|

লধা রামজী

১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯০০ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের গুজরাতের পিদরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৩০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

ফাস্ট বোলিং করতেন। কনিষ্ঠ ভ্রাতা অমর সিংয়ের জন্মগ্রহণের এক দশক পূর্বে তাঁর জন্ম। তাঁর পেস বোলিং যথেষ্ট কার্যকর ছিল। নিখুঁত নিশানায় বাউন্স করাতে পারতেন, ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হতেন, ব্যাটসম্যানকে বিদেয় করতে। অনেকেই আঘাত থেকে আত্মরক্ষার্থে বিদেয় নিতেন। ১৯২৩-২৪ মৌসুম থেকে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯২৬-২৭ মৌসুমে আর্থার জিলিগানের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দল ভারত সফরে আসলে নিচেরসারির ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বোলিং না করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

সব মিলিয়ে ১৯২৩-২৪ মৌসুম থেকে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম পর্যন্ত ২৭টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৭.৩৭ গড়ে ও ৩৮ স্ট্রাইক রেটে ১২৫ উইকেট দখল করেন। কেবলমাত্র হিন্দু দলের সদস্যরূপে ১০ খেলা থেকে ১৭ গড়ে ৬২ উইকেট পেয়েছিলেন। ১৯২৭-২৮ মৌসুমে ইউরোপিয়ান্সের বিপক্ষে ৬/৯২ ও ৭/৪১ পান। দুই বছর পর মুসলিমের বিপক্ষে ২/২৬ ও ৮/৫৫ লাভ করেছিলেন। ১৯৩১-৩২ মৌসুমে অন্যতম স্মরণীয় খেলা উপহার দেন। ফ্রিলুটার্সের সদস্যরূপে ভিজ্জি তাঁকেসহ অমর সিংকে দলে রাখলে উভয় ২০ উইকেট নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করেন। ৮/১৪ ও ৪/৩২ নিয়ে নিজামের স্টেট রেলওয়ে ‘এ’ দলকে গুড়িয়ে দেন। তিনি খেলায় ৪৬ রানে ১২ ও অমর সিং ৭৩ রানে ৮ উইকেট দখল করেছিলেন।

১৯৩৩ সালে ভারতের পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৩৩-৩৪ মৌসুমে নিজ দেশে ডগলাস জার্ডিনের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্ট বোম্বেতে অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৮৩ তারিখে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। লালা অমরনাথ, লক্ষ্মীদাস জাই, বিজয় মার্চেন্ট ও রুস্তমজী জামশেদজী’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ টেস্টে অমর সিংকে পাশ কাটিয়ে নতুন বল নিয়ে মোহাম্মদ নিসারের সাথে বোলিং আক্রমণে অংশ নেন। তবে, প্রথম ইনিংসে তিনি কোন উইকেটের সন্ধান পাননি। ইংল্যান্ড দল ৯ উইকেটে জয় পেলে তিনি আর বোলিং করার সুযোগ পাননি ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

অসম্ভব প্রতিভাবান হওয়া সত্ত্বেও ভারত দলে আর খেলার সুযোগ পাননি। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিমত, অমর সিংয়ের তুলনায় তিনি দ্রুতগতিসম্পন্ন ছিলেন। দূর্ভাগ্যজনকভাবে ভারতের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেট ও রঞ্জী ট্রফিতে অংশগ্রহণকালীন তিনি তাঁর স্বর্ণালী সময় থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলেন। তাসত্ত্বেও, বোম্বে কোয়াড্রাঙ্গুলারে গতিসম্পন্ন পেস বোলিংকালে দর্শকদের ‘হর হর মহাদেব’ ধ্বনি সহকারে বিরাট সহায়তা পেয়েছিলেন। ১৯৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দেন।

দূর্ভাগ্যবশতঃ কনিষ্ঠ ভ্রাতার ন্যায় তিনিও অল্প বয়সেই দেহত্যাগ করেন। গ্যাংগ্রিনে আক্রান্ত হন ও পা কেটে ফেলতে অস্বীকৃতি জানান। এছাড়াও তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। ২০ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে গুজরাতের রাজকোটে মাত্র ৪৮ বছর ৩১৪ দিন বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Similar Posts

  • | |

    ডিন এলগার

    ১১ জুন, ১৯৮৭ তারিখে অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের ওয়েলকম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। বামহাতে ব্যাটিং করে থাকেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি (১.৭৩ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটিয়ে থাকেন। ২০০৫ সালে ফ্রি স্টেটের পক্ষে…

  • | |

    হাশিম আমলা

    ৩১ মার্চ, ১৯৮৩ তারিখে নাটালের ডারবানে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম কিংবা ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরিবারে…

  • | |

    জর্জ হ্যাডলি

    ৩০ মে, ১৯০৯ তারিখে পানামার কোলনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। পানামার ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ে তাঁর জন্ম। ১৯১৯ সালে মাতা তাঁর জন্মস্থান জ্যামাইকায় তাঁকে প্রেরণ করেন। তাঁকে ইংরেজী ভাষী বিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর হয়। সেখানেই…

  • | |

    এনামুল হক, ১৯৬৬

    ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ তারিখে কুমিল্লায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও আম্পায়ার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, কার্যকর স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিয়ে পারদর্শী ছিলেন। বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘মণি’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম থেকে ২০০২-০৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিনিধিত্ব…

  • |

    সিড ও’লিন

    ৫ মে, ১৯২৭ তারিখে কেপ প্রভিন্সের অটশুর্ন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। এছাড়াও, বামহাতে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ১৯৬০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। জন্মসনদে তাঁকে সিডনি ও’লিনস্কি নামে পরিচিতি ঘটানো হয়েছিল। ১৯৪৫-৪৬ মৌসুম থেকে ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ…

  • | |

    জোনাথন অ্যাগ্নিউ

    ১৪ এপ্রিল, ১৯৬০ তারিখে চেশায়ারের ম্যাকলসফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করতেন। ১৯৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী জোনাথন অ্যাগ্নিউ ‘স্পাইরো কিংবা ‘অ্যাজার্স’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। আপিংহাম স্কুলে…