| | |

ওয়াসিম আকরাম

৩ জুন, ১৯৬৬ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হতেন। পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

‘সুইংয়ের সুলতান’ নামে ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করেন। স্বপ্নবাজ ক্রিকেটার হিসেবেও সবিশেষ সুনাম কুড়ান। স্বর্ণালী সময়ে অধিকাংশ তরুণ বোলারের স্বপ্নের তারকা ক্রিকেটার ছিলেন। বামহাতি বোলিংয়ে বিপ্লব আনেন। সহজাত প্রতিভা ও কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে ক্রিকেটে ইতিহাসে বিস্তৃতি ঘটান। ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ও দর্শনীয় বামহাতি বোলার হিসেবে আখ্যায়িত করা হলে বাড়িয়ে বলা হবে না। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশকিছু দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং উপহার দিয়ে দলের বিজয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন। ঘোড়ার লাথির ন্যায় বলকে আঘাত করতেন। কিন্তু, ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি সুবিধে করতে পারেননি। এক কথায় সর্বকালের সেরা বামহাতি ফাস্ট বোলার। বলকে সাথে নিয়ে হাটতেন ও কথা বলাতে পারতেন যা অন্য কারো পক্ষে সম্ভবপর ছিল না। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে খেলার গতিধারা পরিবর্তনেও সহায়ক ভূমিকা রাখতেন।

সন্দেহাতীতভাবে সেরা বামহাতি ফাস্ট বোলারের মর্যাদা পেয়েছেন। সুইং ও সিমের উপর পুরোপুরি খবরদারিত্ব, প্রভূত্ব ও দখল করে নিয়েছিলেন। কখনোবা বলকে উভয় দিক দিয়েই ঘুরাতে পারতেন। সবকিছুতেই দ্রুতলয়ে দূরন্ত গতিবেগের ছোঁয়া ছিল। এর পিছনে বিপজ্জ্বনক বাউন্সার কিংবা ধীরলয়ের বলেরও সমাহার থাকতো। অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকের অভিমত, তিনি সর্বকালের সেরা বামহাতি ফাস্ট বোলার। তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যানও একই কথারই প্রতিধ্বনি করেছে। সমসাময়িক খেলোয়াড়দের কাছ থেকেও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা কুড়িয়েছেন। টেস্টে ৪১৪টি ও ওডিআইয়ে ৫০২ উইকেট দখল করে তিনি তাঁর সময়কালের সর্বাপেক্ষা ভীতিদায়ক ফাস্ট বোলার হিসেবে নিজের পরিচিতি ঘটিয়েছেন। অন্যদিকে, টেস্টে ২৮৯৮ রান ও ওডিআইয়ে ৩৭১৭ রান তুলে চমৎকার অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলাকে আরও সমৃদ্ধ করেছেন।

শুরুতে উইকেটের বাইরে পেস বোলিং করতেন। অধিক খেলায় অংশগ্রহণের পাশাপাশি কৌশল রপ্ত করতে থাকেন। এক পর্যায়ে দীর্ঘ দূরত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে আনেন ও মাত্র কয়েক কদম দূরত্ব থেকে দৌড়ে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। পেস আনয়ণ করা থেকে বিরত থাকলেও সুইং, সিম ও বলে বৈচিত্র্যতা আনয়ণের দিকে অধিক মনোনিবেশ ঘটান। এরফলে, লাল-বলের খেলায় প্রায় ব্যাটসম্যানই তাঁর বলে হিমশিম খেতেন।

স্বল্প দূরত্ব থেকে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ভীতিপ্রদ পেস বোলিংয়ে সেরা ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে সফলতা পেতেন। শুরুতে জাভেদ মিয়াঁদাদ ও পরবর্তীতে ইমরান খানের কাছ থেকে অভিজ্ঞতার ঝুলি সমৃদ্ধ করতে থাকেন। বিকশিত হওয়াসহ সফলতা লাভের কৌশলগুলো তাঁদের কাছ থেকে অর্জন করেন। এভাবেই নিজেকে তাঁর সময়কালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারে পরিণত করেন ও পরবর্তীতে অল-রাউন্ডার হিসেবে গড়ে তুলেন। অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে ইমরান খানের আদলে ভূমিকা রাখতে শুরু করেন ও নিজ দেশের বেশ সাফল্য বয়ে আনেন। দলীয় সঙ্গীদের কাছে অধিনায়ক ও অল-রাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেন।

