৮ মে, ১৮৭৩ তারিখে সারের টিটসি প্লেস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। এমসিসি, সারে ও স্কারবোরা উৎসব ক্রিকেটে পঞ্চাশ বছরের অধিক সময় জড়িত ছিলেন। একাধারে তিনি ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক, দল নির্বাচক ও আইনপ্রণেতা ছিলেন। ১৯১০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
রেইগেটের লিবারেল এমপি গ্রানভিল উইলিয়াম গ্রেশাম লেভেসন গাওয়ার ও সোফিয়া দম্পতির দ্বাদশ পুত্রের মধ্যেম সপ্তম ছিলেন। ‘শ্রিম্প’ ডাকনামে ভূষিত হন। উইনচেস্টার কলেজে পড়াশুনো করেছেন। উইনচেস্টার একাদশ দলে তিন বছর খেলেন। ১৮৯২ সালে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। এ পর্যায়ে এটন কলেজের বিপক্ষে ৯৯ রান ও খেলায় ৩৩ রান খরচায় ৮ উইকেট নিয়ে দলকে ৩৩ রানের জয় এনে দিয়েছিলেন। এরপর অক্সফোর্ডের ম্যাগডালেন কলেজে চলে যান। লর্ডসে ১৮৯৩ থেকে ১৮৯৬ সময়কালে কেমব্রিজের বিপক্ষে চারবার খেলেন। তন্মধ্যে, শেষ বর্ষে থাকাকালে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে অক্সফোর্ড দলকে স্মরণীয় জয়লাভে ভূমিকা রাখেন। তিনি কোন ডিগ্রী লাভ করেননি।
স্কারবোরা উৎসবের খেলা আয়োজনে স্মরণীয় ভূমিকা পালন করে গেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলেছেন। ১৮৯৩ সাল থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ১৯০১ সালে বাদ-বাকী ইংল্যান্ড একাদশের সদস্যরূপে খেলেন।
১৯১০ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে তিনটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। সবগুলো টেস্টই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেন। ১৯০৯-১০ মৌসুমে এমসিসি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ১ জানুয়ারি, ১৯১০ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ক্লড বাকেনহাম, বার্ট স্ট্রাডউইক, জিএইচটি সিম্পসন-হেওয়ার্ড ও মরিস বার্ডের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে প্রথমবারের মতো টেস্টে পাঁচ-উইকেট লাভ করেন। খেলায় তিনি ১৭ ও ৩১ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে অব্রে ফকনারের শিকারে পরিণত হন। পাশাপাশি, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ১৯ রানে জয়লাভ করলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
একই সফরের ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯১০ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৬ ও ১২* রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ৩ উইকেটে জয় পেলেও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৮৯৮ সালের শুরুরদিকে এমসিসি কমিটির সদস্য হন। এগারো বছর পর ইংল্যান্ডের টেস্ট দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ১৯২৪ ও ১৯২৭ থেকে ১৯৩০ সময়কালে দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, ১৯২৬ থেকে ১৯২৮ সময়কালে সারের কোষাধ্যক্ষ ও ১৯২৯ থেকে ১৯৩৯ সময়কালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। এগারোটি নিজ নামে একাদশের সর্বশেষ খেলার তিন বছর পর ১৯৫৩ সালে ক্রিকেটে অসামান্য ভূমিকা পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ নাইট পদবীতে ভূষিত হন। একই বছর ‘অফ এন্ড অন দ্য ফিল্ড’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশ করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ২৩ এপ্রিল, ১৯০৮ তারিখে রবার্ট শার্প বর্গনিস হ্যামন্ড-চ্যাম্বার্সের কন্যা এনিড মেরি’র সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির কোন সন্তানাদি ছিল না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রয়্যাল আর্মি সার্ভিস কোরে যুক্ত ছিলেন। মেজর পদবী নিয়ে অবমুক্তি পান। ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৪ তারিখে লন্ডনের ৩০, সেন্ট মেরি অ্যাবটস কোর্ট, কেনসিংটন এলাকায় নিজ গৃহে ৮০ বছর ২৬৯ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। মৃত্যু পরবর্তী ২৮ জুন, ১৯৫৪ তারিখে £৭,১৫৮ পাউন্ড-স্টার্লিং মূল্যমানের সম্পদ রেখে যান।
