৯ ডিসেম্বর, ১৯৩২ তারিখে রোডেশিয়ার বুলাওয়ে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৬০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ্বে অন্যতম সেরা সুইং বোলার ছিলেন। সুদর্শন ও শক্ত-মজবুত গড়নের অধিকারী ছিলেন। খেলায় বেশ প্রতিদ্বন্দ্বীসুলভ মনোভাব নিয়ে খেলতেন। নিখুঁততা, অসম্ভব দম ও সুইংয়ের উপর নির্ভর করে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ইন-সুইঙ্গারে দক্ষ হলেও অনুশীলনীতে আউট-সুইঙ্গারে পারদর্শী হয়ে উঠেন। ১৯৫১-৫২ মৌসুম থেকে ১৯৬৬-৬৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে রোডেশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তবে, নীল অ্যাডকক ও পিটার হেইনের দাপটে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে বেশ কয়েকবছর খরচ করেন। ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে বর্ডারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ৭/৯ লাভ করেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে সাত খেলা থেকে মাত্র ১৩.৯৮ গড়ে ৫৩ উইকেট দখল করেছিলেন। তন্মধ্যে, সলসবারিতে নাটালের বিপক্ষে ৮/৬৯ ও ৬/৩২ পেয়েছিলেন।
১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ১১ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে ট্রেভর গডার্ডের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ৬ ডিসেম্বর, ১৯৬৩ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ডেভিড পিদি, ডেনিস লিন্ডসে, কেলি সেম্যুর, পিটার ফন ডার মারউই ও গ্রায়েম পোলকের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ০/৮৭ ও ১/৫০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৩* রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
মেলবোর্নের ঘাসযুক্ত পিচে ৪/১০৮ পান। এরপর, সিডনিতে ৪/৮৮ ও ৫/১২৩ লাভ করেন। টেস্ট সিরিজের পূর্বে রাজ্য দলের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক খেলায় ৫/৭৫ ও ৪/৪২ পান।
অ্যাডিলেডে দক্ষিণ আফ্রিকা দল দশ উইকেটে জয় পেয়ে সিরিজে সমতা আনলেও তিনি মাত্র এক উইকেট পেয়েছিলেন।
সিডনিতে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টের প্রথম ইনিংসে আট-বল নিয়ে গড়া ৩১.১ ওভারে ৭/৯১ পান। এ সফরে দলের সফলতায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। পিটার পোলকের সাথে বোলিং উদ্বোধনে নেমে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে প্রত্যেকেই ২৫ উইকেট দখল করেছিলেন। ঐ সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।
১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে ট্রেভর গডার্ডের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৪ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২/৫০ ও ০/১০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ২* রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
এ সিরিজেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। ডুনেডিনে ৪/৫১ ও অকল্যান্ডে ৪০ ওভারে ৬/৮৬ পান। ঐ মৌসুমে প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও দারুণ খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে চৌদ্দটি প্রথম-শ্রেণীর খেলা থেকে ২৬.৩০ গড়ে ৬৩ উইকেট পেয়েছিলেন।
১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে নিজ দেশে মাইক স্মিথের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ২২ জানুয়ারি, ১৯৬৫ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২/৯২ ও ০/১০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, কোন ইনিংসেই তাঁকে ব্যাট হাতে নিয়ে মাঠে নামতে হয়নি। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়ালেও সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
জীবনের শেষদিকে বেশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। হোটেলে অর্থ প্রদান করতে না পারায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অতঃপর, ৬ জুন, ১৯৮৮ তারিখে জিম্বাবুয়ের হারারের একটি থানায় গুলিতে ৫৫ বছর ১৮০ দিন বয়সে তাঁর জীবনাবসান ঘটে।