১৯৮৪-৮৫ মৌসুম থেকে ২০০৩ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে লাহোর, পাকিস্তান অটোমোবাইলস কর্পোরেশন ও পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮৪ সালে পাকিস্তান অটোমোবাইলস কর্পোরেশনের পক্ষে দুই বছর খেলেন। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত দলটিতে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেন। এ পর্যায়ে, প্যাট্রন্স ট্রফি, কায়েদ-ই-আজম ট্রফি ও পেন্টাগুলার ট্রফিতে অংশ নিয়েছিলেন। এরপর, লাহোরের ক্রিকেট দলে খেলেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭, ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৮ ও ২০০০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত খেলেছিলেন।

এছাড়াও, ১৯৮৭ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন ও ব্যাপক সফল হন। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দশ বছরের অধিক সময় ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে দলটির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এ পর্যায়ে কাউন্টির অন্যতম সেরা বিদেশী খেলোয়াড়ের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। সমর্থকেরা খেলায় ‘ওয়াসিম ফর ইংল্যান্ড’ শ্লোগানে মত্ত থাকতো। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ১৬ উইকেট দখলের পর ক্লাবের অধিনায়কত্ব করেছিলেন। বিশ্বস্ততা, সফলতা ও সম্মানের সাথে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এরপর, ২০০৩ সালে হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে খেলেছিলেন।

গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে যাচাই-বাছাইয়ের জন্যে মনোনীত হন। কেবলমাত্র তৃতীয় দিন বোলিং করার সুযোগ পান। ৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত নিউজিল্যান্ডীয় একাদশের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নেন। ১৮ বছর বয়সে স্বপ্নীল অভিষেক ঘটে। জন রাইট, ব্রুস এডগার, জন রিড ও ক্রো ভ্রাতৃদ্বয়ের উইকেট পান। খেলায় তাঁর বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ২০.৫-৬-৫০-৭। কোনরূপ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা ছাড়াই বিখ্যাত ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদের দৃষ্টিগোচরে পড়েন ও সরাসরি পাকিস্তান দলে খেলার সুযোগ লাভ করেন।

১৯৮৪ থেকে ২০০৩ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বমোট ১০৪ টেস্ট ও ৩৫৬টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ২৩ নভেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে ফয়সালাবাদে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওডিআইয়ে তাঁর অভিষেক ঘটে। খেলায় ওভার কমিয়ে দলপ্রতি ২০ ওভার বরাদ্দ করা হয়। ৪ ওভার বোলিং করে ৩১ রান খরচ করে কোন উইকেটের সন্ধান পাননি। তাসত্ত্বেও, দল ৫ রানে জয় পেয়েছিল। নিজস্ব তৃতীয় ওডিআইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ-উইকেট লাভ করেন।

জানুয়ারি, ১৯৮৫ সালে মাত্র একটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেয়ার পরপরই নিউজিল্যান্ড গমনার্থে দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে জাভেদ মিয়াঁদাদের নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড গমনার্থে পাকিস্তানী দলের সদস্য হন। ২৫ জানুয়ারি, ১৯৮৫ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। পাকিস্তান দল ইনিংস ও ৯৯ রানে পরাভূত হয়। ঐ টেস্টে ১০৫ রান খরচায় ২ উইকেট দখল করেন। উভয় ইনিংসেই ব্যাট হাতে তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখেননি।

একই সফরে নিজস্ব তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে দশ উইকেট দখল করেন। দুই সপ্তাহ পর স্বীয় প্রতিভার বিকাশ ঘটান। ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৫ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে ৫/৫৬ ও ৫/৭২ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন। এছাড়াও, ১* ও ৮* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাসত্ত্বেও দল মাত্র ২ উইকেটের ব্যবধানে পরাজয় এড়াতে পারেনি। পাশাপাশি, ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। রিচার্ড হ্যাডলি’র আট-উইকেট লাভের কাছে তাঁর এ সাফল্য ম্লান হয়ে পড়ে। অবশ্য, এরপর থেকে তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

