উমেশ কুলকার্নি
৭ মার্চ, ১৯৪২ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের আলীবাগে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৬০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
খুব স্বল্পসংখ্যক খেলোয়াড়কেই তাঁর ন্যায় তরতর করে উপরের দিকে চলে যেতে দেখা যায়। তবে, কোন দিক দিয়ে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবন সুখকর ছিল না। বলে নিখুঁতভাব বজায়ে সচেষ্ট থাকতেন ও উপযোগী পরিবেশে বলকে সুইং করানোয় দক্ষ ছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুর দিনগুলোয় বিনু মানকড়ের ছত্রচ্ছায়ায় নিজেকে গড়ে তুলেন। বলকে কিভাবে ধরতে হয়, ওভার দ্য উইকেটে কিভাবে বোলিং করতে হয় তা শেখেন। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুম থেকে ১৯৬৯-৭০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বোম্বের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমের ইরানী কাপে অংশ নেন। প্রাপ্ত পাঁচ উইকেটের তিনটিই ব্যাটিংয়ে পারদর্শী খেলোয়াড়কে বিদেয় করেন।
১৯৬৭ থেকে ১৯৬৮ সময়কালে ভারতের পক্ষে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে চান্দু বোর্দে’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড গমনের উদ্দেশ্যে তাঁকে রাখা হয়। এ সফরেই টেস্টগুলো খেলেছিলেন। ৪৭.৬০ গড়ে মাত্র পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৬৭ তারিখে অ্যাডিলেডে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। সৈয়দ আবিদ আলী’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। আট-বল নিয়ে গড়া ওভারে ৯ ওভার বোলিংয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসে বিল লরি’কে প্রথম বলেই বিদেয় করেন। খেলায় স্বাগতিক দল ১৪৬ রানে জয়লাভ করে ও চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
ঐ সিরিজে গাব্বা ও এসসিজিতে আরও দুই টেস্টে অংশ নিয়ে ২ উইকেট দখল করেন। গাব্বায় ব্যাট হাতে নিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে দৃঢ়তার পরিচয় দেন। ২৮ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে ১ রান তুলেছিলেন।
একই মৌসুমে মনসুর আলী খান পতৌদি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের নিউজিল্যান্ড সফরে যান। সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের বিপক্ষে চার উইকেট পেলে ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৮ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে পুণরায় তাঁকে খেলানো হয়। তবে, উইকেট শূন্য অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। বল হাতে নিয়ে খেলায় তিনি ০/৩৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ০* ও ১* রান সংগ্রহ করেছিলেন। ঐ টেস্টে সফরকারীরা ছয় উইকেটে পরাজিত হয় ও চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-১ ব্যবধানে এগুতে থাকে।
এরপর আর কোন টেস্ট খেলেননি কিংবা রঞ্জী ট্রফির কোন খেলায় অংশ নেননি। পরের বছর বোম্বের সদস্যরূপে ইরানী কাপে অংশ নিয়েছিলেন। খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পূর্বে কয়েকটি অর্থ তহবিল গঠনের খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ২৮ বছর বয়সে আঘাতের কারণে খেলা থেকে নিজেকে সড়িয়ে নেন।
রামাকান্ত দেশাইয়ের চেয়ে এক ইঞ্চি বেশী থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে পাঁচ ফুট পৌনে সাত ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে সিমার হিসেবে খেলতেন। দ্য ক্যানবেরা টাইমসের সংবাদ প্রতিনিধি বিল ফিপার্ড তাঁকে ‘মিডিয়াম-পেসের বাঁধা পেরিয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেন। তবে, একই দৈনিকের রোহন রিভেট লিখেছেন যে, ‘প্রকৃতই তিনি বলকে সুইং করানোয়’ সক্ষম ছিলেন।
মাত্র ২৯টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ৩৯.৯৫ গড়ে ৪০ উইকেট পেলেও কোন পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পাননি। বোম্বে দলের স্বর্ণযুগে খেলেছেন। নিচেরসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। আট গড়ে রান পেয়েছেন ও সর্বোচ্চ করেছেন অপরাজিত ২৬ রান। ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। টাটায় কাজ করতেন। টাইমস শীল্ডে টাটার পক্ষে খেলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর টাটা স্পোর্টসের সাথে সিলন সফর করেন।