চার্লি অ্যাবসলম

৭ জুন, ১৮৪৬ তারিখে কেন্টের ব্ল্যাকহিদ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হতেন। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

এডওয়ার্ড অ্যাবসলম ও এলিজাবেথ অ্যাবসলম দম্পতির সন্তান ছিলেন। পিতা সস্ত্রীক তিন পুত্র ও দুই কন্যাকে নিয়ে গ্রীনিচে বসবাস করতেন এবং চা ব্যবসায়ী ছিলেন। পরবর্তীকালে পরিবারটি নিকটবর্তী লি এলাকায় ও সবশেষে এসেক্সের স্নেয়ারব্রুকে আবাস গড়ে। কেমব্রিজের কিংস কলেজ স্কুল ও ট্রিনিটি কলেজে অধ্যয়ন করেছিলেন। অগণিত বন্ধুদের কাছে ‘বস’ ও সুন্দর শারীরিক গঠনের কারণে ‘কেমব্রিজ নেভি’ নামে পরিচিত ছিলেন।

১৮৬৬ থেকে ১৮৭৯ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন বেশ ভালোমানের ক্রিকেটার হিসেবে আবির্ভুত হন। সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান ও ২৫ উইকেট দখল করেন।

এরপর কেন্টের পক্ষে খেলেন। কেন্টের ক্রিকেট অঙ্গনে অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেটারে পরিণত হয়েছিলেন। লর্ড হ্যারিস তাঁর ‘এ ফিউ শর্ট রানস’ শীর্ষক আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেছেন যে, ‘তাঁর সাথে যে খেলেছে সে কি তাঁকে কভু ভুলতে পারবে? দূর্বল দলটির জীবন ও আত্মা হিসেবে সর্বদাই আত্মবিশ্বাস ও আমোদে মত্ত থাকতেন।’ ডব্লিউজি গ্রেস মন্তব্য করেন যে, ‘যে-কোন দলের অমূল্য সম্পদ হিসেবে প্রথম একাদশে স্থান লাভের অধিকারী। বিজয়ী কিংবা পরাজিত খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিজেকে মনেপ্রাণে নিয়োজিত রাখতেন।’ ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁর খেলার ধরন অবশ্য তেমন দর্শনীয় ছিল না।

১৮৬৯ সালে ট্রিনিটি কলেজ মাঠে পেরাম্বুলেটর্স বনাম এটসেট্রাসের মধ্যকার খেলায় প্রচণ্ড গরমের কারণে মাত্র এক ঘণ্টা খেলা হয়। ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে চূড়ান্ত ওভারে বিদেয় হন। এ পর্যায়ে দলীয় সংগ্রহ ছিল ১০৬/১ ও সর্বশেষ খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ রান করেছিলেন।

১৮৭৯ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে কেবলমাত্র একটি টেস্টে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। ১৮৭৮-৭৯ মৌসুমে লর্ড হ্যারিসের নেতৃত্বাধীন শৌখিন দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া সফর করেন। ২ জানুয়ারি, ১৮৭৯ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। আলেকজান্ডার ওয়েব, মাঙ্কি হর্নবি, বানি লুকাস, ফান্সিস ম্যাককিনন, লেল্যান্ড হোন, লর্ড হ্যারিস, স্যান্ডফোর্ড শ্যুলজদ্য রেভারেন্ড ভার্নন রয়্যালের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম হ্যাট্রিক লাভকারী বোলার অস্ট্রেলীয় ফ্রেড স্পফোর্থের দূর্দান্ত বোলিংয়ের ফলে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২৬/৭ থাকা অবস্থায় নয় নম্বরে নেমে চমৎকার অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। স্লো-মিডিয়াম বোলিংয়ে দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও অস্ট্রেলীয় ইনিংসে বল করার সুযোগ পাননি। অথচ, সাতজন বোলারকে ব্যবহার করা হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে তেমন ভালো খেলেননি। খেলায় তিনি ৫২ ও ৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ঐ খেলায় ইংল্যান্ড দল ১০ উইকেটে পরাজিত হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

