৩০ জুন, ১৯৭৩ তারিখে কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও রাজনীতিবিদ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৯০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
১৯৯৪-৯৫ মৌসুম থেকে ২০০৫-০৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে কর্ণাটকের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে কর্ণাটকের অন্যতম চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। জবাগল শ্রীনাথ, বেঙ্কটেশ প্রসাদ, অনিল কুম্বলে ও সুনীল যোশী’র ন্যায় তারকাসমৃদ্ধ কর্ণাটক দলে অবস্থান করে সর্বাধিক উইকেট পেয়েছেন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে ছয়বার পাঁচ-উইকেট ও দুইবার দশ উইকেট নিয়ে ৭৪ উইকেট পেয়ে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন।
১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলিয়া দল ভারত সফরে আসে। একমাত্র টেস্টে অংশ নেয়ার পূর্বে ভারতীয় বোর্ড সভাপতি একাদশের পক্ষে খেলে সফরকারীদের বিপক্ষে এক চোট নেন। মাইকেল স্ল্যাটার, মার্ক টেলর ও মার্ক ওয়াহ’র উইকেট পান। ঐ ইনিংসে তিনি ৫/১০৩ পান। ডেভিড জনসনের সাথে নতুন বল নিয়ে বোলিং আক্রমণ পরিচালনা করেন।
তবে, জবাগল শ্রীনাথ আহত হলে ডেভিড জনসনকে বেঙ্কটেশ প্রসাদের সাথে টেস্ট খেলতে দেখা যায়। অন্যদিকে দোদ্দা গণেশকে গোয়া ও হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে উইকেট পেতে দেখা যায়। সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষেও প্রস্তুতিমূলক খেলায় সর্বাধিক সফলতম বোলারে পরিণত হন। ভারত ‘এ’ দলের সদস্যরূপে খেলে সফলতা পেয়েছিলেন। তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্রায়ান ম্যাকমিলান, হার্শেল গিবস ও ল্যান্স ক্লুজনার তাঁর উপর চড়াও হন।
১৯৯৭ সালে ভারতের পক্ষে চারটিমাত্র টেস্ট ও একটিমাত্র ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ভারতীয় পেস আক্রমণ পরিচালনার্থে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তাঁকে দলে রাখা হয়। তবে, ঐ পিচগুলোয় তেমন সুবিধে করতে পারেননি।
১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে শচীন তেন্ডুলকরের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ২ জানুয়ারি, ১৯৯৭ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ০/৯৩ ও ১/৩৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। প্রতিপক্ষীয় ব্রায়ান ম্যাকমিলানের অসামান্য ব্যাটিংয়ের কল্যাণে তাঁর দল ২৮২ রানে পরাভূত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। এরপর, ১৬ জানুয়ারি, ১৯৯৭ তারিখে জোহানেসবার্গ টেস্টে অংশ নেন। এ টেস্টেও মোটেই সুবিধে করতে পারেননি। ০/২৬ ও ০/৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। অবশ্য, রাহুল দ্রাবিড়ের অসামান্য ব্যাটিংয়ে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।
একই মৌসুমে দলের সাথে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ১৭ এপ্রিল, ১৯৯৭ তারিখে জর্জটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। রাহুল দ্রাবিড়ের ব্যাটিংয়ের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। খেলায় তিনি ০/২৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান।
বিদেশের মাটিতে টেস্টগুলো থেকে ৫৭.৪০ গড়ে মাত্র ৫ উইকেট দখল করতে সমর্থ হয়েছিলেন ও আর তাঁকে টেস্ট অঙ্গনে দেখা যায়নি। তাসত্ত্বেও, ঘরোয়া ক্রিকেটে কর্ণাটকের পক্ষে খেলে ঠিকই ঝুড়ি ভর্তি উইকেট পেয়েছেন।
ওডিআই খেলোয়াড়ী জীবন আরও মুমূর্ষু ছিল। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে একটিমাত্র ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭ তারিখে বুলাওয়েতে ৫ ওভারে ২০ রানের বিনিময়ে একটিমাত্র উইকেট পেলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাঁর দল পরাজিত হয়েছিল। এরপর আর তাঁকে খেলানো হয়নি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে উপেক্ষিত হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে স্বীয় ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনে সোচ্চার ছিলেন। ২০০২-০৩ মৌসুমে তাঁর ব্যাটিংয়ে বেশ উত্তরণ ঘটে। ঐ মৌসুমে ৪১ গড়ে রান পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে, বিদর্ভের বিপক্ষে এক খেলায় ৪০ রানের অপরাজিত ইনিংসসহ ১১৯ রান তুলেন। তাসত্ত্বেও, তাঁর এ প্রচেষ্টা জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর আস্থা অর্জনসহ দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যর্থ হয়। ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েন। জনতা দলে (ধর্ম নিরপেক্ষ) যোগ দেন। ২০১২-১৩ মৌসুমে গোয়া দলের কোচ হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন।
