৯ এপ্রিল, ১৮৪৮ তারিখে লন্ডনের প্যাডিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন তিনি। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
হ্যারোভিয়ান হিসেবে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পাননি। এক পর্যায়ে কেমব্রিজের অধীনে সেন্ট জোন্স কলেজে দারুণ খেলে ব্লু আদায় করে নিতে সক্ষম হন। ১৮৭০ সালে অক্সফোর্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক মুখোমুখি হওয়া কেমব্রিজ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন।
ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলেছেন। ১৮৭০ থেকে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন অতিবাহিত করেছেন। ১৮৭৫ সাল থেকে পরবর্তী এক দশক কেন্টের পক্ষে খেলেন।
১৮৭৯ সালে সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৮৭৮-৭৯ মৌসুমের শীতকালে লর্ড হ্যারিসের নেতৃত্বাধীন শৌখিন দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। তবে, ব্যাটসম্যান হিসেবে এ সফরে তেমন সুবিধে করতে পারেননি। স্থানীয় দলগুলো থেকে একত্রিত হওয়া অসম দলের বিপক্ষে খেলাগুলোই কেবলমাত্র রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন।
২ জানুয়ারি, ১৮৭৯ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। আলেকজান্ডার ওয়েব, মাঙ্কি হর্নবি, বানি লুকাস, চার্লি অ্যাবসলম, লেল্যান্ড হোন, লর্ড হ্যারিস, স্যান্ডফোর্ড শ্যুলজ ও দ্য রেভারেন্ড ভার্নন রয়্যালের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। মোটেই সুবিধে করতে পারেননি। ০ ও ৫ রান তুলেন। উভয় ক্ষেত্রেই ফ্রেড স্পফোর্থের বল স্ট্যাম্পে আঘাত হানে। টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম ইনিংসে দলের সংগ্রহ ২৬/৫ থাকাকালীন মাঠে নামেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম হ্যাট্রিক লাভকালীন ফ্রেড স্পফোর্থের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। সফরকারীরা ১০ উইকেটে পরাজয়বরণ করেছিল।
১৮৮৫ সাল পর্যন্ত কেন্টের পক্ষে খেলতে থাকেন। ঐ বছরেই তিনি তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেছিলেন। ঐ বছর অস্ট্রেলীয় একাদশ কেন্টের বিপক্ষে খেলতে আসলে তিনি ইনিংস উদ্বোধনে নামেন। ২৮ ও ২৯ রান তুলে দলের দূর্দান্ত বিজয়ে অংশ নেন। অ্যালেক হার্নের স্মরণীয় বোলিংয়ের কারণেই তা সম্ভব হয়েছিল। ঐ একই গ্রীষ্মে তিনি হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ১১৫ ও ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১০২ রান তুলেন। এগুলোই তাঁর পুরো খেলোয়াড়ী জীবনে প্রথমবারের মতো শতরান করেছিলেন। ঐ বছর কেন্টের পক্ষে লর্ড হ্যারিসের ৪১ গড়ের পর ৩৩ গড়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। সব মিলিয়ে ৮৮ খেলা থেকে দুই শতক সহযোগে ১৫.৭১ গড়ে ২৩১০ রান তুলেছিলেন। তিনি কোন বোলিং করেননি।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৮৮৯ সালে কেন্ট কাউন্টি ক্রিকেটে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত হন। ১৮৭১ থেকে ১৮৯৩ সময়কালে রয়্যাল কেন্ট ইয়্যুমান্রি’র ক্যাপ্টেন পদবীধারী ছিলেন। এরপর, সম্মানসূচক মেজর হন। পরবর্তীতে, ১৯০০ থেকে ১৯০২ সময়কালে কেন্টের ডেপুটি লেফট্যানেন্ট ও পিস জাস্টিস হিসেবে মনোনীত হন।
২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৭ তারিখে স্কটল্যান্ডের ড্রুমডুয়ান এলাকায় নিজ গৃহে ৯৮ বছর ৩২৪ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। এ পর্যায়ে তিনি তৎকালীন বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটারের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে ৬২ বছর পর ২০১০ সালে এরিক টিন্ডিল ৯৯ বছর ২২৬ দিন বয়স নিয়ে তাঁর এ রেকর্ড নিজের করে নেন। মৃত্যুকালীন ‘৩৫তম ম্যাককিননের ম্যাককিনন’ পদবীধারী ছিলেন। ১৯০৩ সালে স্বীয় পিতা ফ্রান্সিস আলেকজান্ডার ম্যাককিননের মৃত্যুর ফলে এ পদবীপ্রাপ্ত হন।
