৫ মার্চ, ১৯৬৩ তারিখে নাটালের পোর্ট শেপস্টোন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করতেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
‘চিকেন জর্জ’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। প্রিন্স এডওয়ার্ড স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ১৯৮৫ থেকে ২০০০-০১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ড ও ম্যাশোনাল্যান্ড কান্ট্রি ডিস্ট্রিক্টসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
বিশালাকার, গোলাকৃতি বুকে চপল চাহনীর অধিকারী। পেশায় মুরগীর বাচ্চা লালন-পালন করে পরিচিতি লাভ করেন। আমোদপ্রিয় চরিত্রের অধিকারী তিনি। প্রতিপক্ষের সাথে ধস্তাধস্তি করেও পরিচিতি পেয়েছেন। নিচেরসারির কার্যকর ব্যাটসম্যান হিসেবে চমৎকার কৌশল অবলম্বনপূর্বক মারমুখী ভঙ্গীমায় বলকে সপাটে আঘাত করে রান সংগ্রহে কুশলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। এ কৌশল গ্রহণের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে একমাত্র শতক হাঁকিয়েছিলেন।
১৯৮৭ থেকে ১৯৯৯ সময়কালে জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বমোট ১০ টেস্ট ও ৫৯টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১০ অক্টোবর, ১৯৮৭ তারিখে হায়দ্রাবাদের ডেকানে অনুষ্ঠিত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। নিউ সাউথ ওয়েলসের অ্যালবারিতে অনুষ্ঠিত খেলায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের বিজয়ের ন্যায় সেরা অঘটনের নেপথ্যে অবস্থান করে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখেন। গ্রুপ পর্বের খেলায় প্রতিপক্ষকে মাত্র ১২৫ রানে গুটিয়ে দিতে ভূমিকা রাখেন। প্রথম বলেই গ্রাহাম গুচকে এলবিডব্লিউতে বিদেয় করেন। প্রথম চার উইকেট পতনের তিনটি উইকেট পান। তন্মধ্যে, অন্তরঙ্গ বন্ধু গ্রায়েম হিককে বিদেয় করে উল্লাসে ফেঁটে পড়েন। খেলায় তিনি ৪/২১ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন।
জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে নিজ দেশে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন ভারত দলের মুখোমুখি হন। ১৮ অক্টোবর, ১৯৯২ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে জন ট্রাইকোস ব্যতীত অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। তেমন সুবিধে করতে পারেননি। শূন্য রানে বিদেয় নেয়। এছাড়াও, ০/৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।
১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের নেতৃত্বাধীন জিম্বাবুয়ীয় দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১৩ জানুয়ারি, ১৯৯৬ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ৩* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৪৬ ও ১/৫২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, ক্রিস কেয়ার্নসের অসাধারণ বোলিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৯৬-৯৭ সালে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন ও বৈশ্বিক পর্যায়ে খ্যাতি পান। এ পর্যায়ে বয়োজ্যেষ্ঠ বোলার হিসেবে ওডিআইয়ে হ্যাট্রিক লাভ করেন। ৩৩ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছিলেন। নিক নাইট, জন ক্রলি ও নাসের হুসাইন তাঁর শিকারে পরিণত হন। দুইবার জিম্বাবুয়ে দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একদিনের খেলায় জয় এনে দেন। তবে, মাত্র একবারই দলের একদিনের সিরিজ বিজয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন। পেস সহযোগে আউট-সুইঙ্গারগুলো বেশ দর্শনীয় ছিল। কিন্তু, শারীরিক সচেতনতার অভাবে অধিক টেস্ট খেলায় অংশ নিতে পারেননি।
১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে নিজ দেশে সনথ জয়সুরিয়া’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ৪ ডিসেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ৯ ও ১* রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৩/৪৫ ও ১/২০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। সহজাত প্রকৃতির সর্ব ক্রীড়াবিদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। গল্ফ বলকে খুবই জোড়ালোভাবে আঘাতে সর্বাপেক্ষা সফল ছিলেন। তবে, আঘাত তাঁর নিত্যসঙ্গী ছিল। অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ন্যাশনাল একাডেমির কোচের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু, রাজনৈতিক অস্থিরতায় তাঁর খামারের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর, ২০০৩ সালে কুইন্সল্যান্ডে অভিবাসিত হন। সেখানে কোচিং কর্মের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। পাশাপাশি সানশাইন কোস্টে টমেটোর খামার পরিচালনা করছেন।