ভিক্টোরিয়া রাজ্যের সার্ধ্বশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশ্ব ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন দলের বিপক্ষে খেলেন। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ওডিআইয়ে ৫/২১ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে নিজের পরিচিতি ঘটান। পরবর্তী বছরগুলোয় অন্যতম মারাত্মক ফাস্ট বোলার হিসেবে সকল ধরনের পরিবেশে নিজেকে গড়ে তুলেন। সুইং-ইয়র্কার, ভালোমানের সরাসরি বাউন্সার ও পেসের অপ্রতিরোধ্যতায় সেরা ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হন।

২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৫ তারিখে ওডিআইয়ে প্রথমবারের মতো ওডিআইয়ে পাঁচ-উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন ও নিজেকে ওডিআইয়ের সেরা বোলারের ইঙ্গিত দেন। এমসিজিতে কেপলার ওয়েসেলস, ডিন জোন্স, অ্যালান বর্ডার ও কিম হিউজের উইকেট পান। ৫/২১ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে দলের জয়ের ভিত্তি এনে দেন। ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমের অস্ট্রাল-এশিয়া কাপে পাকিস্তান দলে খেলার জন্যে মনোনীত হন। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক চূড়ান্ত খেলায় চীরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে দলকে শিরোপা এনে দেন।

১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় সাত খেলায় অংশ নিয়ে ৪০-এর অধিক গড়ে মাত্র সাত উইকেট দখল করেছিলেন। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমের বেনসন এন্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪/২৫ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শারজায় নিজস্ব শততম উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজস্ব দ্বিতীয় হ্যাট্রিক লাভ করেন।

রিভার্স সুইংয়ের প্রবক্তা ছিলেন। ওয়াকার ইউনুসের সাথে মিষ্টমধুর সম্পর্ক গড়েন। তাঁরা দু’জন মিলে ১৭০৫ উইকেট দখল করেছিলেন। অক্টোবর, ১৯৮৯ সালে ওয়াকার ইউনুসের সাথে ‘টুডব্লিউ’ একত্রে খেলে খেলায় ব্যাপক ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। প্রথমবারের মতো ওডিআইয়ে একত্রে খেলেন। তিনি ৫/৩৮ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১১ রানের জয়ে বিশাল অবদান রাখেন। তাঁদের প্রথম টেস্ট ইনিংসেও সমান প্রভাব পড়ে। প্রত্যেকে সমানসংখ্যক রান খরচ করে চার উইকেট তুলে নেন। এ ধারাবাহিকতা পরবর্তী খেলাগুলোতেও পড়তে থাকে। এ পর্যায়ে প্রতিপক্ষীয় ব্যাটিং স্তম্ভ গুড়িয়ে দিতে উভয়েই সচেষ্ট ছিলেন।

১৯৮৯-৯০ মৌসুমে ইমরান খানের অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়া সফরে নিজের অন্যতম সেরা মুহূর্তের সাথে যুক্ত হন ও নিজেকে প্রকৃত অসাধারণ বোলারে পরিণত করেন। ১২ জানুয়ারি, ১৯৯০ তারিখে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে স্মরণীয় ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ৬/৬২ ও ৫/৯৮ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। তাসত্ত্বেও স্বাগতিক দলের জয় আটকাতে পারেননি। স্বাগতিকরা ৯২ রানে জয় পেয়ে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

এরপর, ১৯ জানুয়ারি, ১৯৯০ তারিখে অ্যাডিলেড ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ৫/১০০ ও ব্যাট হাতে নিয়ে ১২৩ রান তুলে পাকিস্তানকে টেস্ট পরাজয় থেকে রক্ষা করেন। এ পর্যায়ে ইমরান খানের (১৩৬) সাথে অনবদ্য জুটি গড়েন। দলের সংগ্রহ ৯০/৫ থাকাকালীন স্বাগতিক দলের চেয়ে মাত্র ছয় রানে এগিয়ে যাওয়া অবস্থায় মার্ভ হিউজ, গ্রিগরি ক্যাম্পবেল, কার্ল রেকেম্যান, পিটার টেলর ও অ্যালান বর্ডারের বল মোকাবেলা করে ষষ্ঠ উইকেটে ১৯১ রান তুলেন। এছাড়াও, প্রথম ইনিংসে ৫২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পাশাপাশি, চতুর্থ ইনিংসে ১/২৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অসামান্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কারণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা এগিয়ে যায়। তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

