| | |

স্যামি উডস

১৩  এপ্রিল, ১৮৬৭ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের অ্যাশফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। দলে মূলতঃ বোলার হিসেবে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড – উভয় দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

১৮৮৩ সালে ১৪ বছর বয়সে শিক্ষালাভের উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডে চলে আসেন। শিক্ষা গ্রহণের পর আর তিনি দেশে ফিরে যাননি। ১৮৮৮ থেকে ১৯১০ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। দলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলেছেন।

১৮৯৪ থেকে ১৯০৬ সময়কালে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। সর্বদাই দলকে নেতৃত্ব দিয়ে উদাহরণ হিসেবে রয়ে যান। আক্রমণাত্মক ধাঁচে ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করতেন। তিনি বলতেন, ‘সাঁতারেই কেবল ড্র প্রযোজ্য।’ তাঁর অধিনায়কত্বে ১৯০০-এর দশকের শুরুরদিকে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে সমারসেট দল দুইটি স্মরণীয় জয় পায়।

১৮৮৮ থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের পক্ষে তিনটি করে মোট ছয় টেস্ট খেলেছেন। তন্মধ্যে, অস্ট্রেলীয় কোন রাজ্য দলের পক্ষেই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করেননি। ১৮৮৮ সালে নিজ দেশে পার্সি ম্যাকডোনেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১৬ জুলাই, ১৮৮৮ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ববি অ্যাবেলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১৮ ও ৩ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ৬১ রানে জয় পেলে স্বাগতিকরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৮৯৫-৯৬ মৌসুমে লর্ড হকের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৬ তারিখে পোর্ট এলিজাবেথের জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। এরফলে, অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার পর ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলার সুযোগ পান। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১৮ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ৭ ও ৫৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলায় তাঁর দল ২৮৮ রানে জয়লাভ করলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। স্মর্তব্য যে, ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড দলের সর্বনিম্ন ২৬ রান সংগ্রহের পূর্ব-পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা দল ৯৪ বলে মাত্র ৩০ রান সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে।

একই সফরের ২১ মার্চ, ১৮৯৬ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে টিডব্লিউ রুটলেজকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ২/৩৫। খেলায় তিনি বল হাতে নিয়ে ৩/২৮ লাভ করেন। এছাড়াও, দলের একমাত্র ইনিংসে ব্যাট হাতে নিয়ে ৩০ রান সংগ্রহসহ চারটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। খেলায় তাঁর দল ইনিংস ও ৩৩ রানে জয়লাভ করলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলার হিসেবে পরিচিতি পান। তদুপরি চাতুর্য্যতার সাথে ধীরগতির বলসহ দূর্দান্ত ইয়র্কারে সফলতার সন্ধান পেতেন। সহস্র উইকেট দখল করেছেন। এছাড়াও, পনেরো হাজারের অধিক রান তুলেছেন। কেমব্রিজ ও সমারসেট দলকে নিষ্ঠার সাথে নেতৃত্ব দেন এবং চমৎকার ফিল্ডিং করতেন। দীর্ঘ খেলোয়াড়ী জীবনে সমারসেটের পক্ষে ২৯৯টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় অংশ নিয়ে ১৯ শতক সহযোগে বারো হাজারের অধিক রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৮৯৫ সালে হোভে সাসেক্সের বিপক্ষে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩১৫ রান তুলেন। এছাড়াও, ২৪.২৫ গড়ে ৫৫৭ উইকেট দখল করেন। সর্বদাই মনেপ্রাণে বোলিং করতেন।

১৮৮৯ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ক্রিকেটের পাশাপাশি অন্যান্য খেলায়ও সমান দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে রাগবি ইউনিয়ন, সাসেক্সের পক্ষে উইং ফরোয়ার্ড অবস্থানে ফুটবল এবং সমারসেটের পক্ষে হকি ও ফুটবল খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন লেবার কোরে ক্যাপ্টেন পদবীধারী ছিলেন। ৩০ এপ্রিল, ১৯৩১ তারিখে সমারসেটের টানটন এলাকায় ৬৪ বছর ১৭ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। ৪ মে, ১৯৩১ তারিখে সেন্ট জোন্স চার্চে তাঁর শবানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

Similar Posts

  • |

    জিমি সিনক্লেয়ার

    ১৬ অক্টোবর, ১৮৭৬ তারিখে কেপ প্রভিন্সের সুয়েলেন্ডাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। উঁচু থেকে বলে বৈচিত্র্যমূখী পেস বোলিং করতেন। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করে তুলতে অন্যতম পথিকৃতের ভূমিকায়…

  • | |

    জন রিডম্যান

    ৯ অক্টোবর, ১৮৬৫ তারিখে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার গিলবার্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৮৯০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ‘ডিনি’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। দর্শনীয় ব্যাটসম্যান না হলেও কার্যকর ভূমিকা পালন করতেন। পরিবর্তিত বোলার হিসেবে ব্যবহৃত হতেন। প্রকৃতমানসম্পন্ন ফিল্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ…

  • | | |

    পমি এমবাঙ্গা

    ২৬ জুন, ১৯৭৬ তারিখে মাতাবেলেল্যান্ডের প্লামট্রি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ক্রিকেটের সাথে পারিবারের কোন সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও বেশ প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। আধুনিক যুগের অন্যতম ক্রেতাদূরস্ত টেলিভিশন ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ…

  • |

    সিস পার্কিন

    ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৬ তারিখে কো ডারহামের ঈগলসক্লিফ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯২০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পিতা রেলওয়েতে চাকুরী করতেন। নর্টন থেকে টিসাইডে তাঁর পরিবারের সাথে চলে যান। এ পর্যায়ে পার্কিন সিনিয়র স্টেশন মাস্টারের দায়িত্ব পালন করতেন। বারো…

  • | | |

    কেন ক্রান্সটন

    ২০ অক্টোবর, ১৯১৭ তারিখে ল্যাঙ্কাশায়ারের এইগবার্থ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটানোর পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৪০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘদেহের অধিকারী। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। প্রথম মৌসুমেই…

  • |

    রবীন্দ্র জাদেজা

    ৬ ডিসেম্বর, ১৯৮৮ তারিখে সৌরাষ্ট্রের নবগ্রাম-খেড় এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। বামহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি (১.৭৩ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। অনিরুদ্ধসিং ও লতা জাদেজা দম্পতির সন্তান। খুব ছোটবেলা থেকেই তাঁর মাঝে বিশাল প্রতিভা…