| |

এনামুল হক, ১৯৬৬

২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ তারিখে কুমিল্লায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও আম্পায়ার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, কার্যকর স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিয়ে পারদর্শী ছিলেন। বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

‘মণি’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম থেকে ২০০২-০৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। স্ট্যাম্পের পিছনে দণ্ডায়মান খালেদ মাসুদের কাছ থেকে প্রায়শঃই ‘শাবাস মনি ভাই’ শব্দটি শুনতে অভ্যস্ত ছিলেন। বাংলাদেশ দলের বিশ্বস্ত ও একনিষ্ঠ বামহাতি স্পিনার ছিলেন।

১৯৯০ থেকে ২০০৩ সময়কালে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। এক দশকের অধিক সময় নিয়ে ১০ টেস্ট ও ২৯টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। এরজন্যে তাঁকে যথেষ্ট ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে। পাশাপাশি, নিচেরসারিতে ঝটপট রান তুলে দলীয় সংগ্রহকে স্ফীততর করার আপ্রাণ প্রয়াস চালিয়েছেন।

২৮ এপ্রিল, ১৯৯০ তারিখে শারজায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করেন। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ দল ওডিআইয়ে প্রথম অংশ নিলেও প্রথম বিজয়ের জন্যে এক যুগ অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়েছিল। স্বাগতিক ভারত ও কেনিয়ার অংশগ্রহণে ত্রি-দেশীয় সিরিজে দলটি প্রথমবারের মতো জয় পায়। হায়দ্রাবাদের লাল বাহাদুর শাস্ত্রী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত খেলায় স্বর্ণালী মুহূর্তের সন্ধান পায় বাংলাদেশ দল। মোহাম্মদ রফিক ও খালেদ মাহমুদের সাথে তিনিও দলের বিজয়ে অনন্য ভূমিকা রাখেন। দুই উইকেট লাভ করে দলকে ছয় উইকেটের জয় এনে দেন।

২০০০-০১ মৌসুমে নাইমুর রহমানের অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ দলের সাথে জিম্বাবুয়ে সফরে যান। ২৬ এপ্রিল, ২০০১ তারিখে হারারেতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ব্যাট হাতে ২০* ও ৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/৯৪ ও ১/৮ লাভ করেন। ঐ টেস্টে তাঁর দল ৮ উইকেটে পরাজিত হয়।

বলে বৈচিত্র্যতা আনতে পারেননি ও বয়সের ভারে ন্যূহ থাকা অবস্থায় ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি টানেন। ঐ বছর নিজ দেশে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ২৪ এপ্রিল, ২০০৩ তারিখে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে ১ ও ১১ রান সংগ্রহ করেন। তবে, ৮১ রান খরচ করেও কোন উইকেটের সন্ধান পাননি। অভিষেকধারী জ্যাক রুডল্ফের অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলায় স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৬০ রানে পরাজয়বরণ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

১৯৯০-এর দশকে বাংলাদেশ দলের স্বর্ণালী অধ্যায় না হলেও একান্ত নিষ্ঠার সাথে খেলে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর আম্পায়ারিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে খেলা পরিচালনায় অগ্রসর হন। ২০০৬ সালে বগুড়ায় নিজস্ব প্রথম ওডিআই পরিচালনা করেন। ২০১২ সালে টেস্ট ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ড-জিম্বাবুয়ের মধ্যকার খেলা পরিচালনায় অগ্রসর হন। এরফলে, নিরপেক্ষ আম্পায়ারের দায়িত্বে থেকে প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে খেলা পরিচালনা করার গৌরব অর্জন করেন।

Similar Posts

  • |

    জর্জ রো

    ১৫ জুন, ১৮৭৪ তারিখে কেপ প্রভিন্সের গ্রাহামসটাউন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৮৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ১৯০৬-০৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন…

  • | |

    মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন

    ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৩ তারিখে অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন ও অন-সাইডে দৃষ্টিনন্দন কব্জীর মোচড়ে রান সংগ্রহে তৎপরতা চালাতেন। অসাধারণ ফিল্ডিং ও নেতৃত্বের গুণাবলী তাঁর…

  • | | |

    জিওফ রাবোন

    ৬ নভেম্বর, ১৯২১ তারিখে সাউথল্যান্ডের গোর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। দলে তিনি মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক কিংবা লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫-৪৬ মৌসুম থেকে ১৯৬০-৬১ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে অকল্যান্ড ও ওয়েলিংটনের প্রতিনিধিত্ব…

  • |

    ব্রেট লি

    ৮ নভেম্বর, ১৯৭৬ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের ওলংগং এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ‘বিং’ ডাকনামে ভূষিত ব্রেট লি ৬ ফুট ২ ইঞ্চি (১.৮৭ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। সন্দেহাতীতভাবে অন্যতম গতিসম্পন্ন বোলার হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। ১৯৯৪-৯৫…

  • | | |

    জেরেমি কোনি

    ২১ জুন, ১৯৫২ তারিখে ওয়েলিংটনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মজবুত গড়নের অল-রাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, স্লিপ অঞ্চলে ফিল্ডিংয়ে সবিশেষ পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ড দলে স্বল্প সময়ের জন্য অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করলেও বেশ সফল ছিলেন। গড়পড়তা নিউজিল্যান্ডীয় বালকদের সাথে তাঁর শৈশবকালও তেমন বৈচিত্র্যময় ছিল না। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে রাগবি খেলায় জড়িয়ে…

  • |

    নীল র‌্যাডফোর্ড

    ৭ জুন, ১৯৫৭ তারিখে নর্দার্ন রোডেশিয়ার লুয়ানশিয়া এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলত বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী নীল র‍্যাডফোর্ড জোহানেসবার্গভিত্তিক অ্যাথলোন বয়েজ হাইয়ে অধ্যয়ন করেছেন। ক্ষীপ্র গতিসম্পন্ন বোলার ছিলেন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৫ সময়কালে…