১৭ ডিসেম্বর, ১৯৪৬ তারিখে বার্বাডোসের হলস ভিলেজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৭০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
লিকলিকে গড়নের অধিকারী। তাঁর বোলিংয়ের ধরন অনেকাংশেই ল্যান্স গিবসের অনুরূপ ছিল। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে বার্বাডোসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৭২-৭৩ মৌসুম থেকে ১৯৮১-৮২ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ২৬ বছর বয়সে বার্বাডোসের পক্ষে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। লরেন্স রো’র উইকেট বাদে আর কোন সফলতার সন্ধান পাননি। পরের মৌসুমে বাসেতেরেতে কম্বাইন্ড লিওয়ার্ড ও উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডসের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করে আয়োজক দলের বিপক্ষে জয় এনে দেন।
ইমতিয়াজ আলী’র ন্যায় তিনিও অনেকাংশে ভুল যুগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মাইকেল হোল্ডিং, বার্নার্ড জুলিয়েন, অ্যান্ডি রবার্টস প্রমূখ পেসারদের দাপটে বেশ হতাশ হতে হয়েছিল। প্রায় চার বছর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার পর অবশেষে ১৯৭৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন।
১৯৭৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ঐ বছর নিজ দেশে বিষেন বেদী’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ৭ এপ্রিল, ১৯৭৬ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ইমতিয়াজ আলী’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। বলে চমৎকার নিয়ন্ত্রণভাব বজায় রাখলেও তাঁকে মহিন্দার অমরনাথের একমাত্র উইকেট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। ঐ টেস্টে তাঁর দল ছয় উইকেটে পরাজিত হয়। ৭৪ ওভার বোলিং করেছিলেন। খেলায় তিনি বল হাতে নিয়ে ১/৩৬ ও ০/৯৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে মোটেই সুবিধে করতে পারেননি। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে বিষেন বেদী’র বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন।
দূর্ভাগ্যবশতঃ এরপর আর একটি টেস্টে অংশ নেয়ার পর চিরতরে বাদ পড়েন। ১৯৭৬ সালে ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ৮ জুলাই, ১৯৭৬ তারিখে ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় সফরকারীরা ৪২৫ রানে জয় পেলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। মাত্র তিন ওভার বোলিংয়ের সুযোগ পান ও ০/১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এ সফরে ২৩.৩৮ গড়ে ৫৯ উইকেট পেয়েছিলেন। এছাড়াও, একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ৮* রান সংগ্রহ করেছিলেন। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে সব মিলিয়ে ৪৭৪ বল থেকে ১৩৫ রান খরচ করে একমাত্র উইকেট পান। এক পর্যায়ে ষষ্ঠ বাজে বোলিং স্ট্রাইকের তালিকায় চলে যান। এরপর, হতাশাচ্ছন্ন অবস্থায় ১৯৭৭ ক্যারি প্যাকারের ব্যবস্থাপনায় বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অংশ নেন। এ আসরে বেশ ভালো খেলেন। সীমিত-ওভারের খেলাগুলোয় ২৬.৮০ গড়ে ৪১ উইকেট পেয়েছিলেন।
এছাড়াও, তারকাসমৃদ্ধ বার্বাডোস দলের নেতৃত্বে থেকে তিন মৌসুমের মধ্যে দুইবার শেল শীল্ডের শিরোপা বিজয়ে ভূমিকা রাখেন। সব মিলিয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৬৮ খেলায় অংশ নিয়ে ২৯.৯৪ গড়ে ১৯৩ উইকেট দখল করেছিলেন। পরবর্তীতে, ১৯৮৩ সালে বিতর্কিত বিদ্রোহী দলের খেলোয়াড় ও ব্যবস্থাপকের দ্বৈত ভূমিকায় থেকে তৎকালীন নিষিদ্ধঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করলে আজীবন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। পরবর্তীতে, বার্বাডোস ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কাছে লিখিত পত্রে কেবলমাত্র অর্থের জন্যে সফরে যোগ দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
বেশ রসিক তিনি। এক পর্যায়ে ফ্লোরিডায় বসবাস করতে থাকেন।
