| | | |

বিষেন সিং বেদী

২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৬ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

‘স্পিনের সর্দার’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। দৃষ্টিনন্দন, শৈল্পিকসত্ত্বা নিয়ে বিশুদ্ধ ভঙ্গীমায় বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। বোলিং ভঙ্গীমার ধরন না পাল্টিয়েই মুহূর্তের মধ্যেই ফ্লাইট, লুপ, স্পিন ও পেসে ভিন্নতা আনতে পারতেন। মনেপ্রাণে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন, ব্যাটসম্যানকে প্রলুদ্ধ করতেন ও খেলোয়াড়ী জীবনের অধিকাংশ সময়ই নিয়মিতভাবে উইকেট পেতেন। তাঁকে ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ, দক্ষ, বামহাতি স্পিনার হিসেবে গণ্য করা হয়।

অধিনায়কের কাছে অমূল্য সম্পদে পরিণত হন। কখনোবা সারাদিন বোলিং কর্মে মনোনিবেশের জন্যে আমন্ত্রিত হতেন। দক্ষ বামহাতি অর্থোডক্স স্পিনার হিসেবে বিএস চন্দ্রশেখর, ইরাপল্লী প্রসন্নশ্রীনিবাস বেঙ্কটরাঘবনের সাথে বোলিং করে খ্যাতনামা ‘ভারতীয় স্পিনার চতুষ্টয়ের’ অন্যতম হিসেবে পরিগণিত হন। ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে এক দশকের অধিক সময় জুড়ে তাঁরা ভারতীয় ধীরগতিসম্পন্ন বোলিংয়ের স্বর্ণযুগে একাধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। নিজ দেশে উপযোগী উইকেটে ভারতের অনেকগুলো স্মরণীয় জয়ে তাঁরা ভূমিকা রাখেন। প্রথমবার তাঁরা সফলতার সন্ধান পেলে নিয়মিতভাবে একত্রে খেলতেন। এছাড়াও, বিদেশের মাটিতেও তিনি সফল ছিলেন। তাঁদের সাথে একজনমাত্র পেসার এবং সুনীল গাভাস্কারদিলীপ বেঙ্গসরকারকে খণ্ডকালীন বোলার হিসেবে নতুন বলের চাকচিক্য মুছে ফেলার দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।

সুরেশ মেনন তাঁর আত্মজীবনীতে কিশোর বিষেন বেদী সম্পর্কে ব্যক্ত করেছেন যে, ‘মার্বেল নিয়ে তিনি খেলতেন। এরফলে, তাঁর আঙ্গুলের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখেন। স্পিন বোলিংয়ে ধাবিত হবার পর থেকেই ক্রমাগত অনুশীলন করে যেতেন। পঞ্চাশ পয়সার মুদ্রার উপর ওভারের ছয়টি বল ফেলতে পারতেন। তবে, ব্যাটসম্যানেরা খুব কমই একই জায়গায় ফেলা বলের ভিন্নতা সম্পর্কে অনুধাবন করতে পারতো।’ অনেক স্পিনারের ন্যায় তিনিও ফাস্ট বোলার হতে চেয়েছিলেন। তবে, অমৃতসরভিত্তিক কলেজে অধ্যয়নকালীন দলীয় অধিনায়ক গুরপাল সিং তাঁকে স্পিনের দিকে অগ্রসর হতে বলেন।

১৯৬১-৬২ মৌসুম থেকে ১৯৮০-৮১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে দিল্লি ও নর্দার্ন পাঞ্জাব এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নর্দাম্পটনশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৩ বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। দুই বছর পর ১৫ বছর বয়সে নর্দার্ন পাঞ্জাবের পক্ষে অভিষেক ঘটে। এরপর, রাজধানী দিল্লিতে চলে যান ও ১৯৮১ সালে অবসর গ্রহণের পূর্ব-পর্যন্ত দিল্লির প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭৮-৭৯ ও ১৯৭৯-৮০ মৌসুমে দিল্লি দলের প্রথম দুইটি রঞ্জী ট্রফির শিরোপা বিজয়ে নেতৃত্ব দেন। এছাড়াও, তাঁর অধিনায়কত্বে দিল্লি দল দুইবার রানার্স-আপ হয়েছিল। পাঁচ বছরের ব্যবধানে দলটি চারবার চূড়ান্ত খেলায় অংশ নেয়।