তাঁর ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবন স্বল্পকালীন ছিল। ভ্রমণপ্রিয় ছিলেন ও জাহাজের খাদ্য তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে ছিলেন। দূর্ভাগ্যবশতঃ ৩০ জুলাই, ১৮৮৯ তারিখে ত্রিনিদাদের পোর্ট অব স্পেনে চিনির বস্তার নিচে চাপা পড়ে নিহত হন।

বোলার হিসেবে ক্লান্তিহীন অবস্থায় নিখুঁতমানের বোলিং করতেন। ধৈর্য্য সহকারে, আত্মবিশ্বাস নিয়ে ও কিছুটা বৈচিত্র্যময় পেস বোলিংয়ে উইকেট শিকার করতেন। ১৮৭৬ সালে ক্যান্টারবারিতে ডব্লিউ জি গ্রেসের ৩৪৪ রান সংগ্রহের খেলায় হাসিমুখে বোলিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। সচরাচর যে কোন অবস্থানেই ফিল্ডিং করতেন। তবে, স্লিপ অঞ্চলেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। নেড উইলশার ও জর্জ হার্নের ন্যায় বামহাতি পেস বোলারদের অগণিত ক্যাচ মুঠোয় পুড়েছেন। কেন্টের এক ডজন ক্রিকেটারদের অন্যতম হিসেবে খেলা প্রতি ক্যাচের গড় অধিক ছিল এবং কেবলমাত্র মার্টিন ফন জার্সভেল্ড, জাস্টিন কেম্প ও কার্ল হুপার তাঁর সংগৃহীত ১.৩৮ গড়ের চেয়ে বেশী লাভ করেছেন।

Similar Posts

  • | | |

    হিমু অধিকারী

    ৩১ জুলাই, ১৯১৯ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের পুনে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী এবং অত্যন্ত সম্মানীয় ভারতীয় ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। এছাড়াও, সেনাবাহিনীতে যুক্ত ছিলেন তিনি। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও লেগ-ব্রেক বোলিং করতেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যতিক্রমধর্মী ফিল্ডার হিসেবে তিনি ফিল্ডিংয়ের গুরুত্বতা সম্পর্কে সতীর্থদেরকে অবহিত করে গেছেন। সামরিক শৃঙ্খলাকে উপজীব্য করে ঐ সময়ের ভারতীয় ক্রিকেটে…

  • |

    জিন হ্যারিস

    ১৮ জুলাই, ১৯২৭ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডীয় অল-রাউন্ডার ক্রিস হ্যারিসের পিতা হিসেবে অধিক পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৪৯-৫০ মৌসুম থেকে ১৯৬৪-৬৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের…

  • | | |

    কিথ ফ্লেচার

    ২০ মে, ১৯৪৪ তারিখে ওরচেস্টারে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ‘নোম’ ডাকনামে ভূষিত কিথ ফ্লেচার ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী। ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা ক্রিকেটীয় প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। আকর্ষণীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁর বেশ সুনাম ছিল।…

  • | |

    নবজ্যোৎ সিং সিঁধু

    ২০ অক্টোবর, ১৯৬৩ তারিখে পাঞ্জাবের পাতিয়ালায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। শেন ওয়ার্ন ও মুত্তিয়া মুরালিধরনের বিপক্ষে সমানে লড়াইকারী হিসেবে এবং সুনীল গাভাস্কার ও বীরেন্দ্র শেহবাগের মাঝামাঝি সময়কালে ভারতের সেরা উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে আবির্ভুত হয়েছিলেন। কেবলমাত্র…

  • | |

    হিউ ম্যাসি

    ১১ এপ্রিল, ১৮৫৪ তারিখে ভিক্টোরিয়ার বেলফাস্টের কাছাকাছি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৮৮০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করতেন। ১৮৭৭-৭৮ মৌসুম থেকে ১৮৯৫ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ১৮৮১…

  • |

    ইউনুস আহমেদ

    ২০ অক্টোবর, ১৯৪৭ তারিখে ভারতের পাঞ্জাবের জলন্ধর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। পাশাপাশি, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স কিংবা বামহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে টেস্ট ও ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুম থেকে ১৯৮৬-৮৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে করাচী, লাহোর ও পাকিস্তান…