১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮১ তারিখে ট্রান্সভালের জোহানেসবার্গে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও প্রশাসক। দলে তিনি মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

হটনে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন। কিং এডওয়ার্ড স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। সেখানেই তিনি ক্রিকেট খেলা শিখতে শুরু করেন। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুম থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে কেপ কোবরাজ, গটেং ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেট ও সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, আফ্রিকা একাদশ, আইসিসি বিশ্ব একাদশ, হ্যাম্পশায়ার ক্রিকেট বোর্ড, পুনে ওয়ারিয়র্স ও রাজস্থান রয়্যালসের পক্ষে খেলেছেন।

২০০২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ১১৭ টেস্ট, ১৯৭টি ওডিআই ও ৩৩টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। ২০০১-০২ মৌসুমে নিজ দেশে স্টিভ ওয়াহ’র নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০০২ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দ্বাদশ খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলে। অ্যাডাম গিলক্রিস্টের অসাধারণ দ্বি-শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৩৬০ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ৮ মার্চ, ২০০২ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। অ্যান্ড্রু হল ও ডিওয়াল্ড প্রিটোরিয়াসের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৩ ও ৬৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, শেন ওয়ার্নের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৪ উইকেটে জয় পেলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। এরপর, একই সফরের ৩০ মার্চ, ২০০২ তারিখে ব্লোমফন্তেইনে প্রথমবারের মতো ওডিআইয়ে অংশ নেন।

২০০২-০৩ মৌসুমে নিজ দেশে খালেদ মাসুদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের মুখোমুখি হন। ১৮ অক্টোবর, ২০০২ তারিখে ইস্ট লন্ডনে অনুষ্ঠিত সফররত বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন ও কয়েকবার ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৬৮ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে টেস্টে নিজস্ব প্রথম শতরানের ইনিংস খেলেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ২০০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অনবদ্য দ্বি-শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১০৭ রানে জয় পেলে সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

শতাব্দী পাড় হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে পাতানো খেলায় অংশ নেয়ার কারণে টালমাটাল থাকা অবস্থায় গ্রায়েম স্মিথের জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তি ঘটে। ২০০৩ সালে নিজ দেশে অনুষ্ঠিত আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় স্বাগতিক দেশের বাজে ফলাফলের কারণে অধিনায়ক শন পোলকের পদত্যাগের ফলে তাঁকে নেতৃত্বের সুযোগ এনে দেয়। এরপর থেকে অদ্যাবধি দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা অধিনায়ক হিসেবে তাঁর উত্থান ঘটে। সর্বমোট ১০৯টি খেলায় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

২২ বছর বয়সে ২০০৩ সালে অধিনায়কত্ব লাভ করেন। অধিনায়কের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যাটিং ও গ্লাভস নিয়ে দলে অবস্থান করেছেন। ঐ বছর দলকে নিয়ে ইংল্যান্ড সফরে যান। উপর্যুপরী দুই টেস্টে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বি-শতরানের ইনিংস খেলেন। তন্মধ্যে, একটি ইনিংস ছিল ২৭৭ রানের ও তৎকালীন দক্ষিণ আফ্রিকান রেকর্ড হিসেবে চিত্রিত হয়েছিল। আরেকটি লন্ডনের জনপ্রিয় ক্রিকেট মাঠ লর্ডসে ২৫৯ রান তুলে লর্ডস অনার্স বোর্ডে ঠাঁই করে নেন। এটি লর্ডসে যে-কোন বিদেশী খেলোয়াড়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। ৩১ জুলাই, ২০০৩ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে এ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পাশাপাশি, মাখায়া এনটিনি’র দূর্দান্ত বোলিংশৈলী ও তাঁর দ্বি-শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৯২ রানে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। খেলায় তিনি মাখায়া এনটিনি’র সাথে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