সব মিলিয়ে দিল্লি দলের পক্ষে ৫৭টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। ১৪ গড়ে ২৯৮ উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে, ২৭বার পাঁচ-উইকেট ও ৭বার খেলায় দশ উইকেট পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে, সেরা বোলিং করেন ৭/৫। তবে, নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে চুক্তিবদ্ধতার কারণে দিল্লি দলের পক্ষে খুব বেশী খেলতে পারেননি। নর্দাম্পটনশায়ারের সদস্যরূপে সফলতম কাউন্টি খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সময়কালে কাউন্টি দলটির পক্ষে ১০২ খেলায় অংশ নেন। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে কেবলমাত্র ফারুক ইঞ্জিনিয়ারই ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে তাঁর তুলনায় সর্বাধিক ১৬৪ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ২১.১৬ গড়ে ৩৯৪ উইকেট পান। এ সময়ে তিনি ২৩বার ইনিংসে পাঁচ-উইকেট পেয়েছিলেন।

খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুরদিক থেকে বলকে শূন্যে ভাসিয়ে বোলিং করতে থাকেন ও স্পিনে বৈচিত্র্যতার ছোঁয়া লক্ষ্য করা যায়। শক্তিধর দলগুলোর বিপক্ষে স্থিরচিত্তে সুনিয়ন্ত্রিত পন্থায় বোলিং ভঙ্গীমা প্রদর্শন করেন। ফলশ্রুতিতে, বড়দের দলে খেলার সুযোগ পান ও দীর্ঘদিন তা ধরে রাখতে সক্ষমতার পরিচয় দেন। ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্লাব নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে খেলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ভারতীয়দের মধ্যে সর্বাধিক উইকেট লাভের গৌরবের অধিকারী হন। ৩৭০টি খেলায় অংশ নিয়ে ১৫৬০ উইকেট দখল করেন।

১৯৬৭ থেকে ১৯৭৯ সময়কালে ভারতের পক্ষে সর্বমোট ৬৭ টেস্ট ও ১০টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে নিজ দেশে গ্যারি সোবার্সের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২১ বছর বয়সে ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৬৬ তারিখে শক্তিধর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ২/৯২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ৫ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলায় তাঁর দল ইনিংস ও ৪৫ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

অভিষেক খেলায় তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। তবে, বলের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা ও ভারতের স্পিন আক্রমণে ভিন্নতা আনয়ণে সফল হয়েছিলেন। অভিষেকের পর থেকে পরবর্তী ১২ বছর দলের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হন। পাশাপাশি ব্যাপকভাবে পরিচিতি পাওয়া স্পিনার চতুষ্টয়ের অন্যতম ছিলেন।

১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে মনসুর আলী খান পতৌদি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৮ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১৫ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ২২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ১/৯০ ও ১/৪৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ৫ উইকেটে পরাজয়বরণ করলে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৮ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। আবারও ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে কে থমসনকে বিদেয় করে টেস্টে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৪/৮১। এ পর্যায়ে টেস্টে প্রথমবারের মতো পাঁচ-উইকেট লাভ করেন। বল হাতে নিয়ে খেলায় তিনি ৬/১২৭ ও ২/২১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ৩ ও ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিক দল ৬ উইকেটে জয় পেলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৬৯-৭০ মৌসুমে অসাধারণ খেলা উপহার দেন। নিজ দেশে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে ২১ উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে, কলকাতায় ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৭/৯৮ দাঁড় করান। ১৯৭২-৭৩ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বলে বৈচিত্র্যতা এনে ব্যক্তিগত সফলতা দেখান। পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২৫.২৮ গড়ে ২৫ উইকেট দখল করেন।