পরবর্তীতে, ৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ১০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ০/২৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও ১-০ ব্যবধানে স্বাগতিক দল সিরিজ জয় করে নেয়। এ সিরিজে ১৯৭ রান সংগ্রহসহ ১৭ উইকেট দখল করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান।

১৯৯০-৯১ মৌসুমে নিজ দেশে ডেসমন্ড হেইন্সের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। পুরো সিরিজে অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে তৎপরতা দেখান। ৬ ডিসেম্বর, ১৯৯০ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। বিখ্যাত ক্রিকেটার ব্রায়ান লারা’র অভিষেক ঘটা টেস্টে দূর্দান্ত খেলেন। ৪/৬১ ও ৫/২৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে ৩৮ ও ২১* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, কার্ল হুপারের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও ১-১ ব্যবধানে সিরিজটি শেষ হয়। ৭২ রান ও ২১ উইকেট লাভ করে ইয়ান বিশপের সাথে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান।

১০ ডিসেম্বর, ১৯৯০ তারিখে অল্পের জন্যে হ্যাট্রিক লাভ করা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। লাহোর টেস্টে এক ওভারে ১৩৮ উইকেট থেকে এক লাফে ১৪২ উইকেটে উপনীত করেন। তবে, ক্যাচ মাটি স্পর্শ করায় হ্যাট্রিক লাভ করতে পারেননি। পরবর্তীতে অবশ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চারটি হ্যাট্রিক করার গৌরব অর্জন করেছিলেন।

১৯৯১-৯২ মৌসুমে নিজ দেশে অরবিন্দ ডি সিলভা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ২ জানুয়ারি, ১৯৯২ তারিখে ফয়সালাবাদে অনুষ্ঠিত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। ২/৬২ ও ৩/৭১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ১৩ ও ৫৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর চমৎকার অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে স্বাগতিক দল ৩ উইকেটে জয়লাভের পাশাপাশি তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করতে সমর্থ হয়েছিল। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় পাকিস্তান দলের পাশাপাশি নিজেও সেরা ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে সচেষ্ট হয়েছিলেন। অনন্য সাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রেখে দলকে স্বপ্নের ফাইনালে নিয়ে যান ও দলকে শেষ প্রান্তে উপনীত করেন। এক পর্যায়ে দলটি ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে প্রতিযোগিতার শিরোপা জয় করে। ব্যাট ও বল – উভয় বিভাগেই চমৎকার দক্ষতা দেখান। ২৫ মার্চ, ১৯৯২ তারিখে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত খেলায় টি২০ ধাঁচের খেলা উপহার দিয়ে ১৮ বলে ৩৩ রান সংগ্রহের পাশাপাশি বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দেন ও ৩/৪৯ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন। দুইটি অবিস্মরণীয় বলে অ্যালান ল্যাম্ব ও ক্রিস লুইসের উইকেট নিয়ে গ্রাহাম গুচের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলকে পরাভূত করতে সবিশেষ ভূমিকা রাখেন। ঐ প্রতিযোগিতায় প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৮ উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট সংগ্রাহকে পরিণত হয়েছিলেন।

একই বছর ইংল্যান্ড গমনার্থে জাভেদ মিয়াঁদাদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। পুরো সিরিজেই অপূর্ব ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনে তৎপরতা দেখান। ১৮ জুন, ১৯৯২ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। অনিন্দ্যসুন্দর ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। খেলায় তিনি ২/৪৯ ও ৪/৬৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ২৪ ও ৪৫* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর দূর্দান্ত অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যে স্বাগতিকরা ২ উইকেটে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

একই সফরের ৬ আগস্ট, ১৯৯২ তারিখে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত খেলেন। কেনসিংটন ওভালে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে ৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ৬/৬৭ ও ৩/৩৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অসাধারণ বোলিংশৈলীতে সফরকারীরা খেলায় ১০ উইকেটে জয় পেলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। পাশাপাশি, এ সিরিজে ১১৮ রান সংগ্রহসহ ২১ উইকেট দখল করে ওয়াকার ইউনুস ও গ্রাহাম গুচের সাথে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান।

