|

ফ্রেড মার্টিন

১২ অক্টোবর, ১৮৬১ তারিখে কেন্টের ডার্টফোর্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন। ১৮৯০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

‘নাটি’ ডাকনামে পরিচিত ফ্রেডরিক মার্টিনকে ‘নাটি মার্টিন’রূপে পরিচিতি ঘটানো হয়েছে। ১৮৮৫ থেকে ১৯০০ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, ইংল্যান্ড সাউথ, প্লেয়ার্স, ইংল্যান্ড ইস্ট, দ্য সাউথ প্লেয়ার্স ও এমসিসির পক্ষে খেলেছেন। জীবনের সবটুকু সময় নিজ কাউন্টির সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রেখেছিলেন। মিডিয়াম-পেস সহযোগ স্পিন বোলিংকালে বলের উপর নিখুঁতভাব বজায় রাখতেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৭.৩৮ গড়ে ১৩১৭ উইকেট দখল করেছেন।

১৮৯০ থেকে ১৮৯২ সময়কালে সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে মাত্র দুই টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৮৯০ সালে নিজ দেশে বিলি মারডকের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১১ আগস্ট, ১৮৯০ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ফ্রেড মার্টিন, জন শার্প ও জেমস ক্রান্সটনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। কেন্টের বামহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট বোলার মার্টিন টেস্টের ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে অভিষেকে ১২ উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। উভয় ইনিংস থেকে ৬ উইকেট লাভ করে খেলায় ১২ উইকেট দখল করেছিলেন। দীর্ঘ আট দশকের অধিক সময় টেস্ট অভিষেকে সেরা বোলিং হিসেবে নিজেকে চিত্রিত করেন। পরবর্তীতে, ১৯৭২ সালে বব ম্যাসি তাঁর এ সাফল্যকে ম্লান করে দেন। অবশ্য, অদ্যাবধি খেলায় তাঁর বোলিং বিশ্লেষণ ইংরেজ বোলারদের মধ্যে অভিষেকে শীর্ষে রয়েছে। খেলায় তিনি ৬/৫০ ও ৬/৫২ লাভ করেছিলেন। উভয় ইনিংসেই জর্জ লোহমান তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন। এছাড়াও, একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। জ্যাক বারেট সহজ রান-আউট করতে ব্যর্থ হলে ওভারথ্রোয়ের কারণে ইংল্যান্ড দল নাটকীয়ভাবে দুই উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

১৮৯১-৯২ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে ওয়াল্টার রিডের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ১৯ মার্চ, ১৮৯২ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। সফরকারীরা ইনিংস ও ১৮৯ রানে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

সব মিলিয়ে ১০.০৭ গড়ে ১৪ উইকেট দখল করেছিলেন। খেলায় দশ উইকেট লাভে গড়ের দিক দিয়ে দ্বিতীয় সেরা হিসেবে চিত্রিত হয়।

১৮৯২ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। এরপর উপর্যুপরী তিন মৌসুম অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। প্রত্যেক মৌসুমেই ১৪-এর কম গড়ে শতাধিক উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। শুধুমাত্র ১৮৯১ সালেই ১৯বার ও ১৮৯২ সালে আরও ১৪বার পাঁচ-উইকেট পেয়েছিলেন। ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত কেন্টের পক্ষে খেলেন ও বিখ্যাত তারকা ক্রিকেটার কলিন ব্লাইদ তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।

১৩ ডিসেম্বর, ১৯২১ তারিখে কেন্টের ডার্টফোর্ড এলাকায় ৬০ বছর ৬২ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • |

    বাসিত আলী

    ১৩ ডিসেম্বর, ১৯৭০ তারিখে সিন্ধু প্রদেশের করাচীতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৯০-এর দশকে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ডানহাতে আগ্রাসী ব্যাটিং করতেন। ২২ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণের পর থেকেই তাঁকে কিংবদন্তীতুল্য ব্যাটসম্যান জাভেদ মিয়াঁদাদের সাথে তুলনায় আনা…

  • |

    উমেশ কুলকার্নি

    ৭ মার্চ, ১৯৪২ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের আলীবাগে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৬০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। খুব স্বল্পসংখ্যক খেলোয়াড়কেই তাঁর ন্যায় তরতর করে উপরের দিকে চলে যেতে দেখা যায়। তবে, কোন দিক দিয়ে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবন সুখকর…

  • | |

    অ্যালান জোন্স

    ৪ নভেম্বর, ১৯৩৮ তারিখে ওয়েলসের ভেলিন্দ্রে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন, দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নাটাল ও নর্দার্ন ট্রান্সভাল এবং অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন চলমান রাখেন।…

  • |

    ডেল হ্যাডলি

    ৬ জানুয়ারি, ১৯৪৮ তারিখে ক্রাইস্টচার্চের রিকার্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার ছিলেন। ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পেস বোলিং করতেন। দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলিং না করলেও ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হতেন। এছাড়াও, বলকে সুইং করাতে পারতেন। শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে পারতেন না। ক্রমাগত পিঠের আঘাতের…

  • | |

    বিজয় হাজারে

    ১১ মার্চ, ১৯১৫ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের সাংলী এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ভারতের অন্যতম কিংবদন্তীতূল্য ব্যাটসম্যান। চীরপ্রতিদ্বন্দ্বী ও দলীয় সঙ্গী বিজয় মার্চেন্টকে সাথে নিয়ে বোম্বে স্কুলের অগ্রযাত্রায় অংশ নেন। ভারতীয় ক্রিকেটের শুরুর বছরগুলোয়…

  • | |

    শহীদ আফ্রিদি

    ১ মার্চ, ১৯৮০ তারিখে খাইবার এজেন্সিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিং করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে কার্যকরী ও মারকুটে ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে এগিয়ে আসতেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তরে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। পাকিস্তানের প্রথিতযশা অল-রাউন্ডার হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন। সুইংয়ের সুলতান, স্পিনের যাদুকর ও বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান…