Skip to content

৩১ মার্চ, ১৯৮৩ তারিখে নাটালের ডারবানে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম কিংবা ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরিবারে তাঁর জন্ম। গুজরাত থেকে তাঁর পরিবার দক্ষিণ আফ্রিকায় অভিবাসিত হয়। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা আহমেদ আমলা পেশাদার ক্রিকেটার। খেলোয়াড়ী জীবনে ধারাবাহিক ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের মাধ্যমে অগ্রসর হয়েছিলেন। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুম থেকে ২০২০-২১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে কোয়াজুলু-নাটাল এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ার ও এসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, বিশ্ব একাদশ, দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ, বার্বাডোস ট্রাইডেন্টস, ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স, কেপ কোবরাস, ডলফিন্স, খুলনা টাইগার্স, কিংস ইলাভেন পাঞ্জাবের পক্ষে খেলেছেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ারের ৬০৮ নম্বর খেলোয়াড় হিসেবে দলে যুক্ত হন। ২০১০ সালে নটিংহ্যামশায়ারের ক্যাপ লাভ করেন। অক্টোবর, ২০১৯ সালে দুই বছরের চুক্তিতে সারে দলে যোগ দেন।

২০০৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ১২৪ টেস্ট, ১৮১টি ওডিআই ও ৪৪টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ২০০৪-০৫ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ভারত সফরে যান। ২৮ নভেম্বর, ২০০৪ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এ টেস্টে অংশ নেয়ার মাধ্যমে বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। অবশ্য অভিষেক টেস্টে সাধারণমানের ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রেখেছিলেন। খেলায় তিনি ২৪ ও ২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। হরভজন সিংয়ের অসাধারণ বোলিংয়ের সুবাদে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

একই মৌসুমে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে মাইকেল ভনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ২৬ ডিসেম্বর, ২০০৪ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১ ও ০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, জ্যাক ক্যালিসের অসাধারণ ব্যাটিং সাফল্যে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা এগিয়ে যায়।

২০০৫-০৬ মৌসুমে নিজ দেশে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ২৭ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখে কেপটাউনে সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। কয়েকবার ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ২৫ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে টেস্টে নিজস্ব প্রথম শতক হাঁকান। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ০/৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। প্রতিপক্ষীয় অধিনায়কের অসাধারণ দ্বি-শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

২০০৬-০৭ মৌসুমে নিজ দেশে ইনজামাম-উল-হকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ১১ জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। ৭১ ও ৬৪* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর দূর্দান্ত ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৭ উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

২০০৭-০৮ মৌসুমে নিজ দেশে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ৮ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে জোহানেসবার্গে সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১৪৯ রান অতিক্রম করেন। ব্যাট হাতে ১২ ও ১৭৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, ডেল স্টেইনের দূর্দান্ত বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৩৫৮ রানে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ১৬ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১৪৯ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১০৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, ডেল স্টেইনের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে ঐ খেলায় তাঁর দল ইনিংস ও ৫৯ রানের ব্যবধানে পরাজিত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

২০০৮-০৯ মৌসুমে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ১৭ ডিসেম্বর, ২০০৮ তারিখে পার্থে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৪৭ ও ৫৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এবি ডি ভিলিয়ার্সের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে সফরকারীরা ৬ উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

তবে, ওডিআই খেলার জন্যে তাঁকে টেস্ট অভিষেকের পর চার বছর প্রতীক্ষার প্রহর গুণতে হয়েছিল। প্রোটীয়দের সদস্যরূপে মার্চ, ২০০৮ সালে প্রথম ওডিআইয়ে অংশ নেন। ২০০৯-১০ মৌসুমে নিজ দেশে অ্যান্ড্রু স্ট্রসের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ১৬ ডিসেম্বর, ২০০৯ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ২১ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ২৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১৯ ও ১০০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। গ্রায়েম সোয়ানের অসামান্য ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

ঐ মৌসুমে ভারতের বিপক্ষে নিজের সেরা সিরিজ খেলেন। অপরাজিত ২৫৩, ১১৪ ও অপরাজিত ১২৩ রান তুলেন। তন্মধ্যে, শেষের ইনিংসটি ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত হয়। তবে, দলের ইনিংস পরাজয় রুখতে পারেননি। গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের অন্যতম সদস্যরূপে ভারত গমন করেন। পুরো সিরিজে অসাধারণ ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। খেলায় তিনি ১১৪ ও ১২৩* রান সংগ্রহ করেন। তবে, তাঁর জোড়া শতক সত্ত্বেও সফরকারীরা ইনিংস ও ৫৭ রানে পরাজয়বরণ করলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও, এ সিরিজে ৪৯০ রান তুলে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান। সিরিজ শেষে ৪৯০.০০ গড়ে রান পেয়েছেন।

