১১ মার্চ, ১৯৩৭ তারিখে ক্যান্টারবারির টিমারু এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৬০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
সর্বদাই তাঁকে আর্টি ডিক ও এরিক পেট্রি’র সহকারী হিসেবে খেলতে হয়েছে। বিশ্বস্ত উইকেট-রক্ষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ব্যাপকভাবে তেমন সফলতার সন্ধান না পেলেও নিচেরসারিতে বেশ খাঁটিমানের প্রতিরক্ষাব্যূহ গড়ে তুলতে পারতেন। কিন্তু, শুরুরদিকের সফলতাকে পরবর্তীতে আর ধরে রাখতে পারেননি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তাঁকে দলে রাখা হলেও কেবলমাত্র দুইটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় রাখা হয়েছিল। পঞ্চাশের দশকের শেষদিক থেকে ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত দলে অস্থায়ী সদস্যের মর্যাদা পান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণের জন্যে ১৯৬৩-৬৪ মৌসুম পর্যন্ত অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়েছিল। দক্ষতার সাথে উইকেট-রক্ষণ সামলে নিলেও দলে নিয়মিত সদস্যের প্রশ্নে নিজেকে তুলে ধরতে পারেননি।
১৯৫৭-৫৮ মৌসুম থেকে ১৯৭০-৭১ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে ক্যান্টারবারির পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। তবে, সাউথ আইল্যান্ড বনাম নর্থ আইল্যান্ডের মধ্যকার খেলায় দারুণ ভূমিকা রাখার সুবাদে ১৯৫৮ সালে ইংল্যান্ড গমনার্থে নিউজিল্যান্ড দলে অন্তর্ভুক্তিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
১৯৬৪ থেকে ১৯৬৮ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আটটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৫০-এর দশকের শেষদিক থেকে ১৯৬০-এর দশকের সূচনালগ্ন পর্যন্ত সর্বদাই নিউজিল্যান্ড দলে আসা-যাবার পালায় থাকতেন। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে নিজ দেশে ট্রেভর গডার্ডের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৪ তারিখে ওয়েলিংটনে জন রিডের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্টে অংশ নেন। গ্রাহাম গেডি’র সাথে তাঁর একযোগে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
তবে, আঘাতপ্রাপ্তি ও আর্টি ডিকের ব্যাটিংয়ের সাথে তাল মেলানোর প্রশ্নে দলের বাইরে চলে যেতে হয়। ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে জন রিডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ভারত সফরে যান। এ সফরে দলের একমাত্র উইকেট-রক্ষক ছিলেন। ২ মার্চ, ১৯৬৫ তারিখে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে খেলেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৫* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানে পরিণত হয়। শেষ উইকেট জুটিতে রিচার্ড কলিঞ্জের সাথে ৬১ রান যুক্ত করেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৬৫ সালে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ বছর জন রিডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ৮ জুলাই, ১৯৬৫ তারিখে লিডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০* ও ২* রান সংগ্রহ করেছেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দীকরণে অগ্রসর হন। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৮৭ রানে জয় পেলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।
১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে নিজ দেশে মনসুর আলী খান পতৌদি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ৭ মার্চ, ১৯৬৮ তারিখে অকল্যান্ডে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ১০* ও ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেন। সফরকারীরা ২৭২ রানে জয় পেলে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
জন রিড মন্তব্য করেন যে, তিনি বেশ সহজেই নিজের সময়কালে নিউজিল্যান্ডের সেরা উইকেট-রক্ষক ছিলেন। তবে, আঘাত তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৭০-৭১ মৌসুম পর্যন্ত ক্যান্টারবারির পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যান। তন্মধ্যে, ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে ওয়েলিংটনের বিপক্ষে নিজস্ব একমাত্র অর্ধ-শতরানের সন্ধান পান।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। শার্লি নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। পুত্র ব্যারি ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে ক্যান্টারবারির উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছে ও কন্যা জেনি রয়েছে। ১২ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে সাউথ ক্যান্টারবারির টিমারু এলাকায় ৮৩ বছর ৩০৭ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