১৯৭২-৭৩ মৌসুমে নিজ দেশে টনি লুইসের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৭২ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২/৫৯ ও ৫/৬৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ০ ও ৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ২৮ রানে জয় পেয়ে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সমতায় চলে আসে।

১৯৭৪ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। লর্ডসে অনুষ্ঠিত টেস্টে ৬/২২৬ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে লর্ডস অনার্স বোর্ডে ঠাঁই পান। তাসত্ত্বেও, একবার মাত্র খেলার সুযোগ পেয়ে দলের পরাজয় রোধ করতে পারেননি। বোলিং অনুপযোগী পিচে ইংল্যান্ড দল ডেনিস অ্যামিসের শতকের কল্যাণে ৩৩৭/২ তুলে। এ পর্যায়ে তিনি কোন উইকেটের সন্ধান পাননি। জন এডরিচকে ৯৬ রানে ও কিথ ফ্লেচারকে বিদেয় করলে ভারত দল স্বাগতিক দলকে ৪০০ রানের নিচে বেঁধে রাখতে তৎপর হয়ে উঠে। কিন্তু, মাইক ডেনিস ও টনি গ্রেগ – উভয়ে শতক হাঁকালে সে আশা গুড়েবালিতে পরিণত হয়। ইংল্যান্ড দল ৬২৯ রান তুলে। একমাত্র বোলার হিসেবে তিনিই কেবল ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। জন এডরিচ ও কিথ ফ্লেচারের পাশাপাশি মাইক ডেনিস, অ্যালেন নট, জিওফ আর্নল্ড ও ডেরেক আন্ডারউডের উইকেট পান। ঐ খেলায় তিনি আর বোলিংয়ের সুযোগ পাননি। ইংল্যান্ড দল খুব সহজেই ইনিংস ও ২৮৫ রানের ব্যবধানে জয় পেয়েছিল। এ সফরের ১৩ জুলাই, ১৯৭৪ তারিখে লিডসে অনুষ্ঠিত ওডিআইয়ে প্রথমবারের মতো অংশ নেন।

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৭৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরে ভারত দলের সদস্যরূপে অংশ নেন। প্রথম খেলায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরাজিত খেলায় অংশগ্রহণ করেননি। দ্বিতীয় খেলায় পূর্ব আফ্রিকার বিপক্ষে ওডিআইয়ের ইতিহাসের অন্যতম সেরা মিতব্যয়ী বোলিং করেন। প্রতিযোগিতার সর্বাধিক দূর্বল দলের বিপক্ষে ১২-৮-৬-১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। প্রতিপক্ষকে ১২০ রানে গুটিয়ে ভারত দল ১০ উইকেটের ব্যবধানে জয় পায়। স্মর্তব্য যে, এটিই ভারতের প্রথম ওডিআই জয় ছিল।

১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে ভারতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৬ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ২২ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৩০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৫৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৬ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে কেন ওয়াডসওয়ার্থের তৃতীয় উইকেট লাভ করে ব্যক্তিগত ১৫০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৩/৬৩ লাভ করেন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে উভয় ইনিংসে ২ রান করে সংগ্রহ করেছিলেন। ইনিংস ও ৩৩ রানে জয় পেলে স্বাগতিকরা সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ করতে সক্ষম হয়েছিল।

কয়েক বছর ভারত দলকে নেতৃত্ব দেন। ভালো-মন্দ মিলিয়ে সময় অতিবাহিত করার পাশাপাশি কিছুটা বিতর্কিত ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে মনসুর আলী খান পতৌদি’র পরিবর্তে ভারতের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। ঐ বছর ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। তাঁর নেতৃত্বে পোর্ট অব স্পেনের কুইন্স পার্ক ওভালে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পায়। চতুর্থ ইনিংসে তৎকালীন রেকর্ডসংখ্যক ৪০৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করে ভারত দল সফলতা পায়।

৭ এপ্রিল, ১৯৭৬ তারিখে ত্রিনিদাদের পোর্ট অব স্পেনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। দূরূহ লক্ষ্যমাত্রায় সুনীল গাভাস্কার ও গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথের শতকের কল্যাণে চতুর্থ ইনিংসে ৪০৪ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় এ সাফল্য পান। মাত্র চার উইকেট খুঁইয়ে এ সফলতা পায়। এ পর্যায়ে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ জয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ঘটনা ছিল। অবশ্য, খেলায় তিনি ৪/৭৩ ও ১/৭৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, ব্যাট হাতে নিয়ে একবার ব্যাটিংয়ে নেমে মাইকেল হোল্ডিংয়ের বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। ঐ টেস্টে তাঁর দল ছয় উইকেটে জয়লাভ করলে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সমতায় নিয়ে আসে।

সাবিনা পার্কে অনুষ্ঠিত পরের টেস্টেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল মাইকেল হোল্ডিংসহ ৪জনের আগ্রাসী পেস আক্রমণে তৎপরতা দেখায়। প্রথম ইনিংসে পাঁচজন ব্যাটসম্যান তাঁদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বোলিংয়ে আঘাত পেলে ৩০৬ রান তুলে প্রতিবাদস্বরূপ বেশ আগেভাগে পাঁচ উইকেট অক্ষত রেখেই ইনিংস ঘোষণা করেন। এরপর খেলায় আরও নাটকীয়তা জমে উঠে। পেসারেরা বাউন্সার না মারতে অস্বীকৃতি জানালে মাত্র ২ উইকেট পতনের পর ইনিংস ঘোষণা করলে স্বাগতিকরা খুব সহজেই জয় পায়।

এরপর, নিজ দেশে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় পেলেও ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের বিপক্ষে উপর্যুপরী পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করতে হয়। ফলশ্রুতিতে, অধিনায়ক হিসেবে সুনীল গাভাস্কারকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়।

১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে নিজ দেশে গ্লেন টার্নারের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১৮ নভেম্বর, ১৯৭৬ তারিখে কানপুরে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের স্বাক্ষর রাখেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৩৬ রান অতিক্রম করেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ৩/৮০ ও ৩/৪২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা এগিয়ে যায়।

একই সফরের ২৬ নভেম্বর, ১৯৭৬ তারিখে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ৫/৪৮ ও ৪/২২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে একবার মাঠে নেমে ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ২১৬ রানে পরাজিত হলে সফরকারীরা ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক সিরিজ থেকে ২৩.৮৭ গড়ে ৩১ উইকেট দখল করেন। ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে পার্থে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্টে ব্যক্তিগত সেরা সাফল্য পান। ফাস্ট বোলারদের উপযোগী পিচ থেকে ১৯৪ রান খরচায় ১০ উইকেট দখল করেছিলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৫৬০ উইকেট দখল করে যে-কোন ভারতীয় বোলারদের চেয়ে নিজেকে এগিয়ে রেখেছেন। টেস্টগুলো থেকে ২৮.৭১ গড়ে ২৬৬ উইকেট দখল করেছিলেন। প্রথম ভারতীয় বোলার হিসেবে টেস্টে ২০০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। অবসরগ্রহণকালীন তাঁর সংগৃহীত ২৬৬ উইকেট লাভ ভারতের পক্ষে সর্বাধিক ছিল। পরবর্তীতে, ১৯৮৬ সালে কপিল দেব তাঁর এ সাফল্যকে ম্লান করে দেন।

