১২ ডিসেম্বর, ১৯০৪ তারিখে ট্রান্সভালের প্রিটোরিয়ায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
বেশ দীর্ঘকায় ও শক্ত-মজবুত গড়নের অধিকারী ছিলেন। জেপ হাই স্কুলে অধ্যয়ন করতেন। ইনিংস উদ্বোধনে নামতেন ও ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে রুখে দাঁড়াতেন। সময়ের সাথে সাথে বল হাতে নিয়েও যথোপযুক্ত ভূমিকা পালন করতেন। ১৯২৫-২৬ মৌসুম থেকে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ট্রান্সভাল ও অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৯২৫-২৬ মৌসুমে ট্রান্সভালের পক্ষে প্রথমবারের মতো খেলতে নামেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসে শতক হাঁকিয়েছিলেন। প্রথম আঠারো ইনিংসের মধ্যে ছয়টিতেই শতরানের সন্ধান পান। উপর্যুপরী তিনটি শতক হাঁকান। এ পর্যায়ে ১৯২৭-২৮ মৌসুমে সলসবারিতে ট্রান্সভালের সদস্যরূপে রোডেশিয়ার বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৭৫ রান তুলেন।
১৯২৯ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ১০ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯২৯ সালে নামি ডিনের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড সফরে যান। ১৫ জুন, ১৯২৯ তারিখে বার্মিংহামের এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। টাপি ওয়েন-স্মিথ, ব্রুস মিচেল ও নেভিল কুইনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/১৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। তবে, নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে ১৪৮ রানের ইনিংস খেলার পর আঙ্গুলে আঘাত পান। এরফলে, আর মাত্র পাঁচটি খেলায় অংশ নিতে পেরেছিলেন।
১৯৩০ সালে লন্ডনে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। ফলশ্রুতিতে, ঐ মৌসুমের শীতকালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চূড়ান্ত খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। ১৯৩০-৩১ মৌসুমে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে পার্সি চ্যাপম্যানের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩১ তারিখে ডারবানের কিংসমিডে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ১৬ ও ৩৭ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে ইয়ান পিবলসের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/১৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।
১৯৩১-৩২ মৌসুমে জক ক্যামরনের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড গমন করেন। এ সফরে ১১৭০ রান তুলে গড়ের দিক দিয়ে শীর্ষে অবস্থান করেন। তন্মধ্যে, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১০২ রান তুলেন।
১৯৩১-৩২ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে জক ক্যামেরনের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। সফরটিতে কেবলমাত্র একটি টেস্ট শতকের সন্ধান পান। ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩২ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। স্মর্তব্য যে, নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার এটিই প্রথম টেস্ট ছিল। কয়েকটি ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। ব্যক্তিগত পূর্বতন ৭০ রানের সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। পাশাপাশি, নিজস্ব প্রথম শতক হাঁকান। দলের একমাত্র ইনিংসে তিনি ১০৩ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। এ পর্যায়ে ব্রুস মিচেলের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে দুই ঘণ্টায় ১৯৬ রান দাঁড় করান। খেলায় সফরকারীরা ইনিংস ও ১২ রানে জয়লাভ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। এছাড়াও, পরের মাসে ওয়েলিংটনের বিপক্ষে ৬২ ও ৫৩ রান তুলে টেস্ট দলে জায়গা করে নেন।
একই সফরের ৪ মার্চ, ১৯৩২ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ০/১১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ৬২ ও ৫৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পাশাপাশি, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। ৮ উইকেটে জয় পেলে স্বাগতিকরা ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। টেস্টগুলো থেকে ৩৪.৩৩ গড়ে ৬১৮ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে বোলিং করার সুযোগ পেয়ে দুই উইকেট লাভ করেন।
১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১ তারিখে নাটালের অ্যাডিংটন এলাকার হাসপাতালে আকস্মিকভাবে ৬৬ বছর ৫১ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