১৯৯২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর ইংরেজ গণমাধ্যমে বলে আঁচড়ের দায়ে তাঁর উপর অভিযোগ আনা হয়। জুলাই, ১৯৯২ সালে সুইংয়ের সাথে রিভার্স যুক্ত করেন। ওয়াকার ইউনুসকে সাথে নিয়ে রিভার্স সুইংয়ে ইংল্যান্ডকে নাকানিচুবানি খাওয়ান। বলে আঁচড়ের অভিযোগ আসতে থাকলেও ভিডিওচিত্রে কোন ত্রুটি ধরা পড়েনি। তেরো বছর পর ইংল্যান্ড দল রিভার্স সুইংয়ে অ্যাশেজ সিরিজ জয় করলে প্রতারণার অভিযোগ থেকে ক্ষমা চায়। ১৯৯৩ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন। এ পর্যায়ে বলে আঁচড় লাগানো অভিযোগ খুব কমই প্রভাব বিস্তার করেছিল। এছাড়াও, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড প্রণীত পাকিস্তান ক্রিকেট হল অব ফেমের উদ্বোধনী তালিকায় ইমরান খান, জাভেদ মিয়াঁদাদ, হানিফ মোহাম্মদ, ওয়াকার ইউনুস ও জহির আব্বাসের সাথে অন্তর্ভুক্ত হন।

১৯৯২-৯৩ মৌসুমে জাভেদ মিয়াঁদাদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের অন্যতম সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ২ জানুয়ারি, ১৯৯৩ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন ও ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ২ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ২৭ ও ১৫ রান তুলে উভয় ইনিংসে দীপক প্যাটেলের শিকারে পরিণত হন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৩/৬৬ ও ৫/৪৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৩৩ রানে পরাজিত হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

জানুয়ারি, ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে জাভেদ মিয়াঁদাদের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবেই তাঁকে মনোনীত করা হয়। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম আন্তর্জাতিকে দ্রুতলয়ে ৩৮ রান সংগ্রহ ও ১০ ওভারে ৩৪ রান খরচ করেছিলেন। ঐ খেলায় তাঁর দল ৪৯ রানে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় তুলে নেয়। এপ্রিল, ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের অধিনায়কের দায়িত্ব লাভের পর প্রথমবারের মতো দলকে নিয়ে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ গমন করেন। কিন্তু, মারিজুয়ানা সেবনের অভিযোগে তাঁকেসহ অপর তিনজন দলীয় সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে অবশ্য তাঁদেরকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছিল।

১৯৯৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে উপর্যুপরী দুইবার চার-উইকেট দখল করেছিলেন। ৮ উইকেটের ৭টিই এলবিডব্লিউ কিংবা বোল্ডের মাধ্যমে পেয়েছিলেন। সবমিলিয়ে সতেরোবার ৪-উইকেটের সন্ধান পেয়েছেন ও ২২বার ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেছিলেন। এছাড়াও, টেস্ট ক্রিকেটে ১৭বার ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার লাভ করে যৌথভাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ স্থানে নিয়ে যান।

১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড সফরের প্রাক্কালে অধিনায়কত্ব থেকে তাঁকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। পরবর্তীতে নিউজিল্যান্ডে সফররত সেলিম মালিকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সাথে যুক্ত হন। খেলোয়াড়ী জীবনের স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। পুরো সিরিজে অপূর্ব ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন ও অসাধারণত্বের পরিচয় দেন। তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২৫ উইকেট দখলসহ ৫৭ রান সংগ্রহ করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন। তন্মধ্যে, ব্যাসিন রিজার্ভে ব্যক্তিগত সেরা ৭/১১৯ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন।

২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ৫ ও ১৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/৫৪ ও ৩/১০৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, শেন থমসন ও ব্রায়ান ইয়ংয়ের অসাধারণ ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৫ উইকেটে পরাজিত হলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।

এছাড়াও, ১৯৯২ সালে ইংল্যান্ড সফরে ২১ উইকেট পান। এরপূর্বে ১৯৯০-৯১ মৌসুমে নিজ দেশে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও সমসংখ্যক উইকেট পেয়েছিলেন। এছাড়াও, ভারতের বিপক্ষে সেরা বোলিং করতে তৎপরতা দেখান। ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমের সিরিজে ১৩, ১৯৮৯-৯০ মৌসুমের সিরিজে ১৮ ও ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমের সিরিজে ১৪ উইকেট পেয়েছিলেন।