ভারতীয় স্পিনারদের মধ্যে অনিল কুম্বলে’র ৬১৯ এবং হরভজন সিংয়ের ৪১৭ উইকেট লাভের পর তৃতীয় সর্বাধিক উইকেট সংগ্রহকারীতে পরিণত হয়েছেন। কমপক্ষে ১০০ উইকেট লাভকারী ভারতীয় স্পিনারদের মধ্যে তাঁর অবস্থান দ্বিতীয়। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ২৮.৪৪ গড়ের পর ২৮.৭১ গড়ে তিনি প্রতি টেস্ট উইকেট লাভ করেন। কমপক্ষে ১০০ উইকেট লাভকারী ভারতীয় স্পিনারদের মধ্যে বিনু মানকড়ের ওভারপ্রতি ২.১৩ রান খরচের পর ২.১৪ রান খরচ করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। তবে, কমপক্ষে ৫০ উইকেট লাভকারীর তালিকায় বাপু নাদকর্নী ১.৬৭ গড় নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছেন।

১৯৭৮ সালে পাকিস্তান সফরে শোচনীয় পরাজয়ের মুখোমুখি হয় তাঁর দল। শাহীওয়ালে অনুষ্ঠিত ওডিআই চলাকালীন দলের জয়ের লক্ষ্যমাত্রার এক পর্যায়ে হাতে আট উইকেট রেখে ১৪ বলে ২৩ রান থাকাকালে সরফরাজ নওয়াজের উপর্যুপরী চারটি বাউন্সার প্রদানের ফলে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে আন্তর্জাতিক খেলা থেকে প্রতিপক্ষকে বিজয়ী ঘোষণা করে মাঠ থেকে ব্যাটসম্যানদের ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। এ পর্যায়ে আম্পায়ার বোলারকে কোন সতর্ক করেননি। ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজে পরাজয়ের পর সুনীল গাভাস্কারকে অধিনায়কের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

১৯৭৯ সালে শ্রীনিবাস বেঙ্কটরাঘবনের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২/৬৯ ও ১/৬৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, সুনীল গাভাস্কারের অনবদ্য দ্বি-শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও স্বাগতিকরা চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

এরপর ১৯৭৯ সালে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণের পর অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কারকে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে দলের বাইরে রাখার বিষয়ে অভিযুক্ত করেন। খেলার শেষদিকে তাঁকে স্বল্পসংখ্যক বোলিংয়ের জন্যে আমন্ত্রণ জানাতেন। এছাড়াও, তাঁর বাজে বোলিংয়ের কারণে পছন্দের রবি শাস্ত্রীকে দলে অন্তর্ভুক্তিতে ভূমিকা রাখেন।

এরপর, ভারত দলের কোচের দায়িত্বে ছিলেন। তিন শতাধিক উইকেট লাভকারী ভারতীয় বোলিং জুটির মধ্যে তিনি ও ভাগবত চন্দ্রশেখর সেরা বোলিং গড়ের অধিকারী। উভয়ে ২৭.৯৬ গড়ে ৩৬৮ উইকেট দখল করেন। এ পর্যায়ে তিনি ১৮৪ ও ভাগবত চন্দ্রশেখর ১৮৪ উইকেট দখল করেন। তিন জুটির দুইটিতেই তিনি যুক্ত রয়েছেন। অনিল কুম্বলে ও হরভজন সিং ৩০.২২ গড়ে ৫০১ উইকেট পান। অপরটিতে ইএএস প্রসন্নের সাথে জুটি গড়েছিলেন।

অংশগ্রহণকৃত টেস্টগুলো থেকে ৮.৯৮ গড়ে ৬৫৬ রান তুলেন। এ পর্যায়ে একটি অর্ধ-শতরানের সন্ধান পেয়েছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবনের মাঝামাঝি সময়ে এ সফলতা পান। কানপুরের গ্রীন পার্কে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে ৫২৪/৯ থাকা অবস্থায় অর্ধ-শতক হাঁকালে ৫০ রানে অপরাজিত অবস্থায় মাঠ ছাড়েন ও ইনিংস ঘোষণা করেন। তবে, তিন উইকেট হাতে রেখে সফরকারীরা ড্র করতে সমর্থ হয়েছিল।

নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতের প্রথম বিজয়ে একমাত্র সদস্য ছিলেন। তবে, এ সকল বিজয়ে প্রধান ভূমিকা রাখেননি ও ভারতের অপর তিন-রত্ন যথোপযোগী ভূমিকা স্বাক্ষর রেখেছিলেন।

মুত্তিয়া মুরালিধরনের বোলিং ভঙ্গীমার প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন। ‘টেস্টে তিনি হয়তোবা সহস্র উইকেট পেতে পারতেন, তবে তা কেবলই গণনার বাইরে। শ্রীলঙ্কান দস্যূ হিসেবে স্বপ্নের শিল্পীসত্ত্বা শেন ওয়ার্নের চেয়ে এগিয়ে আছেন।’ বর্শা নিক্ষেপকের সাথে তাঁকে তুলনা করেন ও টি২০ ক্রিকেটের প্রধান প্রতিবন্ধক তিনি বলে মন্তব্য করেন।

১৯৮৩ সালের দলটিকে ‘কপিলের বীর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ২৫ জুন, ২০১৯ তারিখে ইরাপল্লী প্রসন্ন তাঁর সেরা একাদশে বিষেন বেদী সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, ‘আমি তাঁর বলে ফ্লাইট আনয়ণের উপযোগিতা সম্পর্কে শিখেছি।’ ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখে ডিডিসিএকে কোটলা স্ট্যান্ড থেকে স্বীয় নাম মুছে ফেলতে ও সদস্যপদ বাতিল করতে বলেন। ই-মেইলে সংস্থার সভাপতির কাছে কোটলায় অরুণ জেটলি’র ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয়টি উল্লেখ করেন।

জিম লেকার মন্তব্য করেন যে, ‘এক প্রান্তে রে লিন্ডওয়াল ও অপর প্রান্তে বিষেন সিং বেদী বোলিং করলে তা স্বর্গ সমতুল্য বিবেচিত হতো।’ টনি লুইস বলেছিলেন যে, ‘৬০ ওভার বোলিং করার পরও যদি তিনি শুরুর ন্যায় একই ছন্দে বোলিং করতে থাকেন তাহলে কেন তাঁর বোলিং ভঙ্গীমা অপূর্ব ছিল তা লক্ষ্য করা যায়।’

১৯৬৭ সালে বর্ষসেরা ভারতীয় ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে অর্জুন পদক ও ১৯৭০ সালে পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত হন। ২০০৪ সালে সিকে নায়ড়ু আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পান। ২০১৫ সালে উইজডেন ইন্ডিয়া হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন। নর্দান্টসের পক্ষে বেশ কয়েক মৌসুম ধারাবাহিকভাবে সফলতার স্বাক্ষর রাখলেও বিস্ময়করভাবে তাঁকে উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি।

সর্বদাই সরব ছিলেন ও সমুজ্জ্বল দৃষ্টিভঙ্গীর অধিকারী থেকে বিতর্কিত হয়েছেন। এমনকি অবসর গ্রহণের পরও এ ধারা বহমান রাখেন। ১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে মাদ্রাজ টেস্টে সফরকারী ইংরেজ বোলার জন লেভারের ভ্যাসলিন ব্যবহারের বিষয়ে আপত্তি করেন। ঐ সিরিজে তাঁর দল ৩-১ ব্যবধানে সিরিজে পরাজিত হয়। অধিনায়কের দায়িত্বে থাকাকালীন ১৯৭৬ সালে কিংস্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলারদের উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আগ্রাসী বোলিংয়ের কারণে প্রতিবাদস্বরূপ অনেকটা আগেভাগে ইনিংস ঘোষণা করতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে, ১৯৯০ সালে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম পূর্ণাঙ্গকালীন কোচ হিসেবে নিযুক্তি পান।

