| |

ম্যালকম জার্ভিস

৬ ডিসেম্বর, ১৯৫৫ তারিখে মাসভিঙ্গোর ফোর্ট ভিক্টোরিয়া এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। বামহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের সেরা হৃদয়বান ও অবিসংবাদিত কর্মী। বামহাতি পেসার হিসেবে শূন্যে ভাসিয়ে অফের দিকে নিয়ে যেতে সবিশেষ দক্ষতার পরিচয় দেন। তবে, পেস বোলিং করে তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। কিন্তু, ইয়র্কারসহ বলে পর্যাপ্ত বৈচিত্র্যতা আনতে পারতেন। দূর্ভাগ্যজনকভাবে পেসের অভাবে অনেক সময়ই তাঁর প্রতিকূলে চলে যেতো। সফলতা লাভকল্পে ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে আউট-সুইঙ্গার মারতেন। সচরাচর, নতুন বল নিয়েই অধিক সফল ছিলেন। ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে দূরন্ত পেসারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তবে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঐ ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেননি।

মিডল্যান্ডসে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন। তৎকালীন কিউ কিউ হাই স্কুলে ভর্তি হন। এরপর হারারে চলে যান। ধ্রুপদীশৈলীর বোলিংয়ের অধিকারী ছিলেন। বিরামহীন বোলিং করতে পারতেন। ব্যাটসম্যান হিসেবে তেমন সুবিধে করতে পারেননি। তাসত্ত্বেও মাঝে-মধ্যে দীর্ঘ সময় ক্রিজে অবস্থান করতে পারতেন। এছাড়াও, মাঠে বেশ বিশ্বস্ততার সাথে ফিল্ডিং করতেন। ‘মালি’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৭৯-৮০ মৌসুম থেকে ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, রোডেশিয়ার পক্ষে খেলেছেন।

১৯৮৭ থেকে ১৯৯৫ সময়কালে জিম্বাবুয়ের পক্ষে পাঁচটিমাত্র টেস্ট ও ১২টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৯০-এর দশকের সূচনালগ্নে স্বল্পকালীন টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে অংশগ্রহণকৃত কোন টেস্টেই পরাজয়ের মুখ দেখেননি তিনি। ১৩ অক্টোবর, ১৯৮৭ তারিখে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। নিউ সাউথ ওয়েলসের অ্যালবারিতে অনুষ্ঠিত খেলায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের বিজয়ের ন্যায় সেরা অঘটনের নেপথ্যে অবস্থান করে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখেন। গ্রুপ পর্বের খেলায় প্রতিপক্ষকে মাত্র ১২৫ রানে গুটিয়ে দিতে ভূমিকা রাখেন।

জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে প্রথম জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টের প্রথম উইকেট লাভের সাথে নিজের নামকে সংযুক্ত করতে পারতেন। তবে, নিজ দোষে তা থেকে বঞ্চিত হন। ক্যাচ হাতছাড়া হবার কারণে তা আর হয়ে উঠেনি। ঐ মৌসুমে নিজ দেশে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন ভারত দলের মুখোমুখি হন। ১৮ অক্টোবর, ১৯৯২ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে জন ট্রাইকোস ব্যতীত অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। শূন্য রানে বিদেয় নেন। সঞ্জয় মাঞ্জরেকরের (১০৪) উইকেট পান ও ১/৭৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।

১৯৯২-৯৩ মৌসুমে নিজ দেশে মার্টিন ক্রো’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১ নভেম্বর, ১৯৯২ তারিখে বুলাওয়েতে সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক এমডি ক্রোকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলায় তিনি ০/৮৭ ও ৩/৩৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ২* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। স্মর্তব্য যে, জিম্বাবুয়ে-নিউজিল্যান্ডের মধ্যে এটিই ক্রিকেটের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্ট ছিল।

বয়সের ভারে ন্যূহ হয়ে পড়লেও জিম্বাবুয়ে দলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ পান। তবে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বয়োজ্যেষ্ঠ খেলোয়াড় হতে চাননি।

১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কা দলের মুখোমুখি হন। ২৬ অক্টোবর, ১৯৯৪ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ১/৫৮ ও ০/৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটিসহ সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় শেষ হয়। পরবর্তীতে এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। ৩৮ বছর বয়সে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর, সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে দলের শারীরিক প্রশিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তীতে, জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ থেকে অব্যহতি পান। হারারের কাছাকাছি এলাকায় বসবাস করছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। তাঁর সন্তান কাইল জার্ভিস জিম্বাবুয়ে ও ল্যাঙ্কাশায়ার দলে খেলেছেন। বর্তমানে হারারেভিত্তিক ম্যালকম লজ গেস্টহাউজ সস্ত্রীক পরিচালনা করছেন।

Similar Posts

  • | |

    এহসানুল হক

    ১ ডিসেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ২০০০-এর দশকে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ‘সিজান’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। ২০০০-০১ মৌসুম থেকে ২০০৭-০৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।…

  • | |

    ফ্যানি ডি ভিলিয়ার্স

    ১৩ অক্টোবর, ১৯৬৪ তারিখে ট্রান্সভালের ভারিনিগিং এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন। ১৯৯০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। আফ্রিকানারভাষী কৃষক পরিবারে তাঁর জন্ম হলেও রাগবি খেলোয়াড়দেরকে আদর্শনিষ্ঠ করে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন। পল্লী অঞ্চলে বড় হন।…

  • | | |

    আলফ্রেড রিচার্ডস

    ১৪ ডিসেম্বর, ১৮৬৭ তারিখে কেপ কলোনির গ্রাহামসটাউন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও রেফারি ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতেন। উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৮৯০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নেন ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৮৮৯-৯০ মৌসুম থেকে ১৮৯৫-৯৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে…

  • | | |

    অনিল কুম্বলে

    ১৭ অক্টোবর, ১৯৭০ তারিখে কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোরে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হতেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। টেস্ট ও ওডিআইয়ে দলের সর্বাপেক্ষা কার্যকরী বোলার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপিত করেছেন। দলীয় সঙ্গীদের আসা-যাবার পালায় থাকলেও প্রতিটি খেলাতেই অংশ নিয়েছেন। ভারতকে একাকী…

  • |

    ফিলিপ হিউজ

    ৩০ নভেম্বর, ১৯৮৮ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের ম্যাক্সভিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতে পারতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি (১.৭০ মিটার) উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। গ্রেগ হিউজ ও ভার্জিন হিউজ দম্পতির সন্তান…

  • | | | |

    ওয়াকার ইউনুস

    ১৬ নভেম্বর, ১৯৭১ তারিখে পাঞ্জাবের বিহারী এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রায়শঃই তাঁকে ‘সুইংয়ের সুলতান’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তরুণ বয়সে অন্যতম সেরা দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলার ছিলেন। তিনি তাঁর সময়কালের অন্যতম…