Skip to content

১৩ মার্চ, ১৯৯৪ তারিখে হায়দ্রাবাদের জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলিং কর্মে অগ্রসর হন। ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামেন। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিচ্ছেন।

স্মরণীয়ভাবে তাঁর উত্থান ঘটে। পা বরাবর ইয়র্কার করে তুমুল খ্যাতি অর্জন করেন। স্ব-শিখনে খেলোয়াড়ী জীবনে অগ্রসর হয়েছেন। জনৈক অটো রিক্সাচালকের সন্তান। চরম দারিদ্র্যতার মধ্যে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন। কোন ক্রিকেট একাডেমি কিংবা কারও কাছ থেকে ক্রিকেট শেখেননি। সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালীন ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। টেনিস বলের মাধ্যমে পাড়ার ক্রিকেটে অংশ নিতেন। শুরুতে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললেও পরবর্তীতে বোলার হিসেবে উত্তরণ ঘটান। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার উদ্দীপনায় পেশাদারী ক্রিকেটের দিকে ধাবিত হন। জনৈক বন্ধুর আমন্ত্রণে চারমিনার ক্রিকেট ক্লাবের অনুশীলনীতে অংশ নিয়ে প্রত্যেককেই বিমোহিত করেন। একটি খেলায় পাঁচ উইকেট পান। খুব দ্রুত রাজ্যের অনূর্ধ্ব-২৩ দলে নিজেকে জায়গা করে নেন।

২০১৫-১৬ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে হায়দ্রাবাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের পক্ষে খেলেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ খেলার সুবাদে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলী তাঁকে ভারতের টি২০আই দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করে।

১৫ নভেম্বর, ২০১৫ তারিখে দিল্লিতে সার্ভিসেস বনাম হায়দ্রাবাদের মধ্যকার প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। ২০১৭ সালে আইপিএলে ₹২.৬ কোটি রূপীর বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হন। ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বলে সুইং আনেন। এছাড়াও, বাউন্সার প্রদানে সক্ষম। রঞ্জী ট্রফিতে দ্বিতীয় মৌসুমে নয় খেলা থেকে ৪১ উইকেট নিয়ে সর্বাধিক উইকেট সংগ্রাহকে পরিণত হন। এরপর, বাদ-বাকী ভারতের পক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন। পরবর্তীতে জুলাই-আগস্ট, ২০১৭ সালে ভারত ‘এ’ দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন।

২০১৭ সাল থেকে ভারতের পক্ষে টেস্ট, ওডিআই ও টি২০আইয়ে অংশ নিচ্ছেন। ৪ নভেম্বর, ২০১৭ তারিখে রাজকোটে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি২০আইয়ে প্রথম খেলেন। কেন উইলিয়ামসনকে বিদেয় করে নিজস্ব প্রথম উইকেটের সন্ধান পান। ডিসেম্বর, ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে ওডিআই দলে তাঁকে ঠাঁই দেয়া হয়। ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯ তারিখে অ্যাডিলেড ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওডিআইয়ে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। খেলায় তিনি কোন উইকেট না পেলেও বিরাট কোহলি’র অপূর্ব শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ৬ উইকেটে জয় তুলে নেয়।

২০২০-২১ মৌসুমে বিরাট কোহলি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া সফর করেন। ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। শুভমান গিলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন করেন। ২/৪০ ও ৩/৩৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা অজিঙ্কা রাহানে’র দূর্দান্ত ব্যাটিংশৈলীর কারণে তাঁর দল ৮ উইকেটে জয়লাভ করে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

২০২১-২২ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে বিরাট কোহলি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১/৪৫ ও ২/৪৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৪* ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। কেএল রাহুলের দূর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সুবাদে সফরকারীরা ১১৩ রানে পরাভূত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

২০২৩ সালে রোহিত শর্মা’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সদস্যরূপে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ২০ জুলাই, ২০২৩ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। দারুণ খেলে খেলাটিকে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যান ও সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। খেলায় তিনি ৫/৬০ ও ০/২৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ঐ খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

এরপূর্বে, ১২ জুলাই, ২০২৩ তারিখে রোজিওতে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে ১/২৫ ও ১/১৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করে দলের বিজয়ে সম্যক ভূমিকা রাখেন। তবে, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের দূর্দান্ত বোলিং ও যশস্বী যশওয়ালের অনবদ্য ব্যাটিংয়ের কল্যাণে তাঁর দল ইনিংস ও ১৪১ রানে জয়লাভ করে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

২০২৩-২৪ মৌসুমে রোহিত শর্মা’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ৩ জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়ানৈপুণ্যের স্বাক্ষর প্রদর্শনে অগ্রসর হন ও ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে কে ভেরিনকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিংবিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৫/৬০। খেলায় তিনি ৬/১৫ ও ১/৩১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, শূন্য রানে রান-আউটের শিকার হন। তাঁর অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা তিনদিন বাকী থাকতেই ৭ উইকেটে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। পরবর্তীতে, এ পিচটিকে খেলার অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

২০২৪-২৫ মৌসুমে নিজ দেশে টম ল্যাথামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে ওয়াংখেড়েতে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ০/১৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে ০ ও ০* রান সংগ্রহ করেন। তবে, এজাজ প্যাটেলের স্মরণীয় বোলিং নৈপুণ্যে সফরকারীরা মাত্র ২৫ রানে জয়লাভ করলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

২০২৪-২৫ মৌসুমে যশপ্রীত বুমরা’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ৩ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে উসমান খাজা’র প্রথম উইকেট লাভ করে টেস্টে ১০০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি বল হাতে নিয়ে ৩/৫১ ও ১/৬৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ৩* ও ৪ রান সংগ্রহ করেন। স্কট বোল্যান্ডের অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্যে সফরকারীরা ৬ উইকেটে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

২০২৫ সালে শুভমান গিলের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্যরূপে ইংল্যান্ড সফরে যান। ৩১ জুলাই, ২০২৫ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৪/৮৬ ও ৫/১০৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে উভয় ইনিংসে শূন্য রানে বিদেয় নিলেও একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। বল হাতে নিয়ে অপূর্ব বোলিং কৃতিত্বের কারণে স্বাগতিকরা নাটকীয়ভাবে ৬ রানে পরাভূত হলে সিরিজটি ২-২ ব্যবধানে শেষ হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।