২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৮৪২ তারিখে সাসেক্সের ওয়েস্টহাম্পনেট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী পেশাদার ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে খেলতেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
জন লিলিহোয়াইট নামীয় রাজমিস্ত্রির সন্তান ছিলেন। গুডউড পার্কে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন ও সেখানকার স্থানীয় ক্লাবে খেলতে থাকেন। চিচেস্টার প্রায়োরি পার্কের পক্ষে খেলাকালীন ১৮৬২ সালে কাউন্টি ক্লাবের নজরে চলে আসেন। বাহু বেশ উঁচুতে তুলে বামহাতে স্পিন বোলিং করতেন। প্রায় ক্ষেত্রেই প্রত্যেক বলকে ইচ্ছে অনুযায়ী নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে পারতেন। এছাড়াও, ফিল্ডিংয়ে দূরন্ত ভূমিকা রেখেছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে কয়েকটি দলের সাথে খেলেছিলেন। ১৮৬৩ থেকে ১৮৬৪ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ১৮৬৪ সালে হ্যারো, ১৮৬৫ থেকে ১৮৬৮ সাল পর্যন্ত চেল্টেনহাম কলেজ, ১৮৬৯ সালে ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন ও এনভিলে লর্ড স্টামফোর্ড একাদশের পক্ষে খেলেন।
১৮৬২ থেকে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৮৬২ সালে ক্লাবের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম খেলতে নামেন। এরপর থেকে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত ২৫৬টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। তন্মধ্যে, সাসেক্সের পক্ষে ১৫৭ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। দুইটি শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন।
১৮৭৭ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে, ক্রিকেটের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেয়ার গৌরব অর্জন করেন। এছাড়াও, ইংল্যান্ড দলকে ঐ দুই টেস্টে নেতৃত্ব দেন। ঐ সফরে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম টেস্টে অংশ নেয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৫ মার্চ, ১৮৭৭ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১/১৯ ও ১/১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ১০ ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৪৫ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
একই সফরের ৩১ মার্চ, ১৮৭৭ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ঐ টেস্টে সফরকারীরা জয় পায়। অধিনায়কোচিত ভূমিকা রেখেছিলেন। বল হাতে নিয়ে ২/৩৬ ও ৪/৭০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ২* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। ঐ খেলায় সফরকারীরা ৪ উইকেটে জয় পেলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
এছাড়াও, ১৮৬৮ সালে উত্তর আমেরিকা এবং ১৮৭৩-৭৪, ১৮৭৬-৭৭, ১৮৮১-৮২, ১৮৮৪-৮৫ ও ১৮৮৬-৮৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফর করেছিলেন। তবে, শেষ তিন সফরে কোন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নেননি।
১৮৭১ সালের জনশুমারী অনুযায়ী তিনি ১৮৭২ থেকে ১৮৭৯ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ড ইউনাইটেড সাউথ একাদশের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর আম্পায়ারিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৮৮৩ থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত ছয় টেস্ট ও ২৩টি প্রথম-শ্রেণীর খেলা পরিচালনা করেছিলেন। ১৮৭৯ সালে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান জেমস লিলিহোয়াইট এন্ড কোং-এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে, প্রতিষ্ঠানটি লিলিহোয়াই, ফ্রোড এন্ড কোং-এ পরিণত হয়। ১৮৯৫ থেকে ১৯০১ সময়কালে চিচেস্টারের হুইটশিফের ভূমিপতি হন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। অ্যাডা মেরি নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। ক্লারা মড নাম্নী কন্যা এবং জন ও জেমস নামীয় পুত্রসন্তানের জনক ছিলেন। ২৫ অক্টোবর, ১৯২৯ তারিখে সাসেক্সের ওয়েস্টারটন এলাকায় ৮৭ বছর ২৪৪ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। তাঁকে ওয়েস্টহ্যাম্পনেট সমাধিক্ষেত্রে সমাধিস্থ করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি প্রথম টেস্ট দলের সর্বশেষ জীবিত ইংরেজ ক্রিকেটার ছিলেন।
