|

রয় মার্শাল

২৫ এপ্রিল, ১৯৩০ তারিখে বার্বাডোসের ফারমার্স প্লান্টেশন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন এবং ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৫০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

পিতা স্কটিশ বংশোদ্ভূত গম চাষী ছিলেন। মাঠেই পিচ তৈরি করে খেলতেন। দশ বছরের মধ্যেই টার্ফ, ম্যাট ও কংক্রিট পিচে খেলার কৌশল রপ্ত করেন। ১২ বছর বয়সে স্বীয় প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটান। এ বয়সে বার্বাডোস ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের দ্বিতীয় বিভাগে ফাউন্ডেশন স্কুলের পক্ষে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। তাঁর পিতা বার্বাডোস উপনিবেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত লজ স্কুলে তাঁকে ভর্তি করান। খুব দ্রুত বিসিএ প্রথম বিভাগে তাঁর উত্তরণ ঘটে। ত্রিনিদাদ সফরের পূর্বে ১৫ বছর বয়সে বার্বাডোসের পক্ষে যাচাই-বাছাইয়ের খেলায় অংশ নেন। একমাত্র খেলায় তিনি ৭২ ও ৮০ সংগ্রহ করে বার্বাডোস দলে ঠাঁই করে নেন।

ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে বার্বাডোস এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৪৫-৪৬ মৌসুম থেকে ১৯৭২ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। তন্মধ্যে, ১৯৬৬ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত পাঁচ মৌসুম হ্যাম্পশায়ার দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। লোয়ারহাউজ ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে ১৯৫১ থেকে ১৯৫২ সময়কালে খেলেছিলেন।

হ্যাম্পশায়ারের তারকা খেলোয়াড়ের মর্যাদা পান। ১৯৬০-এর দশকে নেতিবাচক বোলিং ও ধীরলয়ে ব্যাটিংয়ের কবলে আচ্ছাদিত ইংরেজ ক্রিকেটের নিস্তেজ সময়কালে আগ্রাসী ব্যাটিং করে প্রাণবন্তঃ ভূমিকা রেখেছিলেন। অন্যতম খেলোয়াড় হিসেবে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছিলেন। ইংরেজবিহীন তৃতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। জিমি গ্রে’র সাথে জুটি গড়লেও গর্ডন গ্রীনিজব্যারি রিচার্ডসের ন্যায় জুটির কাছে ম্লান ছিলেন।

১৯৫১ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত সময়কালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। টেস্টগুলো থেকে ২০.৪২ গড়ে ১৪৩ রান তুলেছিলেন। ১৯৫০-৫১ মৌসুমে জন গডার্ডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ৯ নভেম্বর, ১৯৫১ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। অবশ্য, কনিষ্ঠ ভ্রাতা নরম্যান মার্শালের পর তিনি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। খেলায় তিনি ২৮ ও ৩০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৩ উইকেটে জয়লাভ করে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৫১-৫২ মৌসুমে জন গডার্ডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ তারিখে অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। একবার ব্যাট হাতে নেমে ডন বিয়ার্ডের বলে শূন্য রানে বিদেয় নেন। অবশ্য খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সব মিলিয়ে ৩৫৭২৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। অধিকাংশ রানই হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে তুলেছিলেন। ব্যাট হাতে চুপসে থাকার পক্ষপাতি ছিলেন না।

১৯৫৯ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। অতঃপর ২৭ অক্টোবর, ১৯৯২ তারিখে ইংল্যান্ডের টনটন এলাকার ভবঘুরে কেন্দ্রে ৬২ বছর ১৮৫ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। তাঁর ভ্রাতা নরম্যান মার্শাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে খেলেছেন। ২৮ নভেম্বর, ২০০১ তারিখে দ্য হ্যাম্পশায়ার রোজ বোলের প্রবেশ পথটি রয় মার্শাল ও ম্যালকম মার্শালের স্মরণে নতুন সড়ক চিহ্ন দেয়া হয় ও মার্শাল ড্রাইভ নামকরণ করা হয়।

Similar Posts

  • |

    ডানকান শার্প

    ৩ আগস্ট, ১৯৩৭ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডিতে জন্মগ্রহণকারী অ্যাংলো-পাকিস্তানী ক্রিকেটার। কার্যকর ও আগ্রাসী ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাশাপাশি, বিশ্বস্ত উইকেট-রক্ষক হিসেবে খ্যাতি কুড়ান। ১৯৫০-এর দশকে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুম থেকে ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে লাহোর,…

  • | |

    জন শাটার

    ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৮৫৫ তারিখে সারের থর্নটন হিদ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী শৌখিন ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন তিনি। ১৮৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। লিওনার্ড শাটারের সন্তান ছিলেন। উইনচেস্টারে অধ্যয়ন করেছেন। সেখানে অধ্যয়নকালে ১৮৭১ থেকে ১৮৭৩ সময়কালে ক্রিকেট একাদশের সদস্য…

  • | |

    ডেভ হোয়াটমোর

    ১৬ মার্চ, ১৯৫৪ তারিখে সিলনের কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। খুবই ছোটবেলা অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। কার্যকর ব্যাটসম্যান ও অসাধারণ ফিল্ডার হিসেবে তাঁর সুনাম ছিল। ১৯৭৫-৭৬ মৌসুম থেকে ১৯৮৮-৮৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন সরব রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়া…

  • |

    ব্যাসিল গ্রিভ

    ২৮ মে, ১৮৬৪ তারিখে মিডলসেক্সের কিলবার্ন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৮৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। হ্যারো স্কুলে অধ্যয়ন করেছিলেন। ক্লাব পর্যায়ের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পেশায় পানশালা পরিচালনা করতেন। হ্যারোর পক্ষে বোলার হিসেবে বেশ সফলতার স্বাক্ষর রাখেন।…

  • | |

    মুদাসসর নজর

    ৬ এপ্রিল, ১৯৫৬ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকর মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। টেস্টে খাঁটিমানের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ও ওডিআইয়ে দূর্দান্ত অল-রাউন্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অপরিসীম ধৈর্য্য ও ফুরফুরে মেজাজের অধিকারী থেকে খেলায় বিরাট ভূমিকা রেখে গেছেন।…

  • | |

    অ্যান্ড্রু বালবির্নি

    ২৮ ডিসেম্বর, ১৯৯০ তারিখে ডাবলিনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ের পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষণেও অগ্রসর হয়ে থাকেন। ২০১০-এর দশক থেকে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি আইরিশ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ডাবলিনের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। যদি পূর্ণাঙ্গকালীন পেশাদারী খেলোয়াড়…