Skip to content

২০ ডিসেম্বর, ১৯৭০ তারিখে সলসবারিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে সবিশেষ পারদর্শী ছিলেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

৫ ফুট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী। হারারেভিত্তিক সেন্ট জর্জেস কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। ১৯৮৯-৯০ মৌসুম থেকে ২০১০ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ড ও ম্যাশোনাল্যান্ড ঈগলস এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্স ও লিচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, চেশায়ার, মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব ও ইয়ং ম্যাশোনাল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন।

জিম্বাবুয়ের বিখ্যাত ফ্লাওয়ার ভ্রাতৃদ্বয়ের কনিষ্ঠ তিনি। মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান ও কার্যকর বামহাতি স্পিনার ছিলেন। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের মর্যাদা পেয়েছেন। ১৯৯০-এর দশকে দলের সাফল্য লাভে অন্যতম স্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছিলেন ও দলের প্রধান চালিকাশক্তি ছিলেন। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে বড় ধরনের রান সংগ্রহে তৎপরতা প্রদর্শনে সুনাম কুড়িয়েছিলেন। ব্যাটিং কৌশল অপূর্ব ছিল ও প্রতিপক্ষীয় বোলারদের তাঁকে আউট করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।

শৈশবকাল থেকেই প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের পরিচিতি পান। ফলে খুব সহজেই জিম্বাবুয়ের জাতীয় দলে খেলার সুযোগ লাভ করেন। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন। তবে, একদিনের আন্তর্জাতিকে অধিকতর সফলতা লাভের ফলে ছয় নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নামতেন। দীর্ঘ ইনিংস খেলার মানসিকতা নিয়ে খেলতেন। এছাড়াও, প্রয়োজনে বড় ধরনের মারেও সফল ছিলেন।

১৯৯২ থেকে ২০১০ সময়কালে জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বমোট ৬৭ টেস্ট ও ২২১টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের সাথে একই বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটলেও তুলনামূলকভাবে দীর্ঘদিন খেলেছেন। ১৯৯২ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মোট ১৮ বছর খেলেছিলেন। প্রায়শঃই জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের সাফল্যে পুরো খেলোয়াড়ী জীবনই তাঁর সাফল্য ম্লান হয়ে পড়তো। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের ন্যায় ব্যাটিংয়ের মান সমপর্যায়ের না হলেও নিজেকে ঠিকই মেলে ধরেছেন স্ব-মহিমায়। ধারাবাহিকভাবে স্ট্রোক মারতে না পারলেও বেশ মনোযোগের সাথে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ২০০৩-০৪ মৌসুমে বৃদ্ধাঙ্গুলে আঘাতের কারণে অস্ট্রেলিয়া গমন করা থেকে বঞ্চিত হন। এরফলে, ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ে দলে ফ্লাওয়ার ভ্রাতৃদ্বয়ের একত্রে খেলায় ছেদ পড়ে।

১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার পর জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের ইতিহাসে উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে নিজ দেশে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ১৮ অক্টোবর, ১৯৯২ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে জন ট্রাইকোস ব্যতীত অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ টেস্টে অর্ধ-শতক হাঁকিয়ে খেলায় স্বল্প কয়েকজন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে জোড়ালো ভূমিকা রাখেন। প্রথম জিম্বাবুয়ীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে অর্ধ-শতরানের সন্ধান পান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়। একই সফরের ২৫ অক্টোবর, ১৯৯২ তারিখে হারারেতে প্রথমবারের মতো ওডিআইয়ে অংশ নেন।

১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে নিজ দেশে সেলিম মালিকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ৩১ জানুয়ারি, ১৯৯৫ তারিখে হারারেতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। নিজের স্বর্ণালী মুহূর্ত উদযাপন করেন। নিজস্ব প্রথম শতক হাঁকানোর পাশাপাশি দ্বি-শতকে রূপান্তর করেন। এরফলে, স্বল্পসংখ্যক ক্রিকেটারদের অন্যতম হিসেবে এ কৃতিত্বের পার্শ্বে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। ১১ ঘণ্টা ব্যাটিং করে ২০১ রানে অপরাজিত ছিলেন। এ খেলাতেই জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট জয়ে সবিশেষ ভূমিকা রাখেন। ফ্লাওয়ার ভ্রাতৃদ্বয়ের অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় সফরকারীরা ইনিংস ও ৬৪ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। স্বীয় ভ্রাতা অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের সাথে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের নেতৃত্বাধীন জিম্বাবুয়ীয় দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১৩ জানুয়ারি, ১৯৯৬ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ৫ ও ৫৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, ক্রিস কেয়ার্নসের অসাধারণ বোলিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