১৯৯৪ সালে সেলিম মালিকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের অন্যতম সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা সফরে যান। ৯ আগস্ট, ১৯৯৪ তারিখে কলম্বোর পিএসএসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ৩৭ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, ৩/৩০ ও ৫/৪৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, সাঈদ আনোয়ারের অনিন্দ্যসুন্দর ব্যাটিং সাফল্যে সফরকারীরা ৩০১ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ২৬ আগস্ট, ১৯৯৪ তারিখে ক্যান্ডিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ৪/৩২ ও ১/৭০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে ওয়াকার ইউনুসের সাথে অপরিবর্তিত অবস্থায় বোলিং করেছিলেন। এরফলে, পাকিস্তানের দ্বিতীয় জুটি হিসেবে পুরো ইনিংস বোলিং করার গৌরব অর্জন করেন। এছাড়াও, দলের একমাত্র ইনিংসে ১২ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, ওয়াকার ইউনুসের অসামান্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ৫২ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে। তন্মধ্যে, একটি টেস্ট পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়েছিল।

১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে সেলিম মালিকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ১৯ জানুয়ারি, ১৯৯৫ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সিরিজের একমাত্র টেস্টে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেন। খেলায় তিনি ৪১ ও ১১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/১১৩ ও ২/৫৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ফ্যানি ডি ভিলিয়ার্সের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে স্বাগতিকরা ৩২৪ রানে জয় পায়।

একই মৌসুমে সেলিম মালিকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের অন্যতম সদস্যরূপে জিম্বাবুয়ে গমন করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫ তারিখে বুলাওয়েতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ৩/৪০ ও ৫/৪৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে ১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৮ উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৫ তারিখে পেশাওয়ারে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। একমাত্র ইনিংসে ৩৬ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, ৫/৫৫ ও ২/২৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীতে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৪০ রানে জয় পেয়ে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। কলকাতায় ভারতের বিপক্ষে ৪৬ রানে জয় তুলে নিয়ে শিরোপা লাভ করে। এছাড়াও, ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় পাকিস্তান দলের নেতৃত্বে ছিলেন। কিন্তু, কোয়ার্টার-ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে আঘাতের কারণে খেলা থেকে সড়ে দাঁড়ান। চূড়ান্ত খেলায় অংশ নিয়ে দলকে উজ্জ্বীবিতকরণে এগিয়ে আসেন। তবে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাঁর দল পরাজয়বরণ করেছিল।

১৯৯৬ সালে অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ড সফরে সর্ববৃহৎ সফলতা পান। তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয় পায় পাকিস্তান দল।

শুরু থেকেই ব্যাট হাতে নিয়ে তেমন সুবিধে করতে পারেননি। এছাড়াও, ক্রমাগত ব্যাটিংয়ের মান দূর্বলতর হতে থাকে। তাসত্ত্বেও, বারোটি ছক্কা সহযোগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অপরাজিত ২৫৭ রান তুলেছিলেন। এ ইনিংসটিই টেস্টে তাঁর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছিল ও দলকে রক্ষা করে। ৩৬৩ বল মোকাবেলা করে এ সাফল্য পান। আট নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে এটিই সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছেন। সব মিলিয়ে টেস্টে তিনটি শতরানের ইনিংস খেলেছেন। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে শেখুপুরায় অনুষ্ঠিত সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঐ শতক হাঁকানোকালে নবম উইকেটে সাকলাইন মুশতাকের সাথে ৩১৩ রানের রেকর্ডসংখ্যক জুটি গড়েন। ঐ মৌসুমে নিজ দেশে অ্যালাস্টেয়ার ক্যাম্পবেলের নেতৃত্বাধীন জিম্বাবুয়ে দলের মুখোমুখি হন। ১৭ অক্টোবর, ১৯৯৬ তারিখে শেখুপুরায় অনুষ্ঠিত সফররত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নিয়ে এ সাফল্য পান। এছাড়াও, ১/৫৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

একই সফরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অপূর্ব খেলেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে বল হাতে নিয়ে দলকে পরিচালনা করে। ২৪ অক্টোবর, ১৯৯৬ তারিখ থেকে ফয়সালাবাদে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় সুযোগের সদ্ব্যবহারে তৎপর হন। ঐ টেস্টে তাঁর দল ১০ উইকেটে জয়লাভসহ দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জয় করে। ৬/৪৮ ও ৪/৫৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পেয়ে ৩৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও, ঐ সিরিজে ২৯২ রান সংগ্রহসহ ১১ উইকেট লাভ করে প্লেয়ার অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান।

