| |

অ্যান্ড্রু স্টডার্ট

১১ মার্চ, ১৮৬৩ তারিখে কো ডারহামের সাউথ শীল্ডসের ওয়েস্টো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ক্রিকেটের পাশাপাশি রাগবি খেলায়ও সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন। উভয় ক্রীড়াতেই দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

মদ ব্যবসায়ীর সর্বকনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন। ১৪ বছর বয়সে পরিবারের সাথে লন্ডনের মেরিলেবোন এলাকায় চলে যান। ‘স্টডি’, ‘ড্রিউয়ি’ কিংবা ‘স্টড’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বেশ দেরীতে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেছিলেন। তাসত্ত্বেও, নিজের সময়কালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। ২২ বছরের পূর্ব-পর্যন্ত ক্রিকেটকে তেমন গুরুত্ব দেননি। তবে, এরপর থেকে দ্রুত হ্যাম্পস্টিড ও মিডলসেক্সে বেশ সাড়া জাগান। ১৮৮৫ থেকে ১৯০০ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন।

১৮৮৮ থেকে ১৮৯৮ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের পক্ষে সব মিলিয়ে ১৬ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৮৮৭-৮৮ মৌসুমে আলফ্রেড শ’ ও আর্থার শ্রিউসবারি’র নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৮ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। বিলি নিউহামের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১৬ ও ১৭ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে চার্লি টার্নারের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ১২৬ রানে পরাভূত হয়।

১৮৯৪-৯৫ মৌসুমে এমসিসি দলকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ১ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৫ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৭ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ইনিংস ও ১৪৭ রানে জয় পেলে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-২ ব্যবধানে সমতায় আনতে সমর্থ হয়।

এরপর, ১ মার্চ, ১৮৯৫ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৬৮ ও ১১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। সফরকারীরা ৬ উইকেটে জয়লাভ করে সিরিজে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

১৮৯৭-৯৮ মৌসুমে এমসিসি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ২৯ জানুয়ারি, ১৮৯৮ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১৭ ও ২৫ রান তুলে উভয় ক্ষেত্রে আর্নি জোন্সের শিকারে পরিণত হন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পেলে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

প্রথম অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে দলের ইনিংস ঘোষণা করেছেন। সব মিলিয়ে দেড় দশকে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সাড়ে ষোল হাজারের অধিক রান ও ২৭৮ উইকেট দখল করেছিলেন।

স্বল্পসংখ্যক খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে ক্রিকেটের সাথে রাগবি ফুটবলেও ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে প্রথম রাগবি ইউনিয়ন সফরে আলফ্রেড শ’, আর্থার শ্রিউসবারি’র সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। থ্রি-কোয়ার্টার অবস্থানে দ্রুততা ও দক্ষতার সাথে খেলতেন। ১৮৮৬ থেকে ১৮৯৩ সময়কালে দশটি আন্তর্জাতিক রাগবি খেলায় অংশ নেন। দুইবার স্কটল্যান্ড, তিনবার আয়ারল্যান্ড ও চারবার ওয়েলসের বিপক্ষে খেলেন। এছাড়াও, ১৮৮৯ সালে মাওরিদের বিপক্ষে খেলেছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। এথেল নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। একাকীত্বে ও অবসাদজনিত কারণে ৪ এপ্রিল, ১৯১৫ তারিখে ১১৫ ক্লিফটন হিল, সেন্ট জোন্স উড, লন্ডনের নিজ গৃহের শয়নকক্ষে গুলিতে ৫২ বছর ২৪ দিন বয়সে আত্মহত্যা করেন। গোল্ডার্স গ্রীন এলাকায় তাঁকে সমাহিত করা হয়। কভেন্ট্রির কাছাকাছি র‍্যাডফোর্ডের সেন্ট নিকোলাসেস চার্চইয়ার্ডের ছাই ভস্ম রাখা হয়। মৃত্যুর পর ১১ মে, ১৯১৫ তারিখে আনুমানিক £১০৬০ পাউন্ড-স্টার্লিং মূল্যমানের সম্পদ রেখে যান।

Similar Posts