Skip to content

১৫ মার্চ, ১৯৫৩ তারিখে ব্রিটিশ গায়ানার ল্যাঙ্কাস্টার ভিলেজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

‘ক্রফ্টি’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চির লিকলিকে গড়নের অধিকারী ছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে গায়ানা এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৭১-৭২ মৌসুম থেকে ১৯৮২ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন।

১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ২৭ টেস্ট ও ১৯টি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। মাত্র ৫ বছরব্যাপী স্থায়ী স্বল্পকালীন খেলোয়াড়ী জীবনে টেস্টগুলো থেকে ২৩.৩০ গড়ে ১২৫ উইকেট দখল করেছিলেন। ওডিআইগুলো থেকে ২০.৬৭ গড়ে ওভারপ্রতি ৩.৪৭ রান খরচায় ৩০ উইকেট পেয়েছিলেন।

১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে নিজ দেশে মুশতাক মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ তারিখে ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। জোয়েল গার্নারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৩/৮৫ ও ৪/৪৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ১* ও ৫* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ মুঠোয় পুড়েন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

এরপর, ৪ মার্চ, ১৯৭৭ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। নিজস্ব দ্বিতীয় টেস্টে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮/২৯ পান। অদ্যাবধি যে-কোন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলারের মধ্যে সেরা বোলিং বিশ্লেষণ হিসেবে চিত্রিত হয়ে আছে। অবশ্য, দ্বিতীয় ইনিংসে ১/৬৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ২৩* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর বদৌলতে স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে জয় পায় ও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। ঐ সিরিজে ২০ গড়ে ৩৩ উইকেট দখল করেছিলেন।

এক বছর পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪/১৫ ও ৪/৪৭ লাভ করেছিলেন। ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ১৭.৫০ গড়ে ৮ উইকেট দখল করেন। ওভারপ্রতি ৩.০৮ রান খরচ করেছিলেন। এর এক বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২৪ গড়ে ১৬ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ বিজয়ে অংশ নেন।

১৯৭৯-৮০ মৌসুমে ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮০ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০* ও ১* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ৪/৬৪ ও ২/২৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ১ উইকেটে নাটকীয়ভাবে জয় পেয়ে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৮১ সালে অ্যান্টিগুয়া টেস্টে দুই ইংরেজ ব্যাটসম্যানকে আঘাতের মাধ্যমে প্যাভিলিয়নে ফেরৎ পাঠিয়েছিলেন।

১৯৮১-৮২ মৌসুমে ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ৩০ জানুয়ারি, ১৯৮২ তারিখে অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১/৬০ ও ১/৯০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে জেফ থমসনের বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। তবে, অ্যালান বর্ডারের অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তা প্রদর্শন সত্ত্বেও সফরকারীরা ৫ উইকেটে জয় পেলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ করতে সক্ষম হয়েছিল। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৫ গড়ে ৪২৮ উইকেট দখল করেছিলেন। ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ তারিখে আইসিসি’র প্রস্তাবিত ১৯৮০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত সকল ধরনের খেলাকে প্রথম-শ্রেণীরূপে গণ্য করার বিষয়ে বেশ জোড়ালো ও শক্তভাবে বিরোধিতা করেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ধারাভাষ্যকর্মের সাথে যুক্ত হন। টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল দলের সদস্য হন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলায় ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবে স্কাই স্পোর্টসে অংশ নিয়ে থাকেন।

তরুণ বয়সে বেশ মেধাবী ছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবনে থাকাকালীন ১৯৭৩ থেকে ১৯৮১ সময়কালে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের দায়িত্ব পালন করতেন। বার্কশায়ার স্কুলে গণিত শিক্ষা দিতেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্যিক বিমান চালকের সনদ লাভ করেন। যুক্তরাজ্যে অনুমোদিত হন ও খেলোয়াড়ী জীবন থেকে চলে আসার পর বাণিজ্যিক বিমানের চালক হিসেবে যোগ দেন। বিংশ শতকে এসে ইএসপিএনক্রিকইনফোয় অনলাইন ক্রিকেট কলামিস্ট হিসেবে নিয়মিতভাবে লিখে চলেছেন।