পাকিস্তানের বিপক্ষেই অধিকতর সফল ছিলেন। সর্বমোট ছয়টি শতকের তিনটিই করেছেন প্রতিপক্ষটির বিপক্ষে। তন্মধ্যে, ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে ওয়াকার ইউনুস ও শোয়েব আখতারের ন্যায় ফাস্ট বোলারদের রুখে দিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে ১৫৬ রানে অপরাজিত থাকা অবস্থায় মাঠ ছাড়েন।

১৯৯৭ সালে আরও একটি সাফল্যের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে উভয় ইনিংসেই শতরান করেছিলেন। ১০৪ ও ১৫১ রান তুলে প্রথম জিম্বাবুয়ীয় হিসেবে এক টেস্টে দুইটি শতক হাঁকিয়েছিলেন।

১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে মাইক অ্যাথারটনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে বুলাওয়েতে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল। ৪৩ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ০/২০ ও ০/৩৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান।

দ্বিতীয় টেস্টেও দলে থাকেন। ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। তাঁর ৭৩ রানের বদান্যতায় সিরিজটি ড্র হয়। ঐ টেস্টের প্রথম ইনিংসে তিনি এ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ৯ রান খরচ করলেও কোন উইকেটের সন্ধান পাননি। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে নিজ দেশে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। পুরো সিরিজে অসাধারণত্বের পরিচয় দেন। ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ তারিখে হারারেতে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ১০৪ ও ১৫১ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম উইকেটে গেভিন রেনি’র সাথে ১৫৬ রানের জুটি গড়ে নতুন জিম্বাবুয়ীয় রেকর্ড গড়েন। এরফলে, ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে অকল্যান্ডে জিডব্লিউ ফ্লাওয়ার-এসভি কার্লাইলের মধ্যেকার রেকর্ড ম্লান হয়ে পড়ে। জোড়া শতক লাভের ফলে জিম্বাবুয়ের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এ কৃতিত্বের অধিকারী হন। ঘটনাবহুল এ টেস্টে ডিএল হটনের সংগৃহীত ১৪১৯ রানকে অতিক্রম করে ১৪৩০ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ের সর্বাধিক রান সংগ্রাহক হন। তাঁর অসামান্য দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।

একই সফরের ২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ তারিখে বুলাওয়েতে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৭০ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৮৩ ও ৪৯ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। গাই হুইটলের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে ঐ টেস্টটি ড্রয়ে পরিণত হলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। এ সিরিজে ৩৮৭ রান সংগ্রহ করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে আলিস্টার ক্যাম্পবেলের নেতৃত্বাধীন জিম্বাবুয়ীয় দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৯ অক্টোবর, ১৯৯৯ তারিখে ব্লোমফন্তেইনের গুডইয়ার পার্কে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০ ও ৮ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৪৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, জ্যাক ক্যালিসের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৩ রানে জয়লাভ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

২০০০-০১ মৌসুমে নিজ দেশে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১২ সেপ্টেম্বর, ২০০০ তারিখে বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ঘটনাবহুল ঐ টেস্টে স্কয়ার-লেগ অঞ্চলে দণ্ডায়মান আম্পায়ার ডিবি হেয়ার কর্তৃক নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের দ্বিতীয় ওভারে দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ বলে- তিনবার বল নিক্ষেপ করার অভিযোগে নো-বল ডাক শুনেন। পরবর্তীতে, দলীয় অধিনায়ক এইচএইচ স্ট্রিক তাঁকে বোলিং করা থেকে বিরত রাখেন ও জিজে রেনিকে দিয়ে ওভারটি সম্পন্ন করেন। এরপূর্বে, ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে হারারেতে অনুষ্ঠিত প্রথম শ্রেণীর লোগান কাপের খেলায় ম্যাশোনাল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২৪ দলের সদস্যরূপে ম্যাশোনাল্যান্ড কান্ট্রি ডিস্ট্রিক্টসের বিপক্ষে খেলাকালীন আম্পায়ার এন ফ্লেমিং কর্তৃক দুইবার বল নিক্ষেপের দায়ে নো-বলের ডাক পেয়েছিলেন। খেলায় তিনি ০/২৬ ও ০/৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ২৪ ও ৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পল ওয়াইজম্যানের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৭ উইকেটে জয়লাভ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

সব মিলিয়ে টেস্টগুলো থেকে ২৯.৫৪ গড়ে ৩৪৫৭ রান সংগ্রহ করেছেন। তন্মধ্যে, পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। এছাড়াও, ২৫টি উইকেট লাভ করেছিলেন। টেস্টের তুলনায় ওডিআইয়ে অধিক সফলতা পেয়েছেন। ওডিআইগুলো থেকে ৩৪ ঊর্ধ্ব গড়ে ৬ শতক ও ৪০টি অর্ধ-শতরান সহযোগে ৬৫৭১ রান পেয়েছেন। কয়েকটি খেলায় ব্যাটিং উদ্বোধনের পর মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ে নামলেও খেলায় কোনরূপ ছন্দপতন ঘটেনি। তাঁর পরিসংখ্যান আরও সমৃদ্ধতর হতে পাড়তো যদি ৯ ইনিংসে ‘নার্ভাস নাইটিজের’ শিকার না হতেন। এছাড়াও, ওডিআইয়ে ১০৪ উইকেট দখল করেছেন।

