২১ অক্টোবর, ১৯৮৮ তারিখে মহারাষ্ট্রের বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। দলে তিনি মূলতঃ বোলার হিসেবে ভূমিকা রাখছেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে বামহাতে ব্যাটিংয়ে নামেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
দীপক প্যাটেল ও জীতেন প্যাটেলের পদাঙ্ক অনুসরণে নিউজিল্যান্ড দলের পক্ষে খেলেন। খুবই ছোটবেলায় ১৯৯৬ সালে মুম্বই থেকে নিউজিল্যান্ডে অভিবাসিত হন। ২০১২ সাল থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রেখেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে অকল্যান্ড ও সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
অকল্যান্ড দলের পক্ষে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেন। তবে, সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের প্রতিনিধিত্ব করার পর নিজের দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটান। অকল্যান্ড ‘এ’ দলের পক্ষে খেলে তেমন সফলতার সন্ধান পাননি। কিন্তু, সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসে চলে আসার পর খুব শীঘ্রই নিজেকে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের উপযোগী করে তুলেন। ১০ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত ওয়েলিংটন বনাম সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের মধ্যকার খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। একই বছরে টি২০ খেলায় প্রথমবারের মতো অংশ নেন। কিন্তু, ৫০-ওভারের খেলার জন্যে তাঁকে তিন বছর অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়েছিল।
২০১৮ সাল থেকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট ও টি২০আইয়ে অংশ নিচ্ছেন। ২০১৮-১৯ মৌসুমে কেন উইলিয়ামসনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের বিপক্ষে টি২০আইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অঙ্গনে প্রবেশ করেন। এরফলে, টেড ব্যাডকক, টম পুনা, ইশ সোধি ও জিৎ র্যাভালের পর পঞ্চম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার হিসেবে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে খেলার সুযোগ পান।
অল্প কিছুদিন পর একই সফরের ১৬ নভেম্বর, ২০১৮ তারিখে আবুধাবিতে একই দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন ও নিজেকে স্মরণীয় করে রাখেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে নিজস্ব প্রথম পাঁচ-উইকেট লাভ করেন। বল হাতে নিয়ে ২/৬৪ ও ৫/৫৯ পান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে ৬ ও ৬* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ বোলিং সাফল্যে নিউজিল্যান্ড দল ৪ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।
লাল-বলের খেলায় সংশ্লিষ্ট সকলের কাছ থেকে ভূয়সী প্রশংসা কুড়ান। নিয়মিতভাবে উইকেটের সন্ধান পেলেও নিউজিল্যান্ড দলে ঠাঁই পেতে তাঁকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল। দলে স্থান লাভের প্রশ্নে মিচেল স্যান্টনার ও ইশ সোধি’র সাথে তাঁকে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়। তন্মধ্যে, মিচেল স্যান্টনার ব্যাট হাতে তাঁর তুলনায় বেশ এগিয়েছিলেন। তাসত্ত্বেও, সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের পক্ষে তাঁকে খেলায় অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখা যায়নি। ২০১৮ সালে নিজের স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। প্লাঙ্কেট শীল্ড প্রতিযোগিতার নয় খেলা থেকে ৪৮ উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট-শিকারীতে পরিণত হন। এ পর্যায়ে পুরুষদের বর্ষসেরা ঘরোয়া খেলোয়াড়ের পুরস্কার লাভ করেন।
২০১৯ সালে কেন উইলিয়ামসনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ১৪ আগস্ট, ২০১৯ তারিখে গলেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ০ ও ১৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ৫/৮৯ ও ১/৭৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, দিমুথ করুণারত্নে’র অসাধারণ ব্যাটিং সাফল্যে স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
২০২১-২২ মৌসুমে টম ল্যাথামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ভারত সফরে যান। ৩ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের স্বাক্ষর রাখেন। ভারতের প্রথম ইনিংসে আর অশ্বিনকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৫/৫৯। খেলায় তিনি ১০/১১৯ ও ৪/১০৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে উভয় ইনিংসে শূন্য রানে অপরাজিত ছিলেন। তবে, মৈয়াঙ্ক আগরওয়ালের অসামান্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৩৭২ রানের ব্যবধানে জয় পায় ও ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।
২০২৪ সালে টিম সাউদি’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে গলেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ২/৬০ ও ৬/৯০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৬ ও ২* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, প্রভাত জয়সুরিয়া’র অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৬৩ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
২০২৪-২৫ মৌসুমে টম ল্যাথামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ভারত গমন করেন। ১ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে ওয়াংখেড়েতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ৫/১০৩ ও ৬/৫৭ লাভ করেন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে ৭ ও ৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, তাঁর স্মরণীয় বোলিং সাফল্যে স্বাগতিকরা মাত্র ২৫ রানে পরাভূত হলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।