এরপর, ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে নিজ দেশে কোর্টনি ওয়ালশের নেতৃত্বাধীন সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পরিস্কার ব্যবধানে জয় পায়।

একই মৌসুমে রশীদ লতিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ৬ মার্চ, ১৯৯৮ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ২৯ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৩০* ও ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৩/৭০ ও ০/৩৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। মার্ক বাউচারের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ২৫৯ রানে জয় পেলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়।

১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে পাকিস্তানী দলকে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশ গমন করেন। এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে দূর্দান্ত খেলেন। ১২ মার্চ, ১৯৯৯ তারিখে শ্রীলঙ্কা দলের মুখোমুখি হন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত টেস্টে ২/৪৫ ও ৩/৩৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, দলের একমাত্র ইনিংসে ৮ রান সংগ্রহের পাশাপাশি একটি ক্যাচ ও একটি রান-আউটের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। তবে, ইজাজ আহমেদের অসামান্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে পাকিস্তান দল ইনিংস ও ১৭৫ রানে জয়লাভ করে শিরোপা পায়। এ প্রতিযোগিতায় ৬৮ রান সংগ্রহসহ ১৫ উইকেট দখল করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। দলকে শেষ প্রান্তে নিয়ে যান। তবে, চূড়ান্ত খেলায় প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া মাত্র ২০.১ ওভারে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা সফলভাবে অর্জন করে ও আট উইকেট পাকিস্তান দল পরাজিত হয়েছিল। এ পর্যায়েও অস্ট্রেলিয়ার সাথে পাতানো খেলায় জড়িত হবার অভিযোগ আসে। তবে, কোন অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি।

বেশ কয়েকবার পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। পাকিস্তানের অধিনায়ক ইমরান খানের যোগ্য উত্তরসূরী ছিলেন। কিন্তু, ১৯৯০-এর দশকে পাতানো খেলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ, আঘাতপ্রাপ্তি ও ডায়াবেটিসের সমস্যায় জর্জড়িত হয়ে পড়লে তাঁর উত্তরণে তেমন সহায়ক ভূমিকা পালন করেনি।

২০০০ সালে মঈন খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। পুরো সিরিজে অপূর্ব খেলেন। ১৪ জুন, ২০০০ তারিখে কলম্বোর এসএসসিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ৭৮ ও ২০* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ১/৫৫ ও ৫/৪৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অনবদ্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৫ উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ২৮ জুন, ২০০০ তারিখে ক্যান্ডির অ্যাসগিরিয়া স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ক্রমাগত বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ সময়ই বল মাঠে গড়ায়নি। প্রথম তিনদিনই বৃষ্টিবিঘ্নিত থাকায় সাজঘরে অবস্থান করতে হয় ও শেষ দুই দিন খেলা হয়। একমাত্র ইনিংসে ০/৪১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সফরকারীরা ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। এ সিরিজে ১৯৮ রান সংগ্রহসহ ৯ উইকেট লাভ করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

২০০১-০২ মৌসুমে ওয়াকার ইউনুসের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান দলের অন্যতম সদস্যরূপে বাংলাদেশ সফরে যান। ৯ জানুয়ারি, ২০০২ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। মাত্র ২.৪ ওভার বোলিং করার পর আঘাতের কারণে বোলিং করা থেকে বিরত থাকেন। এরপর, দলের একমাত্র ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামেননি। তবে, আব্দুল রাজ্জাকের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে ঐ খেলায় তাঁর দল ইনিংস ও ১৭৮ রানে জয় পেয়ে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

পরবর্তীতে, দীর্ঘ সংস্করণের খেলায় এটিই তাঁর সর্বশেষ অংশগ্রহণ ছিল। ফলশ্রুতিতে, ২০০৩ সালে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। এরপূর্বে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ৬ খেলায় অংশ নিয়ে ১২ উইকেট দখল করেছিলেন। তবে, দল পরবর্তী রাউন্ডে যেতে পারেনি। ফলশ্রুতিতে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ওয়াসিম আকরামসহ আট জন খেলোয়াড়কে দল থেকে একযোগে বাদ দেয়। এরফলে, তিনি কোন বিদায়ী খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে চুক্তি অনুযায়ী ঐ মৌসুমের শেষ পর্যন্ত খেলেছিলেন।

