২৫ মার্চ, ১৯৭১ তারিখে তামিলনাড়ুর মাদ্রাজে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
দারুণ অফ-স্পিন বোলিং করতেন। বলকে শূন্যে ভাসিয়ে মারতেন ও বৈচিত্র্যতা আনয়ণে সক্ষম ছিলেন। সর্বদাই মিতব্যয়ীভাব বজায় রাখতেন ও হাল ছেড়ে দিতেন না। সচরাচর সাত নম্বর অবস্থানে ব্যাট হাতে মাঠে নামতেন। এছাড়াও, ঘরোয়া আসরে দলের প্রয়োজনে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন। ১৯৮৯-৯০ মৌসুম থেকে ২০০৬-০৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে হিমাচলপ্রদেশ, পাঞ্জাব, রাজস্থান, তামিলনাড়ু ও ত্রিপুরার প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৯৮৯-৯০ মৌসুমে তামিলনাড়ুর পক্ষে অভিষেক ঘটে। এরপর থেকেই তরতর করে সামনের দিকে এগিয়ে যান। ১৯৯০-৯১ মৌসুমে দলটির পক্ষে দারুণ মৌসুম অতিবাহিত করলেও তিনি নিয়মিত সদস্য ছিলেন না। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে দল পরিবর্তন করে পাঞ্জাবের পক্ষে খেলার পর দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হন। নিউজিল্যান্ডে চারদেশীয় প্রতিযোগিতায় ভারত দলের সদস্যরূপে খেলার জন্যে মনোনীত হন। বিশ্বকাপের পূর্বে এ সিরিজে দারুণ খেলেছিলেন। তবে, শূন্যতা পূরণের ক্ষেত্রেই তাঁকে দলে রাখা হয়েছিল।
১৯৯৪ থেকে ২০০০ সময়কালে ভারতের পক্ষে সব মিলিয়ে চারটিমাত্র টেস্ট ও ১৭টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। তবে, টেস্টগুলোয় খুবই সীমিত সাফল্য পান। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে নিজ দেশে কোর্টনি ওয়ালশের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ১০ ডিসেম্বর, ১৯৯৪ তারিখে মোহালিতে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। টেস্ট অভিষেকে ১২২ রান খরচায় মাত্র এক উইকেট পেলে বিষেন সিং বেদী দলীয় অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের দিকে অঙ্গুলী হেলন করেন। তিনি মন্তব্য করেন যে, চমৎকার অফ-স্পিন বোলিং করলেও পুরো খেলায় তিনি তাঁকে ভুল জায়গায় খেলিয়েছেন। ঐ টেস্টে তাঁর দল ২৪৩ রানে পরাজয়বরণ করে ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে শেষ হয়।
১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে নিজ দেশে লি জার্মনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ৮ নভেম্বর, ১৯৯৫ তারিখে কটকে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। টেস্টে পূর্বতন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৫ রান অতিক্রম করেন। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৪২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বৃষ্টিবিঘ্নিত এ খেলায় একমাত্র ইনিংসে ০/৩২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয় তাঁর দল।
১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে নিজ দেশে হান্সি ক্রোনিয়ে’র নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ আফ্রিকান দলের মুখোমুখি হন। ৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে কানপুরে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ১১ ও ৬* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/১৯ ও ০/১০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের অপরাজিত শতরানের কল্যাণে স্বাগতিক দল ২৮০ রানে জয় পায় ও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
টেস্টে ৪২.৫০ ও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩১.৯৩ গড়ে বোলিং করেছেন। এরফলে, অধিনায়কদের গুপ্ত দক্ষতার চেয়েও নিজের সক্ষমতা ও দক্ষতাকে এগিয়ে রেখেছেন। উপযোগী পিচে সাফল্য পেলেও দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হননি। ইতিবাচক দিক হলো তিনি ব্যাট হাতে অধিকতর দক্ষতার ছাঁপ ফেলেছেন।
১৯৯৪ সালে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে ১৮১ রান তুলেন। এ পর্যায়ে সপ্তম উইকেটে বান্টু সিংয়ের সাথে ২৮৩ রান জুটি গড়েন। দৃশ্যতঃ ওডিআই দলে খেলার উপযোগী ছিলেন। তবে, তেমন সফলতা পাননি। ৭৬.৫০ গড়ে ৮ উইকেট দখল করেন ও ৭.১৬ গড়ে ৪৩ রান তুলতে পেরেছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনটি শতকের সন্ধান পেয়েছিলেন।
একদিনের ক্রিকেটে উদীয়মান অল-রাউন্ডার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত ভারত দলের পক্ষে খেলেন। দূর্ভাগ্যজনকভাবে ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত খেলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে স্বাগতিকরা পরাজিত হলে দল নির্বাচকমণ্ডলীর নাখোশের পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে দারুণ সাফল্যের স্বাক্ষর রাখলেও বিস্ময়করভাবে দল নির্বাচকমণ্ডলীর আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হন।
পরবর্তীকালে তামিলনাড়ু ও রাজস্থান দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। রাজস্থান দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন শেষে পুণরায় ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে আবারও দলটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। ঐ মৌসুমে রঞ্জী ট্রফিতে দলের শীর্ষ উইকেট সংগ্রাহকে পরিণত হয়েছিলেন। তাঁর ভগ্নীর সাথে বিক্রম রাঠোরের পরিণয়সূত্র স্থাপিত হয়।