২০০৩-০৪ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। এ পর্যায়ে স্প্রিংবকের নেতৃত্বে ছিলেন। ১০ মার্চ, ২০০৪ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ২৫ ও ৫ রান সংগ্রহসহ ০/১৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করেছিলেন। জ্যাক ক্যালিসের অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ২৬ মার্চ, ২০০৪ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ১ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টের পঞ্চম দিন গ্যারি কার্স্টেনকে (৭৬) সাথে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ১৭১ রানের জুটি গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার নতুন রেকর্ড গড়েন। ব্যাট হাতে ৪৭ ও ১২৫* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে ঐ খেলায় স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে পরাজিত হলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

২০০৪-০৫ মৌসুমে প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে স্প্রিংবককে নেতৃত্ব দিয়ে ভারত সফরে যান। ২০ নভেম্বর, ২০০৪ তারিখে কানপুরে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৩৭ ও ৪৭ রান সংগ্রহ করেন। অ্যান্ড্রু হলের অসাধারণ অল-রাউন্ড কৃতিত্বে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ২৮ নভেম্বর, ২০০৪ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৬ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ২৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ০ ও ৭১ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/১৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। হরভজন সিংয়ের অসাধারণ বোলিংয়ের সুবাদে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

২০০৭-০৮ মৌসুমে নিজ দেশে ডোয়াইন ব্র্যাভো’র নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ১০ জানুয়ারি, ২০০৮ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১৪৭ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। তবে, অ্যাশওয়েল প্রিন্সের অসাধারণ শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১০০ রানে জয় পেলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।

২০০৮ সালে স্প্রিংবকের নেতৃত্বে থেকে ইংল্যান্ড গমন করেন। পুরো সিরিজে অসাধারণত্বের পরিচয় দেন। ৭ আগস্ট, ২০০৮ তারিখে ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৪৬ ও ০ রান সংগ্রহসহ পাঁচটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হন। তবে, প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক কেভিন পিটারসনের অসাধারণ শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ৬ উইকেটে পরাজয়বরণ করলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। এ সিরিজে ৩৬৯ রান সংগ্রহ করে কেভিন পিটারসনের সাথে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

২০০৮-০৯ মৌসুমে স্প্রিংবকের নেতৃত্বে থেকে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ১৭ ডিসেম্বর, ২০০৮ তারিখে পার্থে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৬০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৪৮ ও ১০৮ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে মিচেল জনসনের শিকারে পরিণত হন। পাশাপাশি, তিনটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এবি ডি ভিলিয়ার্সের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে সফরকারীরা ৬ উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই মৌসুমে নিজ দেশে ফিরতি সফরে রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ০ ও ৬৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, মিচেল জনসনের অসাধারণ অল-রাউন্ড কৃতিত্বে স্বাগতিকরা ১৬২ রানে পরাভূত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

২০১১-১২ মৌসুমে নিজ দেশে মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ৯ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৭৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি রান ৩৭ ও ১০১* সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, অভিষেকধারী ভার্নন ফিল্যান্ডারের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ১৭ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে জোহানেসবার্গের নিউ ওয়ান্ডারার্সে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ১১ ও ৩৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, অভিষেক ঘটা প্যাট কামিন্সের অসাধারণ ক্রীড়াশৈলীর সুবাদে সফরকারীরা ২ উইকেটে জয় পেলে সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে ড্রয়ে পরিণত হয়।

একই মৌসুমে স্প্রিংবকের নেতৃত্বে থেকে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ৭ মার্চ, ২০১২ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। খেলায় তিনি ৫৩ ও ১১৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, চারটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর বদান্যতায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

২৩ মার্চ, ২০১২ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৪ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৮০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৫ ও ৪১ রান সংগ্রহ করেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলেও সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।

২০১২-১৩ মৌসুমে স্প্রিংবককে নেতৃত্ব দিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ৩০ নভেম্বর, ২০১২ তারিখে পার্থে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৮৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১৬ ও ৮৪ রান সংগ্রহসহ ছয়টি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, হাশিম আমলা’র অনবদ্য শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ৩০৯ রানে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।