ঢাকায় কেনিয়ার বিপক্ষে ৪/৩২ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে দলের জয়ে সবিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। মিতব্যয়ীতাপূর্ণ বামহাতি স্পিন বোলিং ক্ষুদ্র সংস্করণের খেলাতেই অধিক প্রভাব ফেলে। কিছু সময় ঝাঁকুনীপূর্ণ ভঙ্গীমায় বোলিং কর্মে অগ্রসর হবার ফলে তাঁর বোলিংয়ের ধরন পর্যবেক্ষণের আওতায় চলে আসে। তাসত্ত্বেও, জিম্বাবুয়ের পক্ষে তাঁর বোলিং বেশ কার্যকর ছিল। এছাড়াও, উইকেটের কাছাকাছি যে-কোন অবস্থানে অসাধারণ ফিল্ডিং করতেন।

অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের অবসর গ্রহণের পর ২০০৩ সালে ইংল্যান্ড সফরে ব্যাটিং উদ্বোধনের আমন্ত্রণ পান। তবে, দলের সূচনাটি ভালোভাবে এনে দিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। কেবলমাত্র ট্রেন্ট ব্রিজে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংসটি দলকে জয় এনে দিতে সহায়তা করেছিল।

২০০৩-০৪ মৌসুমে নিজ দেশে হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের মুখোমুখি হন। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ তারিখে বুলাওয়েতে অনুষ্ঠিত সফররত বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও স্বাগতিক দল ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট ইউনিয়নের বিপক্ষে দলের অন্যান্য খেলোয়াড়ের সাথে একযোগে ধর্মঘটে যান। পরবর্তীতে, ১৪ মার্চ, ২০০৪ তারিখে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। এছাড়াও, বিদ্রোহী খেলোয়াড়দের প্রতিনিধি ছিলেন। এরপর, ইংল্যান্ডে চলে যান। কোলপ্যাক খেলোয়াড় হিসেবে এসেক্সের সাথে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ও অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের সাথে একত্রে খেলেছিলেন। ২০০৫ সালে নিজস্ব স্বর্ণালী সময়ে অবস্থান করেছিলেন। লিস্ট-এ ক্রিকেটে ক্লাবের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ও তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকে পরিণত হন। ২০১০ সাল পর্যন্ত এসেক্সের সাথে ছয়টি সফলতম মৌসুম অতিবাহিত করেন। ২০০৮ সালে ফ্রেন্ডস প্রভিডেন্ট ট্রফির শিরোপা বিজয়ে অংশ নেন ও ২০০৯ সালের ন্যাটওয়েস্ট প্রো৪০ দ্বিতীয় বিভাগের শিরোপা লাভে প্রধান ভূমিকা রাখেন। ২০১০ সালে সীমিত-ওভারের খেলায় ৬৫.৮৭ গড়ে ৫২৭ রান পেয়েছেন। তবে, ৪০-ওভার ও টি২০ প্রতিযোগিতার সেমি-ফাইনালে দলকে নিরাশ হতে হয়েছিল। অক্টোবর, ২০১০ সাল পর্যন্ত ক্লাবটির সাথে সংযুক্ত ছিলেন।

তবে, প্রত্যেককে বিস্মিত করে দিয়ে সাড়ে ছয় বছর পর ২০১০ সালে পুণরায় জিম্বাবুয়ে দলে প্রত্যাবর্তন করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আর মাত্র দুইটি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন ও খুব কমই ভূমিকা রেখেছিলেন। এরপর আর কোন আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণের চেষ্টা চালাননি। এছাড়াও, ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ড ঈগলসের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ২০১০-১১ মৌসুমের ঘরোয়া টি২০ প্রতিযোগিতার শিরোপা বিজয়ে সহায়তা করেন। নভেম্বর, ২০১০ সালে বাংলাদেশ গমনার্থে দলে খেলার চেষ্টা চালাননি ও কোচিং জগতের দিকে মনোনিবেশ ঘটান।

অবসর গ্রহণকালীন টেস্ট ও ওডিআইয়ে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের তুলনায় ২১৫ রান পিছিয়েছিলেন। হিথ স্ট্রিকের পর দ্বিতীয় জিম্বাবুয়ীয় হিসেবে ১০০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। অক্টোবর, ২০১০ সাল থেকে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রধান কোচ হিসেবে আবেদন করলেও অ্যান্ডি ওয়ালারকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এরপর, পাকিস্তান ক্রিকেট দলে ব্যাটিং কোচ হিসেবে রয়েছেন।