সব মিলিয়ে ১৯ বছরের অধিক সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদচারণা করেছিলেন। টেস্ট ও ওডিআই থেকে বিশ্বের সর্বত্র সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ধারাবাহিকতা রাখাও ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর ক্রীড়া চ্যানেলে ধারাভাষ্যকার হিসেবে যুক্ত হন। ধারাভাষ্য কক্ষে নিয়মিতভাবে অংশ নেয়ার পাশাপাশি সতীর্থ ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী’র সাথে ‘শাহ এন্ড ওয়াজ’ অনুষ্ঠানে সহঃউপস্থাপকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। প্রথম বোলার হিসেবে ওডিআইয়ে ৫০০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় এ কৃতিত্বের অধিকারী হন। অদ্যাবধি সিমার হিসেবে সর্বাধিক ওডিআই উইকেট লাভের কৃতিত্বের দাবীদার। কেবলমাত্র শারজায় ১২২টি ওডিআই উইকেটের সন্ধান পেয়েছেন। এক মাঠে সংখ্যার দিক দিয়ে ওডিআইয়ে সর্বোচ্চ উইকেট লাভের রেকর্ড গড়েন। প্রথম বোলার হিসেবে ওডিআই ও টেস্টে ৪০০-এর অধিক উইকেট পেয়েছেন। একমাত্র বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চারটি হ্যাট্রিকের সাথে স্বীয় নামকে যুক্ত করেছেন। টেস্ট ও ওডিআইয়ে দুইটি করে হ্যাট্রিক করেছিলেন। এরফলে, বিভিন্ন লীগে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে ও তিনি তাঁর প্রজন্মের সেরা ফাস্ট বোলারের মর্যাদা লাভ করেন।

Similar Posts

  • | |

    লিটন দাস

    ১৩ অক্টোবর, ১৯৯৪ তারিখে দিনাজপুরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। উইকেট-রক্ষণের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিং করেন। বাংলাদেশের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১০-১১ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে পূর্বাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল ও রংপুর বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, ঢাকা…

  • |

    জিওফ গ্রিফিন

    ১২ জুন, ১৯৩৯ তারিখে নাটালের গ্রেটাউন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৬০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ডারবান হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। দীর্ঘকায় গড়নের অধিকারী ছিলেন। বিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থায় আঘাত পেলে কনুঁই সঠিকভাবে বাঁকাতে পারতেন না। এক…

  • |

    আর্থার হিল

    ২৬ জুলাই, ১৮৭১ তারিখে হ্যাম্পশায়ারের বাসেট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। ১৮৯০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। মার্লবোরা কলেজে অধ্যয়ন শেষে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো করেন। পেশাদার ব্যাংকার ছিলেন ও প্রায় সকল ধরনের খেলাধূলায় সিদ্ধ হস্তের পরিচয় দিয়েছেন। দীর্ঘদেহী ও ধ্রুপদীশৈলীর অধিকারী ব্যাটসম্যান ছিলেন।…

  • |

    রড ল্যাথাম

    ১২ জুন, ১৯৬১ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখান। ১৯৯০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮০-৮১ মৌসুম থেকে ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারির পক্ষে খেলেছেন। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৪ সময়কালে সব মিলিয়ে চারটিমাত্র…

  • | | |

    এভারটন উইকস

    ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৫ তারিখে বার্বাডোসের পিকউইক গ্যাপ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, রেফারি ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে দক্ষ ছিলেন। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত সময়কালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। সেন্ট লিওনার্ডস বয়েজ স্কুলে অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে, হোটেল ম্যানেজম্যান্ট বিষয়ে পড়াশুনো করেছেন। তবে,…

  • | | | | |

    কোর্টনি ওয়ালশ

    ৩০  অক্টোবর, ১৯৬২ তারিখে জ্যামাইকার কিংস্টনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, প্রশাসক, কোচ ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। পাশাপাশি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি (১.৯৭ মিটার) দীর্ঘ উচ্চতার অধিকারী। এরিক ওয়ালস ও জন ওলাস্টন দম্পতির সন্তান ছিলেন। বিদ্যালয়ের ছাত্র…