৩ জুন, ১৯০৬ তারিখে স্টাফোর্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
যুদ্ধের পূর্বে স্টাফোর্ডশায়ারের পক্ষে অংশগ্রহণকারী পিতা ও পরবর্তীতে ল্যাঙ্কাশায়ারের সাবেক পেশাদার ক্রিকেটার আলবার্ট নাইটের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেন। ১৯১৭ সালে লন্ডনে চলে যান। হাইগেট স্কুলে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষে অধ্যয়নকালীন প্রথম একাদশে খেলে প্রতিশ্রুতিশীলতা তুলে ধরেন। ২৭ গড়ে ব্যাটিং ও ২৩ গড়ে ২৮ উইকেট দখল করেন। পরবর্তী তিন বছর চমৎকার খেলে ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগেই শীর্ষে ছিলেন।
ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলেছেন। ১৯২৫ থেকে ১৯৫১ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। কভার পয়েন্ট অঞ্চলে বিস্ময়কর ফিল্ডিং করতেন। গুগলি বোলার হিসেবে তিনি বলকে দ্রুততার সাথে ফেলতেন। ফিঙ্গার-স্পিনের কার্যকারিতায় দ্রুততার সালে বলকে বাঁক খাওয়াতে পারতেন ও কৌণিকভাবে ফেলতেন। নিজের সেরা দিনে যে-কোন প্রতিপক্ষকে নাস্তানুবাদ করতেন। ব্যাটসম্যান হিসেবে চমৎকারভাবে ড্রাইভ মারতেন। যে-কোন দিকে বলকে সপাটে আঘাত হানতেন।
১৯২৯ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে ১৯ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯২৯ সালে নিজ দেশে নামি ডিনের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ২৯ জুন, ১৯২৯ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলেন। জ্যাক ও’কনরের সাথে তাঁর একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ব্যাটিং করে তেমন সফলতা পাননি। তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে প্যাভিলিয়ন প্রান্তে নিজেকে কার্যকর বোলার হিসেবে তুলে ধরেন। খেলায় তিনি ৪ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ২/৪৭ ও ৩/৩২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয় ও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৩৩ সালে নিজ দেশে জ্যাকি গ্র্যান্টের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২৪ জুন, ১৯৩৩ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছিলেন। প্রথম ইনিংসে ৬/৩২ লাভ করেন ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে তছনছ করে ফেলেন। তন্মধ্যে, প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক জর্জ গ্র্যান্টও তাঁর শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। ৯৭ রানে গুটিয়ে যাবার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ১৭২ রানে তাদের ইনিংস শেষ করলে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ২৭ রানে জয়লাভ করে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে ইভান ব্যারো’র উইকেট লাভ করেছিলেন। এছাড়াও, একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ২৭ রানে জয়লাভ করে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
১৯৩৭ সালে নিজ দেশে কার্লি পেজের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১৪ আগস্ট, ১৯৩৭ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ৪/৪০ ও ০/২৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৯ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ মুঠোয় পুড়েছিলেন। তবে, খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
১৯৩০ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ এবং ১৯৫৪ সালে দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এছাড়াও, ১৯৬২ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১২ ডিসেম্বর, ১৯৬৮ তারিখে লন্ডনের সেন্ট জোন্স উড এলাকায় নিজ গৃহে ৬২ বছর ১৯২ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
