২ জুলাই, ১৯৭৯ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। দলে মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন। ২০০০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
২০০০-এর দশকের সূচনালগ্নে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের সাথে জুটি গড়ার জন্যে তাঁকে নিউজিল্যান্ড দলে রাখা হয়েছিল। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম থেকে ২০১৮ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। স্থানীয় ক্লাব দল ক্যান্টারবারির পক্ষে খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। এরপর, ১২ মৌসুম খেলার পর ২০১১ সালে ওয়েলিংটন অভিমুখে যাত্রা করেন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে ক্যান্টারবারির পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। শুরুতে কিছুটা ধীরলয়ে অগ্রসর হন। তবে, ২০০৩-০৪ মৌসুমে সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শের সুবাদে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষমতা দেখান। এরফলে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওডিআই সিরিজ খেলার উদ্দেশ্যে নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন।
২০০৪ থেকে ২০০৭ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আটটিমাত্র টেস্ট ও ছয়টিমাত্র ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ২০০৩-০৪ মৌসুমে নিজ দেশে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান।
ঘরোয়া আসরের সফলতা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ধরে রাখেন। পাঁচ খেলা থেকে দুইশত রানের অধিক তুলেন। তন্মধ্যে, খেলোয়াড়ী জীবনের ব্যক্তিগত সেরা ৯২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। এরফলে, টেস্ট দলে তাঁকে ঠাঁই দেয়া হয়। ১০ মার্চ, ২০০৪ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্রেন্ডন ম্যাককালামের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ৫৯ ও ১২ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। জ্যাক ক্যালিসের অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
অভিষেক টেস্টে অর্ধ-শতরান তুললেও পরবর্তীতে সিরিজের বাদ-বাকী টেস্টে বেশ নাকানি-চুবানীর শিকারে পরিণত হন। এরফলে, খুব শীঘ্রই তাঁকে দলের বাইরে রাখা হয়। ২০০৫-০৬ মৌসুমে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৭ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যাটিংয়ে নেমে ২২ ও ২০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। দলনায়কের অসাধারণ দ্বি-শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
ইংল্যান্ড সফরে ক্রেগ ম্যাকমিলানের আঘাতপ্রাপ্তির কারণে পুণরায় দলে ফেরার সুযোগ পান। হেডিংলিতে ৮৬ রান তুলে স্বীয় প্রতিভার কথা জানান দেন। কিন্তু, আঙ্গুলে চোট পাবার কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে শেষদিকে ব্যাটিংয়ে নামেন ও পরবর্তীতে সিরিজের আর কোন খেলায় অংশ নিতে পারেননি। এভাবেই তাঁর শারীরিক আঘাত শুরু হয়। পরবর্তীতে, কাঁধে চোট পাওয়াসহ ব্রেট লি’র বলে মাথায় আঘাতের কারণে খেলার জগৎ থেকে চলে আসতে বাধ্য হন।
২০০৭-০৮ মৌসুমে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ১৬ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৯ ও ১ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, ডেল স্টেইনের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে ঐ খেলায় তাঁর দল ইনিংস ও ৫৯ রানের ব্যবধানে পরাজিত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
প্লাঙ্কেট শীল্ডের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে দশ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। নিউজিল্যান্ডীয় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তারকা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত হলেও উচ্চ স্তরের ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ১৯ এপ্রিল, ২০১৮ তারিখে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন।
