| |

মার্ক রামপ্রকাশ

৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৯ তারিখে হার্টফোর্ডশায়ারের বুশে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

‘র‍্যাম্পস’ কিংবা ‘ব্লাডেক্স’ ডাকনামে ভূষিত মার্ক রামপ্রকাশ ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী। অ্যাঙ্গাস ফ্রেজারের ন্যায় তিনিও হ্যারোভিত্তিক গেটন হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। এরপর হ্যারো উইল্ড সিক্সথ ফর্ম কলেজে পড়াশুনো করেছেন। মিডলসেক্সের বয়সভিত্তিক প্রত্যেক স্তরে খেলেছেন। ‘এ’ লেভেল শেষ হবার পূর্বেই মিডলসেক্স দলে যোগ দেন।

ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্স ও সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ১৭ বছর বয়সে প্রথম একাদশের পক্ষে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। ক্লাব ক্রিকেটে বেসবোরা সিসি ও স্টানমোর সিসি’র পক্ষে খেলেছেন। ১৯৮৮ সালে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় দারুণ খেলেন। নিম্নমূখী রানের খেলায় অপরাজিত অর্ধ-শতক হাঁকিয়ে মিডলসেক্সকে জয় এনে দেন ও সকলের নজর কাড়েন। ১৯৯০ সালে কাউন্টি ক্যাপ লাভ করেন। মিডলসেক্সের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন।

তাঁর খেলোয়াড়ী জীবন দুই অংশ বিভক্ত ছিল। খেলোয়াড়ী জীবনের দ্বিতীয়ার্ধ্বে টেমস নদীর দক্ষিণে মিডলসেক্সের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সারের পক্ষে খেলেছেন। প্রভূত্ব ও দৃষ্টিনান্দিকতার ছাঁপ রেখে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে মিডলসেক্সের পক্ষে ৪১টি ও সারের পক্ষে ৬৮টি শতরানের ইনিংস খেলেছেন।

১৯৯১ থেকে ২০০২ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ৫২ টেস্ট ও ১৮টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে নিজ দেশে ভিভ রিচার্ডসের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২৫ মে, ১৯৯১ তারিখে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করেন। একই সফরের ৬ জুন, ১৯৯১ তারিখে লিডসের হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। গ্রায়েম হিক ও স্টিভ ওয়াটকিনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। উভয় ইনিংস থেকে ২৭ রান করে পেয়েছেন। পাশাপাশি, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। দলীয় অধিনায়ক গ্রাহাম গুচের অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে মাইক অ্যাথার্টনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ১৬ নভেম্বর, ১৯৯৫ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলার একমাত্র ইনিংসে তিনি ৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত ও মন্দালোকের কবলে পড়া খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৯৮ সালে নিজ দেশে হান্সি ক্রোনিয়ে’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ২৩ জুলাই, ১৯৯৮ তারিখে নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ১৩ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৬৭ রান সংগ্রহসহ তিনটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। অ্যাঙ্গাস ফ্রেজারের অপূর্ব বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৮ উইকেটে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে অগ্রসর হতে থাকে।

২০০১-০২ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলতে যান। এ মৌসুমে নাসের হুসাইনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে খেলেন। ১৩ মার্চ, ২০০২ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৩১ ও ১১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। গ্রাহাম থর্পের অসাধারণ দ্বি-শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ৯৮ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ৩০ মার্চ, ২০০২ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ৯ ও ২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। তবে, ড্যারিল টাফি’র অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৭৮ রানে পরাজিত হলে অমিমাংসিত অবস্থায় সিরিজটি শেষ হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকই তাঁর মাঝে বেশ প্রতিশ্রুতিশীলতা লক্ষ্য করেছিলেন। তিনি হয়তোবা ইংল্যান্ডের পক্ষে নিজেকে আরও মেলে ধরতে পারতেন। তবে, মিডলসেক্সের দুইটি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপ, একবার ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি ও সানডে লীগের শিরোপা জয়ের মাঝেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। এমবিই উপাধিতে ভূষিত হন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। ইংল্যান্ড দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি মিডলসেক্সের ব্যাটিং পরামর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

Similar Posts

  • | | | |

    চান্দু বোর্দে

    ২১ জুলাই, ১৯৩৪ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের পুনায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও রেফারি। দলে মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। মাঝারিসারির ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে ভূমিকা রাখলেও কার্যকর লেগ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, ভারত দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পুনাতে বসবাসরত মারাঠী খ্রিস্টান পরিবারে তাঁর জন্ম। পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোন নিয়ে গড়া বিশাল পরিবারের সদস্য তিনি। তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতা…

  • |

    ওয়াহাব রিয়াজ

    ২৮ জুন, ১৯৮৫ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। পাকিস্তানের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘ভিকি’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। দ্রুতগতিসম্পন্ন বামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার। প্রায়শঃই ভালো-মন্দ নিয়ে খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ফুরফুরে মেজাজে থাকলে তিনি দুর্নিবার, অন্যদিকে, ধারাবাহিকতার অভাবে…

  • |

    নোয়েল হারফোর্ড

    ৩০ আগস্ট, ১৯৩০ তারিখে সাউথল্যান্ডের উইন্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৫০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৫৩-৫৪ মৌসুম থেকে ১৯৬৬-৬৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টস ও অকল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তন্মধ্যে, ১৯৫৩-৫৪ মৌসুম থেকে ১৯৫৮-৫৯…

  • | |

    ক্লিন্ট ম্যাককে

    ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৩ তারিখে ভিক্টোরিয়ার মেলবোর্নে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১.৯৪ মিটার উচ্চতার অধিকারী। বেশ নিখুঁত মানসম্পন্ন ও দক্ষতার সাথে ধীরগতির বোলিং করতেন। বেশ ছোটবেলা থেকে ক্রিকেটের সাথে যুক্ত হন। নর্থ ওয়েস্ট ক্রিকেট…

  • | |

    আল্ফ গোভার

    ২৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৮ তারিখে সারের এপসোমের উডকোট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯২৮ সালে ভবিষ্যতের শ্বশুর বিল ব্রুক অপর দুই সারে ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার অ্যান্ডি স্যান্ডহাম এবং হার্বার্ট স্ট্রাডউইকের কাছ থেকে আর্থিক…

  • | |

    স্টুয়ার্ট কার্লাইল

    ১০ মে, ১৯৭২ তারিখে সলসবারিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। জিম্বাবুয়ে দলের অধিনায়কত্ব করেছেন। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ২০০৫-০৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। অত্যন্ত দক্ষ ও কার্যকর ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ…