সংগ্রহসহ ১০ উইকেট দখল করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

২০০৩ সালে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২১ আগস্ট, ২০০৩ তারিখে লিডসের হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৬/৬৭। খেলায় তিনি বল হাতে নিয়ে ৩/৩৮ ও ৬/৫৪ পান। এছাড়াও, ৬ ও ৪১ রান সংগ্রহ করেন। গ্যারি কার্স্টেনের অনবদ্য ব্যাটিং নৈপুণ্যে সফরকারীরা ১৯১ রানে জয় পেলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

২০০৩-০৪ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ১০ মার্চ, ২০০৪ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। প্রথম ইনিংসে ১৪ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৯২ ও ১৫০* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৩/৭১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

২০০৪-০৫ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের অন্যতম সদস্যরূপে ভারত সফরে যান। ২০ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে কানপুরে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৩৩ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৬০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৩৭ ও ২৮* রান সংগ্রহ করেন। অ্যান্ড্রু হলের অসাধারণ অল-রাউন্ড কৃতিত্বে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ২৮ নভেম্বর, ২০০৪ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১২১ ও ৫৫ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, হরভজন সিংয়ের অসাধারণ বোলিংয়ের সুবাদে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

২০০৪-০৫ মৌসুমে নিজ দেশে মাইকেল ভনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ২৬ ডিসেম্বর, ২০০৪ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। খেলায় তিনি ১৬২ ও ১০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/১০ ও ১/৫৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং সাফল্যসহ মন্দালোকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

২০০৫-০৬ মৌসুমে নিজ দেশে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ২৭ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৬০ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৮০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৭১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৪৫ ও ১/৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করানোসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। প্রতিপক্ষীয় অধিনায়কের অসাধারণ দ্বি-শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

২০০৬-০৭ মৌসুমে নিজ দেশে ইনজামাম-উল-হকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ২৬ জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ৪/৪২ ও ২/৩৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ২৮ ও ৫১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৩ উইকেটে পরাজয়বরণ করলে স্বাগতিকরা ২-১ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। পাশাপাশি, ২৭২ রান সংগ্রহসহ ১০ উইকেট দখল করে তিনি ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান।

২০০৭-০৮ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ আফ্রিকান দলের অন্যতম সদস্যরূপে পাকিস্তান গমন করেন। পুরো সিরিজে অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ১ অক্টোবর, ২০০৭ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। জোড়া শতক হাঁকান। ১৫৫ ও ১০০* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ১/২১ ও ০/৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ১৬০ রানে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

এরপর, একই সফরের ৮ অক্টোবর, ২০০৭ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। এ টেস্টেও দারুণ খেলেন। ৫৯ ও ১০৭* রান সংগ্রহ করেছিলেন। পাশাপাশি, ১/৭ ও ১/৪৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অসামান্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা সিরিজ জয় করে নেয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। এছাড়াও, এ সিরিজে ৪২১ রান সংগ্রহসহ ৩ উইকেট দখল করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

একই মৌসুমে নিজ দেশে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ৮ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১২০ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৯০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ব্যাট হাতে ২৯ ও ১৮৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ২/১১ ও ১/১৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করানোসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, ডেল স্টেইনের দূর্দান্ত বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৩৫৮ রানে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ১৬ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ পূর্বতন ১৩১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৩৫ ও ১/১৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। পাশাপাশি, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, ডেল স্টেইনের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে ঐ খেলায় স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৫৯ রানের ব্যবধানে জয়লাভ করলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

২০০৮-০৯ মৌসুমে নিজ দেশে রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১৯ মার্চ, ২০০৯ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে দলের একমাত্র ইনিংসে ১০২ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৩১ ও ০/২১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, পল হ্যারিসের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ২০ রানে জয়লাভ করলে সফরকারীরা ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।

২০১০-১১ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। পুরো সিরিজে অপূর্ব ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। ২০ নভেম্বর, ২০১০ তারিখে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ১০৫ ও ১০ রান সংগ্রহ করেন। ১/৭৭ ও ০/১৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করানোসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, এবি ডি ভিলিয়ার্সের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় শেষ হয়। এ সিরিজে ৩২৩ রান ও এক উইকেট দখল করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

২০১১-১২ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের অন্যতম সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ৭ মার্চ, ২০১২ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০ ও ১১৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/১২ ও ০/১৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। দলীয় অধিনায়কের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর বদান্যতায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

২০১২-১৩ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের অন্যতম সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ৯ নভেম্বর, ২০১২ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১৪৭ ও ৪৯ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, ০/৩০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের অসাধারণ দ্বি-শতক সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই মৌসুমে নিজ দেশে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ২ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ২০ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১৩০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ৬০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/৩১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ভার্নন ফিল্যান্ডারের বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ২৭ রানে জয়লাভ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

২০১৩-১৪ মৌসুমে নিজ দেশে এমএস ধোনি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৩ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১১৫ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৩৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, ডেল স্টেইনের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয় পায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচিত হয়ে আছেন। টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজেকে শতভাগ উজাড় করে দিয়েছেন। টেস্টের ঊনিশজন শীর্ষ অল-রাউন্ডারের অন্যতম হিসেবে ২০০ উইকেট ও ৩০০০ রানের ন্যায় ‘ডাবল’ লাভের অধিকারী। ২০০৫ সালে আইসিসি বর্ষসেরা টেস্ট খেলোয়াড় ও আইসিসি বর্ষসেরা খেলোয়াড়, ২০০৭ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটার ও ২০১৩ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ২০২০ সালে লিজা স্থলেকর ও জহির আব্বাসের সাথে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ খেলায় অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচ হিসেবে মনোনীত হন। ১৪ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে পুণরায় ব্যাটিং পরামর্শকের দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হন। এরপূর্বে ২১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে শ্রীলঙ্কার টেস্ট সফরকে ঘিরে ইংল্যান্ড দলের ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে মনোনীত হন। ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং কোচ হিসেবে যোগ দেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। জশুয়া নামীয় পুত্র রয়েছে। পিতা হেনরি ক্যান্সারে আক্রান্ত।