Skip to content

২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৬২ তারিখে ওয়েলিংটনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও প্রশাসক। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৯০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

সীমিত-ওভারের ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে দারুণ খেলতেন। নিখুঁত নিশানা বরাবর বল ফেলে ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হন। তবে, বলের তুলনায় ব্যাট হাতেই অধিক কার্যকর ভূমিকা পালন করতেন।

১৯৮৪-৮৫ মৌসুম থেকে ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ওয়েলিংটনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দুইটিমাত্র শতরানের সন্ধান পেয়েছেন। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৬১ রান তুলেছেন।

‘পোস্টম্যান’ ডাকনামে দলীয়সঙ্গীরা তাঁকে ডাকতেন। কিউই দলীয় ব্যবস্থাপক জন গ্রাহাম তাঁর এ ধরনের ডাকনামের বিষয়ে মন্তব্য করেন যে, ‘তিনি পুরোটা সময় জুড়েই পেশাদারীত্ব, নিজের অবস্থান, প্রতিদ্বন্দ্বিতামুখর মনোভাব ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সচেষ্ট ছিলেন।’ উইলি ওয়াটসন, ক্রিস হ্যারিস ও গেভিন লারসেনকে একত্রে ‘ডিবলি-ডবলি-উইবলি-উবলি’ নামে আখ্যায়িত করা হতো। তাঁরা পেস বোলিংয়ে জোর না দিয়ে উইকেট লক্ষ্য করে বল ফেলতেন ও প্রতিপক্ষের রান সংগ্রহে স্থবিরতা নিয়ে আসতেন।

১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সব মিলিয়ে ১০-এর অধিক টেস্টে অংশ নিতে না পারলেও ১২১টি ওডিআই থেকে ১১৩ উইকেট দখল করেন ও ওভারপ্রতি ৩.৭৬ গড়ে রান খরচ করেছেন। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে নিজ দেশে ভারতের মুখোমুখি হন। ১ মার্চ, ১৯৯০ তারিখে ডুনেডিনে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের সূত্রপাত ঘটান।

১৯৯৪ সালে কেন রাদারফোর্ডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২ জুন, ১৯৯৪ তারিখে নটিংহামে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। হিথ ডেভিসের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৮ ও ২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/১১৬ বোলিং বিশ্লেষণসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। গ্রাহাম গুচের দ্বি-শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ৯০ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

১৯৯৪ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত অস্ট্রালেশিয়ান কাপে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে যান। নিজ দেশে শচীন তেন্ডুলকরকে বিদেয় করে ওডিআইয়ে শততম উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। অকল্যান্ডে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ৪/২৪ লাভ করেন। এ পর্যায়ে সাঈদ আনোয়ার ও ইনজামাম-উল-হকের ন্যায় তারকা খেলোয়াড় তাঁর শিকারে পরিণত হন। খেলোয়াড়ী জীবনে স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়ে বেশ সজাগ ছিলেন ও খুব কমই খেলা থেকে দূরে অবস্থান করতেন।

১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে লি জার্মনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ২৭ এপ্রিল, ১৯৯৬ তারিখে সেন্ট জোন্সে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১/৬৯ ও ১/২৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১৭* রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

১৯৯২, ১৯৯৬ ও ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় নিউজিল্যান্ড দল সেমি-ফাইনাল অবদি পৌঁছে। এ পর্যায়ে তিনি ওভারপ্রতি মাত্র ৩.৪৬ রান খরচ করেছিলেন। বিশ্বকাপ শেষে ক্রিকেট জগৎকে বিদেয় জানান। ছন্দ হারানোসহ আঘাতের কারণে তাঁকে খেলা থেকে চলে আসতে হয়েছিল।

মার্টিন ক্রো’র স্নেহধন্য ছিলেন। তাঁর দৃষ্টিতে ‘মার্টিন ক্রো অপূর্ব দক্ষতার সাথে দলকে পরিচালনা করেছিলেন। তিনি বেশ বিচক্ষণ ছিলেন। তাঁকে তিনি গ্র্যান্ডমাস্টার হিসেবে চিত্রিত করেছেন।’ ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সাথে বড় ধরনের ব্যবসায়িক চুক্তিতে উপনীত হন। প্রায় সিকি শতাব্দী ধরে ওয়েলিংটন ক্রিকেটের সাথে যুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, নিজ দেশে সিরিজগুলোয় ধারাভাষ্যকর্ম চালিয়ে যান। ৮ জুলাই, ২০১৫ তারিখে দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য হন।