Skip to content

জক ক্যামেরন

1 min read

৫ জুলাই, ১৯০৫ তারিখে কেপ প্রভিন্সের পোর্ট এলিজাবেথে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

কখনোবা ‘হার্বি’ ডাকনামে পরিচিতি পেয়েছেন। নাটালভিত্তিক হিল্টন কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। সেখানে প্রথম একাদশের পক্ষে ক্রিকেট খেলতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সেরা উইকেট-রক্ষক ছিলেন। বেশ সাহসী ভঙ্গীমায় মারকুটে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ১৯২৪-২৫ মৌসুম থেকে ১৯৩৪-৩৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ইস্টার্ন প্রভিন্স, ট্রান্সভাল ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

১৯২৪-২৫ মৌসুমে ট্রান্সভালের সদস্যরূপে সম্মানীয় এল.এইচ. টেনিসনের নেতৃত্বাধীন সফররত এমসিসি দলের বিপক্ষে খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে প্রবেশ করেন। ট্রান্সভালের পক্ষে শুরুটা ধীরলয়ে সূচনা করলেও ১৯২৫-২৬ মৌসুমের পর থেকে উইকেট-রক্ষক হিসেবে ক্রমাগত দক্ষতা ও মারকুটে ব্যাটিংয়ের অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হতে থাকেন। ১৯২৭ সালে ইস্টার্ন প্রভিন্সের বিপক্ষে ১৩২ রানের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো শতক হাঁকান। ফলশ্রুতিতে, দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন।

১৯২৭ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ২৬ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯২৭-২৮ মৌসুমে নিজ দেশে রনি স্ট্যানিফোর্থের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের বিপক্ষে খেলেন। পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া টেস্ট সিরিজের সবকটিতেই তাঁর অংশগ্রহণ ছিল। ২৪ ডিসেম্বর, ১৯২৭ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। শান্টার কোয়েন, জ্যাকোবাস ডুমিনি, হেনরি প্রমিৎজ, ডেনিস মরকেলের ও সিরিল ভিনসেন্টের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ২০ ও ৫ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দীকরণে অগ্রসর হন। সফরকারীরা ১০ উইকেটে জয় পেলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ২১ জানুয়ারি, ১৯২৮ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ২০ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ২১ ও ৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

একই মাঠে নিজস্ব চতুর্থ টেস্টে সংগৃহীত দশটি অর্ধ-শতকের প্রথমটি তুলে নেন। ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬৪ রান তুলে দলকে ৪ উইকেট জয় এনে দেন।

টেস্টে দারুণ ছন্দে অবস্থান করে ১৯২৯ সালে নামি ডিনের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড সফরে অবশ্যম্ভাবীভাবে জায়গা করে নেন। এ সফরে ৯৫১ রান ও ৫৭টি ডিসমিসাল ঘটিয়েছিলেন। ১৫ জুন, ১৯২৯ তারিখে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হয়ে দুইটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ২৯ জুন, ১৯২৯ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত শূন্য ও দলীয় সংগ্রহ ৮৬/৫ থাকাকালে আঘাতের কবলে পড়েন। হ্যারল্ড লারউডের গুড লেন্থের বল আকস্মিকভাবে লাফিয়ে উঠলে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান। এক পর্যায়ে মাটিতে পড়ে যান। এরফলে, তিন সপ্তাহ খেলায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। খেলায় তিনি ৩২ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, উইকেটের পিছনে অবস্থান করে তিনটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দীকরণে অগ্রসর হন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয় ও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

এ সফরের একটি প্রস্তুতিমূলক খেলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। সমারসেটের বিপক্ষে সাতটি ডিসমিসাল ঘটান। তন্মধ্যে, ছয়টি গ্লাভসবন্দী করেন। এ সফরের সবগুলো খেলায় অংশ নিয়ে ৩২.৬৩ গড়ে ১০৭৭ রান তুলেন।

১৯৩১-৩২ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে স্প্রিংবকের দায়িত্বে থেকে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩২ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। স্মর্তব্য যে, নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার এটিই প্রথম টেস্ট ছিল। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে দলের একমাত্র ইনিংসে তিনি ৪৭ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। এ পর্যায়ে একবার পাঁচ রানের সন্ধান পেয়েছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ ও তিনটি স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজেকে জড়ান। খেলায় সফরকারীরা ইনিংস ও ১২ রানে জয়লাভ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৩৫ সালে হার্ভি ওয়েডের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন ও বিজয়ীর বেশে দেশে ফিরে আসেন। তবে, অল্প কিছুদিন পরই মৃত্যুমুখে পতিত হন। ১৭ আগস্ট, ১৯৩৫ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৮ ও ৪২ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, উইকেটের পিছনে অবস্থান করে দুইটি ক্যাচ ও সমসংখ্যক স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজেকে জড়ান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

২ নভেম্বর, ১৯৩৫ তারিখে জোহানেসবার্গের জুবার্ট পার্ক এলাকায় মাত্র ৩০ বছর ১২০ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।