৩ মে, ১৯৯০ তারিখে ভিক্টোরিয়ার মেলবোর্নে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নেমে থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
‘পাট্টো’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছেন। ১.৮৬ মিটার উচ্চতার অধিকারী। ইংরেজ পিতা-মাতার সন্তান। শতাব্দীর অধিক সময় পর প্রথম ভ্রাতৃদ্বয় হিসেবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের সদস্যরূপে খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট-বোলারদের রাজত্বে অন্যতম অংশীদার। গ্লেন ম্যাকগ্রা ও ব্রেট লি’র পর অস্ট্রেলিয়ার সেরা ফাস্ট বোলার হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। ভিক্টোরিয়ান প্রিমিয়ার লীগে ড্যান্ডেনং সিসি’র পক্ষে খেলেছেন। ২০০৮ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে পাঁচটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।
২০০৮-০৯ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া পর্যায়ে প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়া ও ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। এছাড়াও, মেলবোর্ন রেনেগাডেস, ব্রিসবেন হিট, ড্যান্ডেনং, কলকাতা নাইট রাইডার্স ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পক্ষে খেলেছেন।
২১ নভেম্বর, ২০০৮ তারিখে পার্থের ওয়াকায় ভিক্টোরিয়ার সদস্যরূপে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। ২৩ ডিসেম্বর, ২০০৯ তারিখে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে লিস্ট-এ ক্রিকেটে রেকর্ড ভঙ্গ করেন। এসসিজিতে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে ৬/৪৮ লাভ করেছিলেন।
২০১৭ সালে নটিংহ্যামশায়ারের ক্যাপ লাভ করেন। ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে কিছু দারুণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০১১ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে টেস্ট, ওডিআই ও টি২০আইয়ে অংশ নিচ্ছেন। ১৩ এপ্রিল, ২০১১ তারিখে ঢাকায় স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন।
২০১১-১২ মৌসুমে নিজ দেশে রস টেলরের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। পুরো সিরিজে অসাধারণত্বের পরিচয় দেন। ১ ডিসেম্বর, ২০১১ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। মিচেল স্টার্ক ও ডেভিড ওয়ার্নারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপনে সচেষ্ট হন। দল নির্বাচকমণ্ডলীর আস্থা অর্জনে সচেষ্ট হন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫/২৭ বোলিং করেন। এছাড়াও, প্রথম ইনিংসে ১/৬৪ লাভ করেন। এরফলে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন তিনি। পাশাপাশি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৯ উইকেটে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
একই সফরের ৯ ডিসেম্বর, ২০১১ তারিখে হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। প্রথম ইনিংসে ১৩ রানে পৌঁছানোকালে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। ১৭ ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, আরও একবার পাঁচ-উইকেট পান। বল হাতে নিয়ে ৫/৫১ ও ৩/৫৪ লাভ করেন। ডেভিড ওয়ার্নারের অসাধারণ শতক সত্ত্বেও স্বাগতিকরা ৭ রানে পরাজিত হলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। এ সিরিজে ৩৩ রান সংগ্রহসহ ১৪ উইকেট দখল করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কর লাভ করেন।
২০১২-১৩ মৌসুমে নিজ দেশে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ২২ নভেম্বর, ২০১২ তারিখে অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৩৭ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ৪২ ও ২৯* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ০/৪১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, ফাফ ডু প্লিসি’র অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
পরবর্তীতে, ভারতের বিপক্ষে দুইবার চার উইকেট করে পেয়েছিলেন। এরপর, আঘাতে জর্জরিত খেলোয়াড়ী জীবনে প্রথমবারের মতো আঘাতের কবলে পড়েন। ২০১৩ সালে চেন্নাইয়ের নিশ্চল পিচ থেকেও ৫/৯৬ পান। তাসত্ত্বেও, দূর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁকে দলের শোচনীয় পরাজয় অবলোকন করতে হয়।
তিন বছরের অধিক সময় দলের বাইরে থাকার পর ২০১৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজে অংশ নেন। দুই টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ২০২০ সালে আইপিএল খেলতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে যোগ দেন। ২০১৯-২০ মৌসুমে নিজ দেশে টম ল্যাথামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ৩ জানুয়ারি, ২০২০ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। একবার ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পেয়ে ২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৫৮ ও ০/৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। পাশাপাশি, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, মারনাস লাবুসেনের অসাধারণ ব্যাটিং সাফল্যে স্বাগতিকরা ২৭৯ রানে জয় পেয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
নটস ও ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্বকারী ড্যারেন প্যাটিনসন সম্পর্কে তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা।