২০১৩-১৪ মৌসুমে অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। ২৩ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। দলের একমাত্র ইনিংসে ২৩৪ রানের মনোমুগ্ধকর ইনিংস খেলেন। তাঁর অনবদ্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে ইনিংস ও ৯২ রানে জয় পেলে দক্ষিণ আফ্রিকা দল দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ করতে সক্ষম হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

একই মৌসুমে নিজ দেশে মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ১ মার্চ, ২০১৪ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৫ ও ৩ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, ডেভিড ওয়ার্নারের জোড়া শতকে স্বাগতিকরা ২৪৫ রানে পরাজয়বরণ করলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

২০০৪ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকার ক্রিকেট পরিচালক হিসেবে মনোনীত হন। তবে, তাঁর ক্রিকেট পরিচালক হিসেবে নিযুক্তির প্রশ্নে অবৈধপন্থা গ্রহণের অভিযোগ আসে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশকালীন বিকিনী মডেল মিঙ্কি ফন দার ওয়েস্থুইজেনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। মর্গ্যান ডিন নাম্নী আইরিশ গায়িকার সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির ক্যান্ডেন্স নাম্নী কন্যা ও কার্টার নামীয় পুত্র রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সরব রয়েছেন।

Similar Posts

  • | | | | |

    অজিত ওয়াড়েকর

    ১ এপ্রিল, ১৯৪১ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ, রেফারি ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে মিডিয়াম কিংবা স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। লিকলিকে গড়নের অধিকারী হলেও বলে সপাটে আঘাত করতে পারতেন। নিজস্ব ব্যাটিং কৌশল গ্রহণে অগ্রসর…

  • |

    সেনুরান মুতুস্বামী

    ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪ তারিখে ডারবানে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। বামহাতে মাঝারিসারির নিচেরদিকে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘সেন’ ডাকনামে পরিচিতি পেয়েছেন। ডারবানভিত্তিক ক্লিফটনে অধ্যয়ন করেছেন। প্রথম গ্রেড থেকেই উচ্চ সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ লাভ করতে থাকেন। প্রাদেশিক পর্যায়ের অনূর্ধ্ব-১১ থেকে…

  • | |

    হান্সি ক্রোনিয়ে

    ২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৯ তারিখে অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের ব্লোমফন্তেইনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতার স্বাক্ষর রেখেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৭-৮৮ মৌসুম থেকে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ফ্রি স্টেট ও…

  • |

    সৌম্য সরকার

    ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩ তারিখে সাতক্ষীরায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। বামহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ে পারদর্শী। বাংলাদেশের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পিতার ন্যায় শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হতে চেয়েছিলেন। দর্শনীয় ব্যাটিংশৈলীর অধিকারী ও মিডিয়াম পেস বোলিং করে থাকেন। কিশোর অবস্থাতেই দর্শনীয়ভাবে ব্যাটিং করতে অভ্যস্ত ছিলেন। মিডিয়াম পেস বোলিংয়েও যথেষ্ট…

  • | | |

    মাইকেল ক্লার্ক

    ২ এপ্রিল, ১৯৮১ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের লিভারপুল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সকল স্তরের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। লেস ক্লার্ক ও ডেবি ক্লার্ক দম্পতির সন্তান। ‘পাপ’ কিংবা ‘ক্লার্কি’ ডাকনামে ভূষিত…

  • |

    রেগ পার্কস

    ৪ অক্টোবর, ১৯১১ তারিখে হিয়ারফোর্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। দলে মূলতঃ বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকই তাঁকে সর্বাপেক্ষা উপেক্ষিত বোলার হিসেবে চিত্রিত করেছেন। অথচ, ১৯৩০-এর দশক থেকে ১৯৫০-এর দশক পর্যন্ত ওরচেস্টারশায়ারের প্রধান বোলিং চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন। ক্রিকেটপ্রেমী…