২৩ জানুয়ারি, ১৯৫২ তারিখে কেপ প্রভিন্সের স্টেলেনবশ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও প্রশাসক। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করতেন। ১৯৯০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
পিতা-মাতা ও ছয় ভাই-বোনকে একটি কক্ষে গাদাগাদি অবসর শৈশবকাল অতিবাহিত করেছেন। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুম থেকে ১৯৯৩-৯৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে বোল্যান্ড, অরেঞ্জ ফ্রি স্টেট ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, স্কটল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন। ক্লাব ক্রিকেট খেলতে বিশের বয়সে ১৯৮১ সালে স্কটল্যান্ডে চলে আসেন। এরপর থেকে সেখানে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তারকায় পরিণত হন। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত দলটিতে ৬২ খেলায় অংশ নেন। টিটউডে সফররত অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে দুই উইকেট লাভ করে অভিষেক পর্বকে স্মরণীয় করে রাখেন।
১৯৭৭ সালে ল্যাঙ্কাশায়ার লীগ খেলতে ইংল্যান্ড গমন করেন। অ-শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড় হলেও বর্ণবৈষম্যবাদ চলাকালে ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে কিম হিউজের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার বিদ্রোহী দলের বিপক্ষে খেলেছিলেন।
১৯৯২ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে তিনটিমাত্র টেস্ট ও তিনটিমাত্র ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ভারত সফর করা থেকে বঞ্চিত হলেও ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। টিম শ’য়ের পরিবর্তে দলে যুক্ত হন। ৪০ বছর বয়সে ২ মার্চ, ১৯৯২ তারিখে ওয়েলিংটনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রবেশ করেন। এরফলে, বর্ণবৈষম্যবাদ পরবর্তী যুগে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ভিন্ন বর্ণের খেলোয়াড় হিসেবে অংশগ্রহণের গৌরব অর্জন করেন। খেলায় তিনি ১০-০-৩১-১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান।
১৯৯২-৯৩ মৌসুমে নিজ দেশে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। মার্চ, ১৯৭০ সালের পর নিজ দেশে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম টেস্ট খেলা ছিল। তবে, ঐ সিরিজে খুব কমই ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৩ নভেম্বর, ১৯৯২ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। জিমি কুক, ব্রায়ান ম্যাকমিলান, ব্রেন্ট শ্যুলজ ও জন্টি রোডসের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড় হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে খেলার গৌরব অর্জনসহ ৪০ বছর ২৯৫ দিন বয়স নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বয়োজ্যেষ্ঠ টেস্ট অভিষেকধারীর মর্যাদা পান। খেলায় তিনি ২/৫৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। প্রবীণ আম্রে’র অসাধারণ শতকে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।
একই সফরের ২ জানুয়ারি, ১৯৯৩ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১৬ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ১/৮৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। জবাগল শ্রীনাথের অসাধারণ বোলিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
তাসত্ত্বেও, ইস্টার্ন প্রভিন্সের বিপক্ষে ১০৪ রান সংগ্রহসহ ৭/১১০ নিয়ে অরেঞ্জ ফ্রি স্টেট দলকে ঐ মৌসুমের কারি কাপের শিরোপা বিজয়ে ভূমিকা রাখেন। সব মিলিয়ে প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলো থেকে ২৫.১৭ গড়ে ৪৪৩ উইকেট দখল করেছেন। এছাড়াও, ২৭ গড়ে ৪৭৭৬ রান সংগ্রহ করেছেন।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। পরবর্তীতে, প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এক পর্যায়ে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ৩১ মার্চ, ২০০৮ তারিখে দায়িত্ব পালন করা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে, তিনি দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যরূপে রয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। ফলকির্কে রিয়াদ নামীয় সন্তান জন্মগ্রহণ করে।
