২৮ নভেম্বর, ১৮৪১ তারিখে ব্রিস্টলের ডাউনএন্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। ১৮৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
‘দ্য করোনার’ ডাকনামে পরিচিত ই. এম. গ্রেস ১৮৬০-এর দশকে ইংল্যান্ডের সেরা ক্রিকেটারদের অন্যতম হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন। ক্রিকেটপ্রিয় পরিবারের সন্তান ছিলেন। ড. হেনরি মিলস গ্রেস ও মার্থা দম্পতির পাঁচ পুত্রের তৃতীয় ছিলেন। মিডলসেক্সভিত্তিক কেম গুডএনাফ হাউজ স্কুলে শুরুরদিকের শিক্ষা লাভ করেন। এরপর, ব্রিস্টলের কাছাকাছি মি. কেম্পস একাডেমিতে পড়াশুনো করেন। ব্রিস্টল মেডিক্যাল স্কুলে চিকিৎসা বিষয়ে ভর্তি হন। ১৮৬৫ সালে এমআরসিএস (লন্ডন) ও এলআরসিপি (এডিনবরা) এবং ১৮৬৬ সালে এলএসএ লাভ করেন।
ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। গ্লুচেস্টারশায়ারের অন্যতম তারকা খেলোয়াড় ছিলেন। ১৮৬২ থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছিলেন।
যথোপযোগী ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনের সুবাদে জর্জ পারের নেতৃত্বাধীন পেশাদার খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেছিলেন। এ পর্যায়ে অবশ্য তিনি শৌখিন খেলোয়াড় ছিলেন। এ সফরে হাতে আঘাত পাবার ফলে স্বাভাবিক ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করতে পারেননি। তাসত্ত্বেও সফরকারী দলের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে মাত্র একটি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেছিলেন। ঐ বছর নিজ দেশে বিলি মারডকের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হন। ৬ সেপ্টেম্বর, ১৮৮০ তারিখে লন্ডনের ওভালে পনেরোজন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে তাঁর টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ডব্লিউজি ও জিএফের সাথে একত্রে খেলেন। এরফলে, প্রথম ঘটনা হিসেবে একই টেস্টে তিন ভাইয়ের একত্রে অংশগ্রহণের ঘটনা ঘটে। খেলায় তিনি ৩৬ ও ০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তাসত্ত্বেও ইংল্যান্ড দল প্রথমবারের মতো নিজ দেশে টেস্ট জয়ের সন্ধান পায়। সিরিজের একমাত্র টেস্টে স্বাগতিকরা ৫ উইকেটে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
১৮৬৯ সালে গ্লুচেস্টারশায়ারভিত্তিক থর্নবারি এলাকায় চিকিৎসা পেশা শুরু করেন। সেখানেই থেকে জীবনের বাদ-বাকী সময় অবস্থান করেন। ১৮৭৫ থেকে ১৯০৯ সময়কালে ওয়েস্ট গ্লুচেস্টারশায়ারে করোনার ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৮৬৮, ১৮৮৫, ১৯০২ ও ১৯০৭ সালে চারবার বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৮৮৫ সালে অ্যানি লুইস রবিনসনকে বিয়ে করেন। তন্মধ্যে, তিন স্ত্রী তাঁকে রেখে মারা যায়। চার বিয়ে থেকে পাঁচ পুত্র ও চার কন্যার জনক ছিলেন। এনভি গ্রেস তাঁরই সন্তান।
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে ২০ মে, ১৯১১ তারিখে গ্লুচেস্টারশায়ারের পার্ক হাউজ এলাকায় নিজ গৃহে ৬৯ বছর ১৭৩ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। অতঃপর, ডাউনএন্ড পারিশ চার্চইয়ার্ডে তাঁকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যু পরবর্তীকালে ১১ জুলাই, ১৯১১ তারিখের হিসেব অনুযায়ী £৬,৭২১ পাউন্ড-স্টার্লিং মূল্যমানের সম্পদ রেখে যান।