২০১১-১২ মৌসুমে নিজ দেশে মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ৯ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০০ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৪০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি রান ৩ ও ১১২ সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, অভিষেকধারী ভার্নন ফিল্যান্ডারের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের অন্যতম সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ৭ মার্চ, ২০১২ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৬২ ও ২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। দলীয় অধিনায়কের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর বদান্যতায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

জুলাই, ২০১২ সালে ওভাল টেস্টে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩১১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ও একমাত্র ত্রি-শতকধারী হিসেবে এটিই যে-কোন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ সংগ্রহ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। রিকি পন্টিংয়ের পর ২০১৩ সালে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ওডিআই ও টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছিলেন। কেবলমাত্র চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে টেস্টভুক্ত সকল দেশের ওডিআইয়ে শতক হাঁকানোর গৌরব অর্জন করেন। এছাড়াও, ওডিআইয়ে ২০০০, ৩০০০, ৪০০০, ৫০০০, ৬০০০ ও ৭০০০ রানের দ্রুততম রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন।

২০১২-১৩ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের অন্যতম সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ৯ নভেম্বর, ২০১২ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ৫৪ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১০৪ ও ৩৮ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে জ্যাক সিডলের শিকারে পরিণত হন। এছাড়াও, ০/৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের অসাধারণ দ্বি-শতক সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ৩০ নভেম্বর, ২০১২ তারিখে পার্থে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। খেলায় তিনি ১১ ও ১৯৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অনবদ্য ব্যাটিং সাফল্যে সফরকারীরা ৩০৯ রানে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

একই মৌসুমে নিজ দেশে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১১ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১১০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ডেল স্টেইনের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ১৯৩ রানে পরাজিত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

২০১৩-১৪ মৌসুমে নিজ দেশে মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৬০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ১৭ ও ৩৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। মিচেল জনসনের অনবদ্য বোলিং কৃতিত্বে স্বাগতিকরা ২৮১ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

২০১৪ সালে স্প্রিংবকের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ২৪ জুলাই, ২০১৪ তারিখে কলম্বোর এসএসসিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত খেলেছিলেন। ঐ টেস্টে ১৩৯ ও ২৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, মাহেলা জয়াবর্ধনে’র অসাধারণ শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।

একই বছর প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ের মাটিতে টেস্ট খেলেন। স্প্রিংবককে নেতৃত্ব দিয়ে জিম্বাবুয়ের গমন করেন। ৯ আগস্ট, ২০১৪ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। অভিষেক ঘটা ডেন পাইতের বোলিং কল্যাণে সফরকারীরা ৯ উইকেটে জয় পায়।

২০১৪-১৫ মৌসুমে নিজ দেশে দিনেশ রামদিনের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। পুরো সিরিজে অসাধারণত্বের পরিচয় দেন। ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন ও ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৬৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ২০৮ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ দ্বি-শতকের কল্যাণে ঐ খেলায় স্বাগতিক দল খুব সহজে ইনিংস ও ২২০ রানের ব্যবধানে জয় তুলে নিলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

একই সফরের ২ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দলকে পরিচালনা করে খেলায় তিনি ৬৩ ও ৩৮* রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, এবি ডি ভিলিয়ার্সের অসাধারণ শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পায়। ঐ সিরিজে তিনি ৩৪২ রান সংগ্রহ করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন ও তাঁর দল ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫৯ রান তুলেন। পরবর্তীতে এটিই ওডিআইয়ে তাঁর সর্বোচ্চ রানের ইনিংস হিসেবে চিত্রিত হয়ে পড়ে।

২০১৬-১৭ মৌসুমে নিজ দেশে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কা দলের মুখোমুখি হন। ১২ জানুয়ারি, ২০১৭ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩৪ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, জ্যঁ পল ডুমিনি’র অসাধারণ ব্যাটিং সাফল্যে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১১৮ রানে জয় পেলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

২০১৭-১৮ মৌসুমে নিজ দেশে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের মুখোমুখি হন। ৬ অক্টোবর, ২০১৭ তারিখে ব্লোমফন্তেইনে অনুষ্ঠিত সফররত বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে খেলেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ৫৪ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৮৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১৩২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। কাগিসো রাবাদা’র অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ২৫৪ রানে পরাজিত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

২০১৮-১৯ মৌসুমে নিজ দেশে ডিমুথ করুণারত্নে’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০ ও ৩২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। কুশল মেন্ডিসের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৮ উইকেটে জয়লাভ করলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

২০১৯ সালের বিশ্বকাপের ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর, ৮ আগস্ট, ২০১৯ তারিখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন।

২০০৬ সালে সাউথ আফ্রিকান ক্রিকেট অ্যানুয়েল কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার ও ২০১৩ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। সুমাইয়া আমলা নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির দুই পুত্র সন্তান রয়েছে।