১৯৮৯-৯০ মৌসুমে ভারত দলের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থেকে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ক্রাইস্টচার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রথম্যান্স কাপে পরাজিত হলে পুরো দলকে প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলে দেয়ার মন্তব্যের কারণে প্রসিদ্ধি পান। কোচিংয়ের দায়িত্ব পালনকালীন ১৯৯০ সালে বাজে ফলাফলের কারণে দলকে সমুদ্রে ফেলে দেয়ার হুমকি দিয়ে সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়েছিলেন। টি২০ বিপ্লবের তুখোর সমালোচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে অস্ট্রেলীয় রমণী গ্লেনিথের সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। ১৯৭১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সুনীল গাভাস্কারের অবিস্মরণীয় সাফল্যের সম্মাননাস্বরূপ তিনি তাঁর প্রথম সন্তানের নাম গাভাসিন্দার রাখেন। গিলিন্দার নাম্নী এক কন্যা রয়েছে তাঁর। তবে, তাঁদের বিবাহ পরবর্তীতে বিচ্ছেদে পরিণত হয়। এরপর, দ্বিতীয়বার পাণিগ্রহণ করেন। এ সংসারে নেহা ও অঙ্গদ নামীয় আরও দুই সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তন্মধ্যে, নেহা মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অপরদিকে অঙ্গদ পিতার পদাঙ্ক অনুসরণে ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করে। হিমাচল প্রদেশের অনূর্ধ্ব-১৬ দলে প্রথমবার খেলে ৪/২৭ ও ৪/৫৫ লাভ করে। ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে ৭৭ বছর ২৮ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • |

    ব্রেন্ডন ম্যাককালাম

    ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮১ তারিখে ওতাগোর ডুনেডিনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম কিংবা ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ডানহাতে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পরিচিতি লাভ করেন। ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ‘বাজ’ ডাকনামে পরিচিতি পান। দ্রুত সাড়া…

  • | |

    মমিনুল হক

    ২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯১ তারিখে কক্সবাজারে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। আকর্ষণীয় ভঙ্গীমায় বামহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে কার্যকর বামহাতি স্পিনার হিসেবে আবির্ভূত হন। বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তরে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি, বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। খর্বাকায় ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী। ‘সৌরভ’ ডাকনামে পরিচিত মমিনুল হক মুমিনুল…

  • | |

    জনি ক্লে

    ১৮ মার্চ, ১৮৯৮ তারিখে ওয়েলসের বনভিলস্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হতেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। উইনচেস্টারে অধ্যয়ন করেছেন। চিপস্টো এলাকায় ক্রীড়াপ্রেমী পরিবারের সন্তান ছিলেন। যুবক অবস্থায় ক্ষীপ্রগতিসম্পন্ন ফাস্ট বোলার ছিলেন। শুরুতে মাইনর কাউন্টি…

  • | | |

    বিল লরি

    ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৭ তারিখে ভিক্টোরিয়ার থর্নবারি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। খেলাধূলাপ্রিয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন। ১৯৪৯ সালে প্রেস্টন টেকে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নকালীন বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের পরিচিতি তিনি তুলে ধরেছিলেন। ১১ বছর বয়সে বিজ্ঞান…

  • |

    ফ্রেড বেকওয়েল

    ২ নভেম্বর, ১৯০৮ তারিখে স্টাফোর্ডশায়ারের ওয়ালসল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। দলে মূলতঃ ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে নিয়োজিত থাকতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৬ সময়কাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অব্যাহত রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নর্দাম্পটনশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নিজের সেরা দিনগুলোয় অন্যতম দৃষ্টিনন্দন…

  • | |

    শুজাউদ্দীন

    ১০ এপ্রিল, ১৯৩০ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৪৬-৪৭ মৌসুম থেকে ১৯৬৯-৭০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে নর্দার্ন পাঞ্জাব, সার্ভিসেস, বাহাওয়ালপুর,…